চার বছরে এই প্রথম বিবাহবার্ষিকী

নায়না খান
নায়না খান
২৯ ফেব্রুয়ারি যাঁদের জন্মদিন বা বিবাহবার্ষিকী, তাঁদের উদ্‌যাপনটা কেমন? ছুটির দিনের ফেসবুক পেজে পাঠকের কাছে সেই অভিজ্ঞতার কথাই জানতে চাওয়া হয়েছিল। দেশ–বিদেশ থেকে অনেকেই সে আহ্বানে সাড়া দিয়ে লেখা পাঠিয়েছেন। সেসব লেখায় যেমন উদ্‌যাপনের নানা গল্প উঠে এসেছে, তেমনি এসেছে বিষাদগাথাও।

২০১৬ সালে আমাদের বিয়ে হয়েছিল। সেই দিনটি ছিল ২৯ ফেব্রুয়ারি। বিয়ের পরের মাসের ২৯ তারিখে প্রথম মাস উপলক্ষে কেক কাটলাম। এভাবে পরের ১১ মাস পর্যন্ত একসঙ্গে থাকার দিনগুলো পালন করলাম, কেক কাটলাম, উপহারও নিলাম, দিলাম। কিন্তু বছর ঘুরলেও কেকের ওপর ‘শুভ প্রথম বিবাহবার্ষিকী’ কথাটা লিখতে পারলাম না। লিখতে হলো ৩৬৫ দিন, পরের বছর ৭৩০ দিন, পরের বছর ১০৯৫ দিন! যদিও বিষয়টি নিয়ে মাথাব্যথা অন্যদের বেশি। বন্ধুরা বলে, প্রতিবছর বিবাহবার্ষিকী করতে না পারলে নাকি স্বামীকে খরচ থেকে বাঁচিয়ে দেওয়া। কিন্তু আমি তো প্রতিবছরই সময়মতো উপহার নিয়ে নিয়েছি। সে–ও আবার দুদিন—যেহেতু ২৯ তারিখ নেই, তাই ২৮ তারিখেও বিবাহবার্ষিকী উদ্‌যাপন করতাম, ১ মার্চেও তা-ই!

দুবার উপহার পেলেও অপূর্ণতা কিন্তু থেকেই যায়। বন্ধু, আত্মীয়স্বজন নিজেদের বিবাহবার্ষিকী কত আনন্দে কাটায়, এই দেখে খুব মন খারাপ হতো। অন্যদের বিবাহবার্ষিকীর দাওয়াতে তাই যেতে ইচ্ছে করত না। আরও কষ্ট পেতাম বন্ধুদের কানাকানিতে। কেউ কেউ বলত, আমরা নাকি ঢং করছি। জেনেশুনে কেন ২৯ ফেব্রুয়ারি বিয়ে করেছিলাম, সে প্রশ্নও অনেকে তুলেছে। এসব শুনে একটু কষ্ট পেয়েছি। কষ্ট নিয়ে অপেক্ষা করেছি ২০২০ সালের। ভাবতাম, তখন অন্তত বলতে পারব—শুভ বিবাহবার্ষিকী!

অবশেষে চলে এল কাঙ্ক্ষিত সেই বছর, সেই দিনটিও। সাত মাস আগে রাজকন্যা এসেছে ঘরে। আমরা এখন তিনজন। তাই বাড়তি ভাবনা। পরিকল্পনা আগেই শুরু হয়েছে। প্রতিদিন নতুন কিছু ভাবি, যোগ করি। তবে ‘বার্ষিকী’ শব্দের সঙ্গে যেহেতু বৎসরান্তের ব্যাপার জড়িত, আমরা দিনটি উদ্‌যাপন করব কী নামে? একে একে যেহেতু চার বছর চলে গেছে, তাই ‘বিবাহ চতুর্বার্ষিকী’ বলব কি না!