লাঠিতে খাবার কিংবা খাবারে লাঠি

ছোটবেলায় আঙুলের ভেতর চিপস ঢুকিয়ে খেয়েছেন নিশ্চয়ই! পাইপের মতো গোলাকার চিপস দুই হাতের সব কটা আঙুলে ঢুকিয়ে নেওয়া হতো। একেকটা আঙুল যেন একেকটা লাঠি। চিপস জড়ানো আঙুলগুলো নাড়াচাড়া করলে দৃষ্টিনন্দন ফুলের মতো দেখাত। এরপর একটা একটা করে কুড়মুড়িয়ে কামড়ে কামড়ে খাওয়া হতো। লাঠিতে খাবার ঢুকিয়ে খাওয়ার এটিই কি প্রাথমিক নিরীক্ষা? ৯০–এর দশকে বেড়ে ওঠা প্রজন্মের কাছে তো অবশ্যই। অবশ্য আরও অনেক খাবারের ক্ষেত্রেই এ রকমটা দেখা যায়। সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নতুন নতুন খাবার যেমন যুক্ত হয়েছে মানুষের খাদ্যতালিকায়, তেমনি খাবার গ্রহণের পদ্ধতিতেও এসেছে নানামুখী পরিবর্তন। এই নিরন্তর পরিবর্তনে লাঠি খাবার বেশ একটা জনপ্রিয় অবস্থান ধরে রেখেছে। একটু খেয়াল করলেই দেখবেন, কোনো কোনো অঞ্চলে বিভিন্ন পিঠা বানানো হয় লাঠিতে ঢুকিয়ে। লাঠির খাবারের ক্ষেত্রে তো শাশলিক চিকেন রীতিমতো শহুরে মানুষের প্রিয় খাবারের তালিকায়। আবার লাঠি-লজেন্স কিংবা আইসক্রিম! এ কিন্তু শহর বা গ্রাম নয়, সর্বত্রই জনপ্রিয়। সেই যে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বিখ্যাত পঙ্‌ক্তি, ‘লাঠি-লজেন্স দেখিয়ে দেখিয়ে চুষেছে লস্কর বাড়ির ছেলেরা’! যে খাবারগুলোর নাম উল্লেখ করা হলো, শুধু এগুলোই নয়। এর বাইরেও ভাবুন, লাঠিতে ঢুকিয়ে কী কী খাবার খাওয়া যেতে পারে। ব্যাপারটি কিন্তু বেশ মজার এবং এভাবে খাবার খেতেও বেশ সহজ। এমনকি সৃজনশীলতারও বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। এমন সব খাবার আপনি লাঠিতে ঢুকিয়ে খাওয়ার প্রক্রিয়া উদ্ভাবন করতে পারেন, যা হয়তো আগে কেউ ভাবেইনি।

২৮ মার্চ, অর্থাৎ আজকের দিনটি এই ধারণাটিরই আনুষ্ঠানিক উদ্‌যাপন দিবস। ইংরেজিতে যে দিবসটির পোশাকি নাম ‘সামথিং অন আ স্টিক ডে’। ঠিক কবে, কীভাবে এই দিবসের উদ্‌যাপন শুরু হয়েছিল, গবেষকেরা তা নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি। কিন্তু তাতে কী এসে যায়। দিনটিকে ইতিবাচকভাবে ব্যবহার করতেই পারেন।

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে ভয়াবহ করোনাভাইরাস। এটি মোকাবিলার অংশ হিসেবে ব্যবহার্য জিনিসপত্র যথাসম্ভব স্পর্শ না করা এবং ঘরবন্দী জীবনযাপনে জোর নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। ফলে ঘরে বসে পর্যাপ্ত অবসরকে সৃজনশীল কাজে ব্যবহার করতে পারেন। সকালের নাশতা, দুপুর কিংবা রাতের খাবারের কোন খাদ্যদ্রব্যটি হাতের স্পর্শ বাঁচিয়ে লাঠিতে ঢুকিয়ে খাওয়া যায়—ব্যাপারটি নিয়ে ভাবা যেতে পারে। বানিয়ে ফেলা যেতে পারে নতুন কোনো খাবারের পদ। তাতে যেমন আনন্দময় কিছু সময় কাটবে, হাতের স্পর্শ বাঁচিয়ে খাবারও খাওয়া হবে। বাসায় যদি শিশু থাকে, তবে তো এ কাজে তাদের আনন্দ হবে বহুগুণ। নতুন বানানো এই খাবারের নতুন নামও কিন্তু দিতে পারেন। তাহলে পরিবারের সবার সঙ্গে কাটুক খাবারে লাঠি কিংবা লাঠিতে খাবারের একটি আনন্দময় দিন।   

ডেজ অব দ্য ইয়ার ও ন্যাশনাল ক্যালেন্ডার ডটকম অবলম্বনে কবীর হোসাইন