শুধু কি মুখের কথাই ভাষা?

মানুষের যোগাযোগের অন্যতম একটি মাধ্যম হলো ভাষা। ভাষার মাধ্যমেই মানুষ তার মনের ভাব প্রকাশ করে, অন্য সত্তার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে, মানসিক বিকাশেও ভাষার একটি গুরুত্ব রয়েছে। কিন্তু আমরা শুধু মুখের কথাকেই ভাষা মনে করি। বাংলাদেশের জনসংখ্যার প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ প্রতিবন্ধী। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সালের বিবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, ‘সরকারি জরিপমতে বাক ও শ্রবণপ্রতিবন্ধী রয়েছে প্রায় ১ লাখ ৬৪ হাজার জন। যদিও বেসরকারি সংস্থা ‘এসডিএসএল’ দাবি করছে, এ সংখ্যা প্রায় ৩০ লাখ। তবে সাধারণ মানুষের সচেতনতার অভাবে এই মানুষগুলো ইশারা ভাষা সব ক্ষেত্রে সব সময় ব্যবহার করতে পারছে না। শব্দছাড়া ইশারাও একটি ভাষা। ইশারা ভাষার বিকাশ ও ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মূল প্রতিপাদ্যকে সম্মান করতে পারি। মাতৃভাষার জন্য রক্ত দেওয়া জাতি আমরা কয়েক লাখ মানুষের ব্যবহার করা ইশারা ভাষা শেখার মাধ্যমে তাদের মনের ভাবকেও বোঝার চেষ্টা করতে পারি।

ইশারা ভাষার প্রচার ও উন্নতি সাধনের জন্য সরকার প্রতিবছর এখন ৭ ফেব্রুয়ারিকে বাংলা ইশারা ভাষা দিবস হিসেবে পালন করছে। এ বছর এর প্রতিপাদ্য ছিল ‘ইশারা ভাষার প্রমিত ব্যবহার বাক-শ্রবণপ্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার’ বাক-শ্রবণপ্রতিবন্ধীদের ইশারা ভাষার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করলেও সাধারণ মানুষকে সচেতন অথবা ইশারা ভাষা শেখানোর তেমন কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।

বাক-শ্রবণপ্রতিবন্ধীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ যাতে ইশারা ভাষা সহজেই শিখে বাক ও শ্রবণহীন মানুষের সঙ্গে কথা বলতে পারে, তার জন্য গ্রামীণফোন তাদের ইউটিউব চ্যানেলে ইশারা ভাষা শেখার কিছু সহজ টিউটরিয়াল ভিডিও আপলোড করেছে। এ ছাড়া গ্রামীণফোন ওয়েবসাইটে অথবা মাই জিপি অ্যাপে সাইনলাইন বাটনে ক্লিক করে সরাসরি ভিডিও কলের সাহায্যে বাক ও শ্রবণপ্রতিবন্ধীরা গ্রামীণফোনের কাস্টমার কেয়ার ম্যানেজারের সঙ্গে সাইন ল্যাঙ্গুয়েজের মাধ্যমে কথা বলে সাহায্য নিতে পারে।

ইন্টারনেটের মাধ্যমে যে কেউ খুব সহজেই ইশারা ভাষা শিখে বাক ও শ্রবণপ্রতিবন্ধী মানুষগুলোর পাশে দাঁড়াতে পারে।