অভিনব এক গ্রন্থাগার

>
ইমপ্যাক্ট জার্নালিজম ডে
ইমপ্যাক্ট জার্নালিজম ডে
যে উদ্যোগ বদলে দিতে পারে পৃথিবী
আজ ইমপ্যাক্ট জার্নালিজম ডে। বিশ্বের সামনের সারির ৫৫টি সংবাদপত্র একযোগে পরিবর্তনের কারিগরদের কথা বলছে এই দিনে। এবারও এই উদ্যোগের সঙ্গে আছে প্রথম আলো। পৃথিবী বদলে দিতে পারে এমন অনন্য কিছু উদ্যোগের গল্প নিয়ে আমাদের এই আয়োজন। সারা বিশ্ব থেকে বেছে নেওয়া নানামুখী উদ্যোগের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশের দুটি উদ্যোগও। আপনি এবং বিশ্বের ১২ কোটি পাঠক একযোগে জানতে পারছেন এই সব অনন্য উদ্যোগের গল্প।

একটা সত্যিকারের ভালো গ্রন্থাগার কেমন হতে পারে—এই ভাবনা তুলে ধরতে গিয়ে সমসাময়িক লেখক লেমনি স্নিকেট লিখেছিলেন: ‘একটা ভালো গ্রন্থাগার খুব সাফসুতরো, পরিপাটি হবে না, আবার ধুলোমলিনও হবে। কেননা কেউ না কেউ হরদম সেটা ব্যবহার করছে, তাক থেকে বই পাড়ছে, তারপর অনেক রাত পর্যন্ত বসে বসে সেগুলো পড়ছে।’

‘একজনের কাছে যে বই অপ্রয়োজনীয়, আরেকজনের কাছে সেটি খুবই দরকারি’ বলছিলেন গ্রন্থাগারের কিউরেটর জয়নাব জাহান
‘একজনের কাছে যে বই অপ্রয়োজনীয়, আরেকজনের কাছে সেটি খুবই দরকারি’ বলছিলেন গ্রন্থাগারের কিউরেটর জয়নাব জাহান

আজারবাইজানের রাজধানী বাকুর ইচেরিশেহের এলাকাটাকে বলা হয় পুরোনো শহর। সেখানে ঐতিহাসিক আর দৃষ্টিনন্দন বিভিন্ন নিদর্শন দেখতে দেখতে অনেকেরই নজর কাড়ে বইপত্রে ঠাসা একটি ক্ষুদ্র ও সুন্দর আলমারি। একটু থেমে জ্ঞানের রাজ্যে ডুব দেওয়ার এর চেয়ে ভালো জায়গা আর হয় না। এই আলমারিতে মিলবে যে কারও আগ্রহের বই।
এই বইয়ের আলমারি নিঃসন্দেহে শহরের এক সুপরিচিত দিকচিহ্ন হয়ে উঠেছে। বিদেশি পর্যটকদের কাছেও এটা আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু, বিশেষ করে যাঁরা জ্ঞানপিপাসু।
২০১৩ সালে এটা স্থাপিত হওয়ার পর থেকে আজারবাইজানের এমন কোনো বই নেই এই আলমারিতে, যেটার ঠাঁই মেলেনি। বিদেশি বইপত্রও প্রচুর মিলবে এখানে।
এই চমৎকার প্রকল্প চালু করার পেছনে আয়োজকদের চিন্তাটা খুব সরল: বইপ্রেমী যে কেউ এই আলমারি থেকে এক বা একাধিক যত খুশি বই তুলে নেবেন। তবে বিনিময়ে তিনি নিজে দান করবেন আরেকটা বই।
এই চিন্তার সূত্রপাত ইউরোপে। আজারবাইজান ইয়াং ফাউন্ডেশন, আজারবাইজান স্টুডেন্ট ও গ্লোবাল শেপার্স কমিউনিটি বাকু যৌথভাবে এ উদ্যোগ চালু করে। এর মধ্য দিয়ে বইপ্রেমীরা আসলে নিজেদের পড়া বইগুলো একে অপরের সঙ্গে বিনিময় করার সুযোগ পান।
সবার জন্য উন্মুক্ত এই গ্রন্থাগার—বয়স বা শিক্ষার ভেদাভেদ নেই। খুব বেশি বেগ পোহাতে হয় না। গ্রন্থাগার সারা দিনই খোলা। শীত-গ্রীষ্ম, ঝড়-বৃষ্টিতেও বন্ধ নেই। বই তুলতে নাম নিবন্ধন করতে হয় না। কাগজপত্রেরও বালাই নেই। বই কীভাবে ব্যবহার করবেন, তা নিয়েও কোনো বায়নাক্কা নেই। আপনি কীভাবে বই নেবেন, কীভাবে গ্রন্থাগারকে ব্যবহার করবেন, সেটা আপনার সুবিবেচনা আর সুরুচির বিষয়।