বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অনুরোধ ব্যক্তিগত: তথ্যমন্ত্রী

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ
ছবি: বাসস

বিএনপিকে নির্বাচনে অংশ নিতে মার্কিন কর্তৃপক্ষকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অনুরোধ একান্তই তাঁর ব্যক্তিগত বলে দাবি করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘তাঁর বক্তব্য একান্তই ব্যক্তিগত, সরকারের কিংবা আমাদের দলের বক্তব্য নয়।’

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন হাছান মাহমুদ। এ সময় সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সফরকাল বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে মার্কিন কর্তৃপক্ষকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অনুরোধ নিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের প্রসঙ্গে সাংবাদিকেরা জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পূর্তিতে গত সোমবার ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় বেলা দেড়টার দিকে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বৈঠক করেন।

বৈঠকে নির্বাচন প্রসঙ্গ এসেছে উল্লেখ করে বাংলাদেশর পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপি যাতে নির্বাচনে অংশ নেয়, সে জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন যাতে অবাধ ও সুষ্ঠু হয়, এ জন্য সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে। একটি দল ছাড়া সবাই ভোটে অংশ নেয়। মিলিটারির দ্বারা তৈরি হওয়া দলটি নির্বাচনে অংশ নেয় না। তাদের (বিএনপি) নির্বাচনীয় প্রক্রিয়ায় আনেন।’

আরও পড়ুন

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনকে ভয় পায়। তারা যেহেতু বারবার বিদেশিদের কাছে সব বিষয় নিয়ে ধরনা দেয়, সেই পরিপ্রেক্ষিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু মিডিয়ার সামনে এ কথা বলেছেন। কিন্তু সেখানকার কর্মকর্তাদের সাথে এ বিষয়ে আলোচনা করেননি তিনি।’

গণতন্ত্রকে সংহত করতে ও গণতন্ত্রের অভিযাত্রাকে এগিয়ে নিতে যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচন কারও জন্য দাঁড়ায়নি। ২০১৮ সালে বিএনপি নির্বাচনের ট্রেনে উঠবে কি উঠবে না, সেটা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিল। পরে ট্রেনের পাদানিতে চড়ে তারা নির্বাচনের ট্রেনে গিয়েছিল। সুতরাং নির্বাচনের ট্রেন কারও জন্য দাঁড়িয়ে থাকবে না।’

বিএনপিকে নির্বাচন ভীতিতে পেয়ে বসেছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, শুধু জাতীয় সংসদ নির্বাচন না, তারা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও বর্জন করছে। তাদের ভীতি দূর করার দায়িত্ব আমাদের নয়। তবে যারা গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা, জনগণের রায়ে বিশ্বাস করে তাদের জন্য নির্বাচনের কোনো বিকল্প নাই। আমি আশা করব, বিএনপি নির্বাচনভীতি কাটিয়ে উঠে নির্বাচনে অংশ নেবে।’

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, তিনি ২০১৯ সালের একটি বিস্ফোরক মামলায় পরোয়ানাভুক্ত আসামি। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে অন্যান্য মামলাও আছে সে জন্য তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকালের মিছিলের সঙ্গে ইশরাককে গ্রেপ্তারের কোনো সম্পর্ক নেই।

‘বঙ্গবন্ধু স্মরণে বরণে’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন

সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে ঢাকা ক্লাবের স্যামসন এইচ চৌধুরী মিলনায়তনে ‘বঙ্গবন্ধু স্মরণে বরণে’ প্রবন্ধ সংকলনের মোড়ক উন্মোচন করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দেশের যে ৯ দশমিক ৬ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছিল, তা আজও আমরা ছুঁতে পারিনি।’

গ্রন্থটির প্রশংসা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সরকারের লক্ষ্য উন্নত রাষ্ট্র গড়ার পাশাপাশি একটি মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলা। শুধু বস্তুগত উন্নয়নই যথেষ্ট নয়, সার্বিক উন্নয়নের জন্য এর সঙ্গে জাতির আত্মিক উন্নয়ন আবশ্যক।

সরাসরি ক্লাস নিচ্ছেন হাছান মাহমুদ

করোনার ক্রান্তিকাল শেষে আবারও ক্লাসে উপস্থিত হয়ে পাঠদান শুরু করেছেন তথ্যমন্ত্রী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগে খণ্ডকালীন অধ্যাপনায় নিয়োজিত হাছান মাহমুদ করোনার মধ্যে দীর্ঘদিন অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার পর বৃহস্পতিবার বিকেলে বিভাগের চতুর্থ সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের ক্লাসে উপস্থিত হন।

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এর আগেও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ ও ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে খণ্ডকালীন শিক্ষকতা করেছেন।