আমাকে নিলে না কেন?

জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বলেছেন, তিনি যখন মঞ্চে বসা, তখন স্ত্রী রওশন তাঁকে ফোন দিয়েছিলেন। রওশন ফোনে জানতে চেয়েছেন, তিনি এখন কোথায়? জবাবে এরশাদ জানান, তিনি গুলশানে দলের একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আছেন। শুনে রওশন তাঁকে বলেছেন, ‘আমাকে নিলে না কেন?’
জাপায় সাম্প্রতিক দুটি পরিবর্তনের ঘটনায় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের সঙ্গে তাঁর যে কার্যত কোনো দূরত্ব নেই, সম্ভব তা বোঝাতেই এরশাদ নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে ঘটনাটি বলেন। এরশাদ যখন মিষ্টি হাসিতে স্ত্রী রওশনের সঙ্গে কথোপকথনের কথা বলছিলেন, তখন নেতা-কর্মীরা হাততালি ও স্লোগান দিয়ে তাতে উৎসাহ দেন। দলের নবনিযুক্ত কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারকে সংবর্ধনা দিতে জাপার ঢাকা উত্তর কমিটি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এরশাদ বলেন, ‘এত দিন আমি একটা চাপা কষ্ট নিয়ে ঘুমাতাম। মনে শান্তি ছিল না। প্রতিনিয়ত দুশ্চিন্তা হতো। আমি না থাকলে আমার সন্তান, জাতীয় পার্টির কী হবে? জাতীয় পার্টি কি হারিয়ে যাবে?’
ছোট ভাই জি এম কাদেরকে দলের ভবিষ্যৎ নেতা ও নিজের উত্তরসূরি করার কথা উল্লেখ করে এরশাদ বলেন, ‘আমার সেই দুঃস্বপ্ন চলে গেছে। এখন আমি নিশ্চিন্ত, আমার সন্তান বেঁচে থাকবে। সব সংশয়, বেদনা দূর হয়ে গেছে।’ নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এত দিন তোমরা আমার কথা শুনেছ, এখন থেকে আমার ভাইয়ের কথা শুনবে। তাঁর কথা মেনে চলবে।’
এরশাদ বলেন, ‘রুহুল আমিন হাওলাদার ১৪ বছর মহাসচিব ছিল। আমি তাকে সরিয়ে দেওয়ার পর একটি দিনের জন্যও সে আমার বিরুদ্ধে একটি কথাও বলেনি। এই হচ্ছে আনুগত্য, ভালোবাসা। আরেকজনকে মহাসচিব করেছিলাম। আমার ভাইকে যখন দায়িত্ব দিলাম, তাঁর সহ্য হলো না। আমাকে বাদ দিয়ে আরেকজনকে পার্টির দায়িত্ব দিয়ে দিলেন। এটা কি হতে পারে?’
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের, মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার প্রমুখ।