কুয়েত সাংসদকে আটকের কথা বাংলাদেশ দূতাবাসকে এখনো জানায়নি

মানব পাচার ও অবৈধ মুদ্রা পাচারের অভিযোগে সাংসদ কাজী শহিদ ইসলাম ওরফে পাপুলকে আটকের বিষয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসকে এখনো কিছু জানায়নি কুয়েত। যদিও কুয়েতের গণমাধ্যমগুলো ছবিসহ ফলাও করে এই আটকের খবর ছাপছে নিয়মিত।
গত শনিবার রাতে কুয়েত সিটির মুশরিফ এলাকার বাসা থেকে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র ওই সাংসদকে আটক করে নিজেদের দপ্তরে নিয়ে যায় দেশটির অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কর্মকর্তারা। পরদিন রোববার তাঁর জামিন চাওয়া হয়। কিন্তু পাবলিক প্রসিকিউটর সে আবেদন নাকচ করেন। তাঁকে বিচারিক হেফাজতে পাঠিয়ে রিমান্ডে নিতে সিআইডির আবেদন মঞ্জুর করেন।
কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এস এম আবুল কালাম আজ বুধবার বিকেলে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘দূতাবাস তাঁর (সাংসদ) ব্যাপারে তথ্য চেয়ে গত শনিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি লিখেছিল। পরে কুয়েতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দূতাবাস থেকে ফোনও করা হয়েছিল। এখন পর্যন্ত কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। যেহেতু আনুষ্ঠানিক জবাব পাইনি, তাই বলা সম্ভব হচ্ছে না সাংসদ এখন কোথায় আছেন। তবে কুয়েতের গণমাধ্যমগুলোর খবর অনুযায়ী তিনি আটক রয়েছেন।’
এদিকে কুয়েতের স্থানীয় সূত্রগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গেছে, সাংসদ কাজী শহিদের বিরুদ্ধে তদন্তের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার তাঁর প্রতিষ্ঠান মারাফি কুয়েতিয়া গ্রুপ অব কোম্পানিজের দপ্তরে যান সিআইডির কর্মকর্তারা। সেখানে গিয়ে লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছেন। আজও সাংসদের বিষয়ে বাংলাদেশের কয়েকজনের সঙ্গে তাঁরা কথা বলেছেন।
কুয়েত সরকার যেমন আটকের চার দিন পরও বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে সাংসদের ব্যাপারে কিছু জানায়নি, তেমনি বাংলাদেশ দূতাবাসও ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ নিয়ে কোনো প্রতিবেদন পাঠায়নি বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ দুপুর পর্যন্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে রাষ্ট্রদূত কিংবা দূতাবাসের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে কিছু জানানো হয়নি। এ ধরনের পরিস্থিতিতে এটা স্বাভাবিক ঘটনা নয় বলে মন্তব্য ওই কর্মকর্তাদের।
বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের কোনো সাংসদের মানব আর অবৈধ মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটকের ঘটনা এটাই প্রথম। লিবিয়ায় মানব পাচারকারীদের কবলে পড়ে ২৬ বাংলাদেশি নিহত ও ১১ জন আহত হওয়ার ঘটনায় দেশে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে এক সপ্তাহ ধরে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে বাংলাদেশ। এমন এক সময়ে কুয়েতে সাংসদের ঘটনা বাংলাদেশকে বাজে অবস্থায় ফেলেছে। তাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা মনে করেন, সাংসদের গ্রেপ্তারের ফলে সামগ্রিকভাবে কুয়েতের পরিস্থিতি নিয়ে দূতাবাসের মূল্যায়ন কী সেটা জানা জরুরি।