লেইস দিবস

‘লেইস ফিতা লেইস/ চুড়ি ফিতা রঙিন সুতা রঙিন করিবে মন’—নগরবাউল জেমসের এই গানটি শোনেননি, এমন মানুষ কিন্তু খুঁজে পাওয়া ভার। দৈনন্দিন জীবনযাপনকে রঙিন করে তুলতে লেইস কীভাবে মানুষের যাপিত জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে, তারই সাতকাহন যেন গানটি। বিশেষত পরিধেয় বস্ত্রে যুক্ত হয়ে নারীর পোশাকে বাড়তি মাত্রা যোগ করে এই লেইস। পোশাকের সঙ্গে এই তন্তুশিল্পের মার্জিত উপস্থাপন বিশ্বজুড়ে পোশাকশিল্পে যুক্ত করেছে এক অনন্য আকর্ষণ।

১ ফেব্রুয়ারি তথা আজকের দিনটিই কিন্তু লেইস দিবস। ঠিক কবে কীভাবে শুরু হয়েছিল লেইসের, একেবারে দিনক্ষণ হিসাব করে বলা যায় না। ইতালীয়দের দাবি, ১৯৪৩ সালে মিলানের প্রভাবশালী স্ফোরজা পরিবারের হাত ধরে যাত্রা শুরু লেইসের। অন্যদিকে ফ্লেমিশদের দাবি, লেইসের আবির্ভাবের সঙ্গে জড়িয়ে আছে তাদের ঐতিহ্য। তারা মনে করে, ১৪৮৫ সালে একজন ধর্মযাজক প্রার্থনা পোশাকের সঙ্গে জুড়ে নিয়েছিলেন তন্তুময় যে অতিরিক্ত অংশ, সেখান থেকেই আসে লেইসের ধারণা।

ধীরে ধীরে এর ব্যবহার বাড়তে থাকে। ১৬ শতকে এসে বিশ্বব্যাপী সমাদৃত হতে থাকে। ১৮ শতকে এসে তো রীতিমতো আভিজাত্যের প্রতীক হয়ে ওঠে এই লেইস। আধুনিকতার নিত্যনতুন আভিজাত্যের জোয়ারেও
লেইসের গুরুত্ব তো কমেইনি বরং বৃদ্ধি পেয়েছে বহুগুণ।

আধুনিক সময়ে লেইসের ব্যবহারে এসেছে বহুমুখী বৈচিত্র্য। নানা রং আর ঝুলের বাহারি ব্যবহার সৌন্দর্যপ্রিয় মানুষের কাছে লেইসকে করে তুলেছে অপরিহার্য। শুধু পরিধেয় পোশাকেই নয়, লেইস আজকাল ব্যবহৃত হচ্ছে দরজা-জানালার পর্দায়, বিছানার চাদরে, বালিশে, টেবিলক্লথে কিংবা সোফা কুশনের আবরণে। এমনকি পুরোনো হয়ে যাওয়া লেইস ফেলে না দিয়ে পুনর্ব্যবহারের ধারণাও আজকাল বেশ সমাদৃত। পুরোনো লেইস ফটো ফ্রেম কিংবা কলমদানির চারপাশ ঘিরে সযত্নে জুড়ে দিয়ে সৌন্দর্য বাড়িয়ে নেওয়া যায় অনায়াসে।

ডেইজ অব দ্য ইয়ার অবলম্বনে কবীর হোসাইন