অনুসন্ধান কমিটির দেওয়া নাম প্রকাশ না হলে মানুষের সন্দেহ থাকবে: জি এম কাদের

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের আজ জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টি আয়োজিত মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন
ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় নেতা গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের বলেছেন, রাষ্ট্রপতির কাছে সার্চ কমিটির (অনুসন্ধান) দেওয়া নামগুলো প্রকাশ না হলে মানুষের মাঝে একটা সংশয় ও সন্দেহ থেকে যাবে। কারণ, সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির কাজে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ আছে প্রধানমন্ত্রীর। সার্চ কমিটির দেওয়া নামগুলো প্রকাশ হলে এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ থাকবে না।

জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টি আয়োজিত মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন জি এম কাদের। আজ সোমবার সন্ধ্যায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠান হয়।  

জি এম কাদের বলেন, রাষ্ট্রপতির কাছে দেওয়া নাম প্রকাশ না হলে প্রস্তাবিত নাম থাকবে নাকি বাইরে থেকে নাম অন্তর্ভুক্ত হবে, তা নিয়ে সন্দেহ থেকে যাবে। রাষ্ট্রপতি মাত্র দুটি কাজ ছাড়া বাকি সব কাজই প্রধানমন্ত্রী বা সরকারপ্রধানের পরামর্শ অনুযায়ী করেন। তাই সার্চ কমিটির দেওয়া নামগুলো প্রকাশ করা উচিত।

জাতীয় পার্টির চেয়ার‌ম্যান বলেন, ভালো মানুষ দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করলেই হবে না, নির্বাচন কমিশনকে কাজ করার কর্তৃত্ব দিতে হবে। সংবিধানে নির্বাচন কমিশনকে কর্তৃত্ব দেওয়ার কথা আছে কিন্তু বাস্তবে কার্যকর হচ্ছে না। বর্তমান বাস্তবতায় নির্বাচন কমিশনকে সরকারের ওপর নির্ভর করতে হয়। আবার দলীয় সরকার প্রশাসনকে ইচ্ছেমতো ব্যবহার করতে পারে। এতে নির্বাচন কমিশন অনেক সময় অসহায় ভূমিকা পালন করে। এটাই নির্বাচন সুষ্ঠু না হওয়ার প্রধান কারন।

জি এম কাদের বলেন, ‘প্রয়োজনীয় ক্ষমতা দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠনে প্রস্তাব দিয়েছিলাম আমরা। কিন্তু নতুন আইনে নির্বাচন কমিশনকে প্রয়োজনীয় ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। আমরা আবারও বলছি, নির্বাচন কমিশন আইন হচ্ছে নতুন মোড়কে পুরোনো জিনিস।’

জি এম কাদের আরও বলেন, ‘আমরা অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই। তাই নির্বাচন কমিশন এমন লোক দিয়ে গঠন করা উচিত, যারা সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে। গণতন্ত্রচর্চার জন্য সুষ্ঠু নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে গণতন্ত্রচর্চা শুরুই করা যায় না। নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্রের প্রবেশ দ্বার।’

এ সময় জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, এইচ এম এরশাদ সর্বস্তরে বাংলাভাষা প্রচলন করতে আইন করেছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সর্বস্তরে বাংলা প্রচলনে আন্তরিক নয়।

বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘অমর একুশের ধারাবাহিকতায় আমরা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলাম। একুশের চেতনায় দেশ স্বাধীন হয়েছে। একুশ আমাদের সাহসী হতে শিক্ষা দেয়, একুশ মানে মাথা নত করা নয়।’

জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির আহ্বায়ক ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা শেরীফা কাদের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বে করেন। আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনা করনে জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির সদস্য সচিব আলাউদ্দিন আহমেদ।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. সাহিদুর রহমান, সুনীল শুভ রায়, এস এম ফয়সল চিশতী প্রমুখ।