ইভিএম নিয়ে ইসির সঙ্গে বসবে না বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি

বাংলাদেশে নির্বাচনে ব্যবহৃত ইভিএম মেশিন
ফাইল ছবি: প্রথম আলো

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটদান ও এর কারিগরি বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের ডাকা মতবিনিময় সভায় অংশ নেবে না বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি। দলটি মনে করছে, ইভিএম পদ্ধতিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনো অবকাশ নেই। এ সম্পর্কে সোমবার দুপুরে নির্বাচন কমিশনে লিখিত মতামত পাঠিয়েছে দলটি।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির দলীয় সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচন কমিশনের সচিব বরাবর দলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক লিখিত মতামত পাঠান।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ভোটাররা ইভিএমে ভোট দেওয়ার জন্য এখনো প্রস্তুত নয়। ইভিএম পদ্ধতি নিয়ে ভোটারদের সন্দেহ ও অবিশ্বাস এখনো প্রবল। তাদের ধারণা, ইভিএমে কোনো না কোনো কারসাজি আছে। এ পদ্ধতিতে সরকারি দল নির্বাচনী ফলাফল নিজেদের পক্ষে নিয়ে আসতে কিছু না কিছু করতে পারে। সদ্য সমাপ্ত কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এই নেতিবাচক মনোভাব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। জনগণের একটি বড় অংশের ধারণা, ইভিএম হচ্ছে নির্বাচনে ডিজিটাল কারচুপির অত্যাধুনিক যন্ত্র।

কমিশনে পাঠানো মতামতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি বলেছে, যেহেতু নির্বাচন কমিশন ইভিএম নিয়ন্ত্রণ করবে, সেখানে সফটওয়্যার নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ভোটের ফলাফল নিয়ন্ত্রণের সুযোগ থাকে। এসব অনাস্থার কারণে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডস, আয়ারল্যান্ড, জার্মানি, মালয়েশিয়া, ভেনেজুয়েলাসহ অনেক দেশ ইভিএম পদ্ধতি থেকে সরে এসেছে।

দলটি বলছে, ব্যালট পেপারে ভোট গ্রহণের পর কেউ ফলাফল নিয়ে অনাস্থা প্রকাশ করলে পুনরায় ব্যালট গণনার সুযোগ রয়েছে, যা ইভিএম পদ্ধতিতে নেই। নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষভাবে ইভিএম পরিচালনা করলেও হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে ফলাফল ওলট–পালট হতে পারে। বিশ্বের উচ্চ প্রযুক্তিসম্পন্ন দেশে হ্যাকিংয়ের ঘটনা অহরহ ঘটছে। এ ছাড়া দেশের আর্থসামাজিক বাস্তবতা, ভোটারদের শিক্ষা ও চেতনার ঘাটতি, ভোটকেন্দ্রে পেশিশক্তির উপস্থিতি ইভিএম ব্যবস্থার সংকট।

২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে নজিরবিহীন তামাশার পর দেশে নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচনব্যবস্থার কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই বলে মতামতে উল্লেখ করেছে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি। দলটি মনে করে, এ অবস্থায় নির্বাচন কমিশনের প্রতি ভোটারদের আস্থা ফিরিয়ে আনাটাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। সেখানে ইভিএম নিয়ে তৎপরতা ও মাতামাতি নতুন নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাকে আরও প্রশ্নবিদ্ধ করবে। এ ছাড়া অধিকাংশ নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল যেখানে ইভিএমে নির্বাচনের বিরুদ্ধে, সেখানে কোনো যুক্তিতেই ইভিএম পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার অবকাশ নেই।

এ দফায় মঙ্গলবার ১৩টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মতবিনিময় করবে নির্বাচন কমিশন। বেলা তিনটায় নির্বাচন ভবনে এ মতবিনিময় সভা হওয়ার কথা রয়েছে।