আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার হচ্ছে: সাংসদ মোছলেম
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়ন পাইয়ে দিতে আমার নাম ব্যবহার করে ফেসবুকে যে পোস্ট দেওয়া হয়েছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমার নাম ব্যবহার করে কেউ পোস্ট করলে, তার দায় আমি নেব না। আমি মানুষ, রাজনীতি করতে গিয়ে চলার পথে ভুলত্রুটি হতেই পারে। তবে সম্প্রতি যে অভিযোগ উঠেছে, এ ধরনের কোনো অন্যায় কাজ আমি করিনি। তবু আমার কোনো ভুলত্রুটি হয়ে থাকলে যেকোনো শাস্তি মাথা পেতে নিতে রাজি আছি।’
আজ বুধবার দুপুরে প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সাতকানিয়ার সোনাকানিয়া ইউনিয়নে মনোনয়ন না পেয়ে কামাল উদ্দিন নামের এক যুবলীগ নেতা মোছলেম উদ্দিনের নামে তাঁর কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা নেওয়ার অভিযোগ করে ফেসবুকে পোস্ট দেন। মূলত এ বিষয়ে কথা বলতে আজ এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
মোছলেম উদ্দিন বলেন, ‘গণমাধ্যমে নিউজ দেখে আমি হতাশ হয়ে যায়। আমাদের চরিত্র হনন করা হয়। আমাদের ভুল নেই, সেটা বলব না। দলীয় কিছু বিষয় আছে, যেগুলো জনগণের সামনে বলা যায় না।’ তিনি বলেন, ‘আমি হয়তো সবাইকে সন্তুষ্ট করতে পারিনি, তবে সবার সঙ্গে বিনয়ী আচরণ করেছি। সব সময় দলের ভাবমূর্তি রক্ষায় কাজ করার চেষ্টা করে গেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্য, এ ঘটনা আমাকে মর্মাহত করেছে। ইতিমধ্যে যে লোক এ কাজ করেছেন, তা সে লোকই আবার গতকাল ফেসবুকে আমার প্রশংসাও করেছেন। আমার কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন। তাঁর প্রতি আমার কোনো অভিযোগ নেই; বরং আমি তাঁর নিরাপত্তা নিয়েই ভাবছি। তাঁকে পেছন থেকে হয়তো ইন্ধন দিচ্ছে। তবে অন্যায় কাজে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না।’
চট্টগ্রাম-৮ আসনের এ সাংসদ বলেন, ‘মানুষের কল্যাণে রাজনীতি করি। আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে আমি কোনো অন্যায়ের সঙ্গে আপস করিনি। কেন্দ্রীয় নেতারা মনোনয়নের বিষয়টা দেখেন। আমাদের কোনো হাত নেই। আমরা শুধু তালিকা পাঠাই। কেন্দ্রে তিনজনের নাম পাঠানো হয়। অনেক ক্ষেত্রে বেশিও পাঠানো হয়।’
জামায়াত নেতা মুমিনুল হক চৌধুরীর ছেলে রুহুল্লা চৌধুরীর মনোনয়নের ব্যাপারে এক প্রশ্নের জবাবে মোছলেম উদ্দিন বলেন, ‘মুমিনুল হকের ছেলে রুহুল্লার নাম আমরা পাঠাইনি। আমরা পাঁচজনের নাম পাঠিয়েছিলাম, কেন্দ্রে অনেকের নাম পাঠানো না হলেও সেখানে যুক্ত করেছে। জামায়াতের সঙ্গে রুহুল্লার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে দলীয় সভানেত্রীর কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে সাতকানিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দিন।’
ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া কামালের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার আহ্বান জানিয়ে মোছলেম উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘এসব ঘটনা কারা করেছে, এ ঘটনা গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে তদন্তের আহ্বান জানাই। আমি ঘটনার সঙ্গে বিন্দুমাত্র জড়িত নই। কামালকে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সেটার পেছনে অনেকে জড়িত থাকতে পারে। তাঁর সঙ্গে আমার দেখা ও সাক্ষাৎ হয়নি। তিনি দলের হাইকমান্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারতেন। সেটা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে না দিয়ে।’
এক প্রশ্নের জবাবে সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দীন চৌধুরী বলেন, ‘কামাল উদ্দিন আর আমি একই ইউনিয়নের বাসিন্দা, তিনি কখনো বলেননি আমি মনোনয়ন চাই। যেহেতু হোসেন কবির উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, তিনি এ ব্যাপারে মামলা করেছেন। মামলা পিবিআইকে তদন্তের জন্য দেওয়া হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।