মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
ফাইল ছবি

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে সরকার ক্ষমতায় এসেছে অভিযোগ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সংসদে বিরোধী দল নেই। আমলারা এখন একেবারে আকাশে উঠে গেছে। রাজনৈতিক নেতা, আওয়ামী লীগের নেতা, তাঁদের কোনো মূল্য নেই। রাজনীতি পুরোপুরিভাবে সরিয়ে দিয়ে একটি আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।
আজ শুক্রবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বিএনপি আয়োজিত ‘ভোটাধিকার হরণের কালো দিবস’ উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ২০১৮ সালে ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনব্যবস্থাকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। এর আগে ভোট ডাকাতি হয়েছে, তখন ছিনিয়ে নিত। কিন্তু এভাবে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে আগের রাতে ভোট চুরি করা ২০১৮ সালে প্রথম।
২০১৮ সালে নির্বাচনের দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রীর প্রয়াত রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামকে দেওয়া হয় উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তিনি একজন আমলা। তিনি সব আমলাকে একসঙ্গে নিয়ে নির্বাচন পরিচালনা করেন। মাঠের ভূমিকা পালন করে পুলিশ। পুরো রাষ্ট্রব্যবস্থা নিয়েই এই নির্বাচন করেছে। বাংলাদেশকে রাজনৈতিকভাবে এই অবস্থায় হঠাৎ নিয়ে আসা হয়নি। বহু আগে থেকেই বিরাজনীতিকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, জীবিত একমাত্র নেত্রী খালেদা জিয়া গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠার করার জন্য সংগ্রাম করেছেন। উড়ে এসে জুড়ে বসে প্রধানমন্ত্রী হননি। তিনি এখন জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে বন্দী।

বিএনপির সাম্প্রতিক সমাবেশ, আন্দোলন সম্পর্কে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা লড়াই করছি। লড়াই বেগবান হয়েছে। বিশ্বাস করি, অতি অল্প সময়ের মধ্যে এ লড়াই দুর্বার গণ–আন্দোলনে পরিণত হবে। এ গণ–আন্দোলনের মধ্য দিয়ে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে সক্ষম হব।’ একটি জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে দুর্বার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বিএনপি এই সরকারের পতন ঘটাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আওয়ামী লীগের গত তিনটি নির্বাচনের কৌশল বিএনপি বুঝতে পারেনি বলে উল্লেখ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, ‘পরপর তিনটি নির্বাচন তিন কৌশলে পার করেছে। তাদের নির্বাচনের কৌশল আমরা নির্বাচনের আগে বুঝিনি। নির্বাচনের পরে বুঝছি।’

গয়েশ্বর চন্দ্র আরও বলেন, ‘আমাদের দুর্বলতা একটা জায়গায় যে শেখ হাসিনা কী করবে, এটা আমরা আগে বুঝতে পারি না। ঘটনা ঘটার পরে বুঝতে পারি। দিনের ভোট রাত করবে, এটা কে বুঝবে?’

মানুষ এখন আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, বিএনপি দীর্ঘদিন আন্দোলনের বাইরে ছিল। ডাক পড়লে কর্মীরা চলে আসেন। রাজপথ মোকাবিলার সাহস তাঁদের আছে। আপসহীন নেত্রীর মুক্তি আন্দোলন ছাড়া হওয়ার কোনো কারণ নেই।

বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, নিতাই রায় চৌধুরী প্রমুখ।