বনের রাজা আমাজন

* আমাজন নামটি স্প্যানিশ পর্যটক ফ্রান্সেসকো দ্য ওরেলানার (১৫১১-১৫৪৬) দেওয়া। তিনি প্রথম ইউরোপীয় হিসেবে আমাজন নদী ধরে চিরহরিৎ এই বনে গিয়েছিলেন। অভিযানের সময় স্থানীয় ইকামিয়াবাস নামের নারী যোদ্ধাদের দ্বারা আক্রান্ত হন। তারপরই মূলত ‘আমাজন’ নামটি দেন। নামটি তিনি গ্রিক পুরাণ থেকে নিয়েছেন। 

* এই বনে রয়েছে প্রায় ৩০ লাখ প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণী। এ ছাড়া প্রায় ১০ লাখ ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর বাস এখানে। বিশ্বের প্রায় ২০ শতাংশ অক্সিজেন তৈরি করে এই বন।

* জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ আমাজনের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে প্রশস্ত নদী আমাজনসহ অনেক নদ-নদী। আমাজন নদী প্রতি সেকেন্ডে ৫৫ মিলিয়ন গ্যালন পানি আটলান্টিক মহাসাগরে ফেলে।  

* প্রায় ৫৫ লাখ বর্গকিলোমিটার আয়তনের আমাজন বন আকারে ইউরোপ মহাদেশের প্রায় অর্ধেক। আমাজন যদি কোনো দেশ হতো, তাহলে এটি আয়তনে বিশ্বের নবম বৃহত্তর দেশের খেতাব পেত। 

* পশ্চিমা বিশ্বে প্রস্তুতকৃত মোট ওষুধের ২৫ শতাংশ উৎপাদিত হয় চিরহরিৎ বন থেকে সংগৃহীত উপাদান দিয়ে। বিশ্বের বড় চিরহরিৎ বন হিসেবে আমাজন বনের ওপর কতটা নির্ভরশীল, তা সহজেই অনুমান করা হয়। যদিও এই বনের ১ শতাংশের কম গাছগাছড়া বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করতে পেরেছেন।

* আমাজনে ৩ হাজারের বেশি ফল পাওয়া যায়, যার মধ্যে মাত্র ২০০ রকম ফল পশ্চিমা বিশ্বে খাওয়া হয়।

* ধান, গম, আনারস, টমেটো, আলু, কলা, গোলমরিচ, কফিবীজ, কোকোয়াবীজসহ বিশ্বের ৮০ শতাংশ খাদ্যশস্যের আদি উৎস এই বন। 

* আমাজন বনের ১ হেক্টর জায়গায় ৭৫০ রকমের বেশি গাছ ও ১ হাজার ৫০০ ধরনের উদ্ভিদ রয়েছে।

* কুগার, জাগুয়ার, অ্যানাকোন্ডার মতো বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর প্রাণীগুলোর আবাস এই বনে।

* বিশ্বে যত প্রজাতির পাখি ও মাছ পাওয়া যায়, তার পাঁচটির একটি রয়েছে আমাজনে। 

* বিশ্বের প্রথম সাঁতারু হিসেবে স্লোভেনিয়ার মার্টিন স্ট্রেল নামের এক আমাজন নদী পাড়ি দেন। ২০০৭ সালে ৬৬ দিনে তিনি এই বিশ্ব রেকর্ড গড়েন।  

* ধারণা করা হয়, আমাজানে এখনো এমন ৫০টির বেশি স্থানীয় উপজাতির বাস আছে, যাদের সঙ্গে আধুনিক পৃথিবীর কোনো যোগাযোগই নেই।

গ্রন্থনা: সজীব মিয়া

সূত্র: রেইনফরেস্ট ক্রজেস ডটকম