বনকথা

>আজ ২১ মার্চ বিশ্ব বন দিবস। পৃথিবীর মোট স্থলভূমির প্রায় ৩১ শতাংশজুড়ে আছে বনাঞ্চল। ক্রমাগত অক্সিজেন উৎপাদন করে এই বনাঞ্চলগুলো টিকিয়ে রেখেছে পৃথিবীর প্রাণের অস্তিত্ব। এমন পাঁচটি বৈচিত্র্যপূর্ণ বনাঞ্চল নিয়েই আজকের আয়োজন। 

বুড়ো বন!
বনের নাম তামান নেগারা। মালয়েশিয়ার এই বনের বয়স ১ হাজার ৩০০ লাখ বছরের বেশি। বয়সের হিসাবে বনটিকে ধরা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে পুরোনো রেইনফরেস্ট হিসেবে। এই বনের ঠিক মাঝখান দিয়ে চলে গেছে একটা সরু মেঠো পথ, যে পথ ধরে হেঁটে গেলে পুরো বন ঘুরে আসা যায়। এ ছাড়া বনের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদী থেকেও উপভোগ করা যায় সবুজ বনের মনোরম দৃশ্য। 

দৈত্যদের বন
যুক্তরাষ্ট্রের সেকুইয়া জাতীয় বনকে বলা হয় ‘দৈত্যদের বন’। বনের প্রাচীন ও দৈত্যাকার গাছগুলোর জন্যই এমন নামকরণ করা হয়েছে। এই দৈত্যাকার গাছগুলোর মধ্যে আছে ২৭৫ ফুট উঁচু এবং ১০৩ ফুট চওড়া জেনারেল শেরম্যানগাছ। জানা যায়, গাছটির বয়স ২ হাজার ২০০ বছর। বনটির উল্লেখযোগ্য গাছগুলোর মধ্যে আছে প্রায় ২ হাজার বছরের পুরোনো বোলগাছ, যার উচ্চতা ২৬৯ ফুট এবং চওড়ায় প্রায় ৩৫ ফুট। 

প্যাঁচানো গাছের বন
পৃথিবীর রহস্যময় বনের তালিকায় অন্যতম ক্রজিউয়ি লাস বা প্যাঁচানো গাছের বন। যার অবস্থান পোল্যান্ডে। বনটিতে আছে চার শতাধিক পাইনগাছ। গাছগুলো ঠিক পেটের মাঝবরাবর প্রায় ৯০ ডিগ্রি কোণে বেঁকে গেছে। কেন এমন অদ্ভুতভাবে গাছ বেঁকে গেছে, তার কোনো সর্বজনগ্রাহ্য ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না। কেউ কেউ বলেন, বনটিতে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি পৃথিবীর অন্য স্থানগুলো থেকে ভিন্ন, যার প্রভাবে গাছগুলো বেঁকে গেছে। কেউ বলেন, অতিরিক্ত তুষারের ভারে গাছগুলোর ওই অংশ ন্যুব্জ হয়ে গেছে। অনেকে আবার বলেন, গাছগুলো বেড়ে ওঠার সময় কেউ ইচ্ছা করেই হাত দিয়ে বাঁকিয়ে দিয়েছিল গাছগুলোকে। 

রংধনু বন
যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইয়ে আছে এমন এক বন, যার গাছগুলো দেখলে মনে হবে যেন কেউ রংধনুর রঙে রাঙিয়ে গেছে গাছের বাকলগুলোকে। বনটির নাম রেইনবো ইউক্যালিপটাস ফরেস্ট। বনটির ইউক্যালিপটাসগাছগুলোর বাকলের বাইরের অংশ ক্ষয়ে যাওয়ার পর সেখানে বাহারি রঙের আভা সৃষ্টি হয়, যেগুলো দেখলে মনে হয়, গাছগুলো থেকে রঙিন উজ্জ্বল রশ্মি বের হচ্ছে। 

মেঘে ঢাকা বন
২৬ হাজার একরের মন্টেভার্দে ক্লাউড ফরেস্ট কয়েক হাজার গাছ, প্রাণী এবং প্রায় ৫০০ প্রজাতির পাখির আবাসস্থল। এই গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বনাঞ্চল সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অনেক উঁচুতে মেঘের কাছাকাছি হওয়ায় প্রায় সারা দিনই কুয়াশাচ্ছন্ন থাকে। মাথার ওপরে মেঘ এবং বনজুড়ে থাকা কুয়াশার কারণে এই বনে এমন অনেক উদ্ভিদ জন্মে এবং এমন অনেক প্রাণী দেখা যায়, যা সাধারণ বনগুলোতে খুঁজে পাওয়া অসম্ভব। এই বনের উল্লেখযোগ্য প্রাণীর মধ্যে আছে বিলুপ্তপ্রায় সোনালি ব্যাঙ এবং লাল চোখের ব্যাঙ, সঙ্গে আছে পুমা, বানর ইত্যাদি। 

ইনসাইডার অবলম্বনে আকিব মো. সাতিল