উল্টো দিবস

যোগীন্দ্রনাথ সরকারের ‘মজার দেশ’ কবিতাটি অনেকের হয়তো পড়া আছে। চোখ বন্ধ করে মুহূর্তের জন্য একটু শৈশবের স্মৃতিতে হাত বুলিয়ে দেখুন তো, মনে পড়ছে? সেই যে অদ্ভুত মজার এক দেশ, যে দেশে সবকিছু ঘটে উল্টোভাবে, ‘এক যে ছিল মজার দেশ, সব রকমে ভালো/ রাত্তিরেতে বেজায় রোদ, দিনে চাঁদের আলো’।

কবিতার মতো ছোটবেলায় এমন উল্টো অনেক কিছুই কিন্তু মানুষ করেন। যেমন শব্দের বর্ণকে উল্টো করে বলা, বন্ধুদের নামের বানান উল্টো করে বানিয়ে ডাকা, উল্টো বাক্যে চিঠি লেখা, সামনের দিকে তাকিয়ে পেছন দিকে হাঁটা...আরও কত্ত কী!

এই সব উল্টো কাজকর্মের দিবসই কিন্তু আজ। অর্থাৎ ২৫ জানুয়ারি ‘উল্টো দিবস’। ঠিক কবে থেকে এই অদ্ভুত দিবসের যাত্রা শুরু, তা নির্দিষ্ট করে জানা যায় না। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ৩০তম প্রেসিডেন্ট ক্যালভিন কুলিজের সময় এই ধারণার উদ্ভব বলে মনে করা হয়।

বিশেষত শিশুদের মধ্যে জনপ্রিয় হলেও এই আনন্দের দিন কিন্তু বড়রাও বেশ উদ্‌যাপন করে থাকেন আগ্রহভরেই। দিনটি উদ্‌যাপনের জন্য দরকার সূক্ষ্ম রসবোধ, মানসিক চাতুর্য এবং উপস্থিত বুদ্ধি। কথা বলতে গিয়ে এমন সব শব্দ বাছাই করার ক্ষমতা থাকা জরুরি, যেসব শব্দ আমরা সাধারণত দৈনন্দিন কথাবার্তায় ব্যবহার করি না।

দিনটি উদ্‌যাপন করবেন কীভাবে? ২৫ জানুয়ারি সকালেই মস্তিষ্ককে এই মর্মে প্রস্তুত করে ফেলুন যে আজকে সারা দিন উল্টো ভাবনায়, উল্টো কাজে, উল্টো কথাবার্তায় কাটবে। ধরুন, আপনি কোনো জিনিস খুবই পছন্দ করেন, কিন্তু এমনভাবে প্রকাশ করুন যে আপনি একদমই তা পছন্দ করেন না। যেমন সুস্বাদু কোনো খাবারের কথা বলতে গিয়ে এমন মুখভঙ্গি এবং শব্দ ব্যবহার করছেন, যা দেখে মনে হয়, খাবারটি খুবই বিস্বাদ। অর্থাৎ, আপনি যা বলছেন, তা বোঝাচ্ছেন না কিংবা যা বোঝাচ্ছেন, তা বলছেন না বরং বিপরীতটাই বলছেন-বোঝাচ্ছেন। তবে হ্যাঁ, একটা ব্যাপার কিন্তু অবশ্যই মাথায় রাখবেন, যাঁদের সঙ্গে এমন উল্টো মজার দিনটি কাটাবেন, তাঁরা যেন দিবসটির ব্যাপারে ওয়াকিবহাল থাকেন। নইলে কিন্তু পুরো মজাটাই লেজেগোবরে হয়ে অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটে যেতে পারে।

ডেজ অব দ্য ইয়ার ও ন্যাশনাল ডে ক্যালেন্ডার অবলম্বনে কবীর হোসাইন