জামায়াত আমিরের সঙ্গে টেলিসংলাপকে 'ভুয়া' বলছে খেলাফত

লকডাউনের মধ্যেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাওলানা জুবায়ের আনসারীর জানাজায় লাখো মানুষের সমাবেশ ঘটেছে।
লকডাউনের মধ্যেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাওলানা জুবায়ের আনসারীর জানাজায় লাখো মানুষের সমাবেশ ঘটেছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির যোবায়ের আহমেদ আনসারীর জানাজাকে কেন্দ্র করে হওয়া জনসমাগম নিয়ে একটি টেলিসংলাপ ভাইরাল হয়েছে।

তবে টেলিসংলাপটি সম্পূর্ণ ভুয়া এবং ষড়যন্ত্রের অংশ বলে দাবি করছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক। এই প্রচারের বিরুদ্ধে তিনি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের মিত্র। সবশেষ জাতীয় নির্বাচনে জাতীয় পার্টির সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়েছিল। অন্যদিকে যে টেলিসংলাপটি প্রচার করা হয়েছে সেটি ইঙ্গিত দেয় জনসমাগম ছিল পূর্বপরিকল্পিত এবং এতে জামায়াতের ইন্ধন আছে। বিএনপিও অবহিত ছিল।

এক প্রশ্নের জবাবে মাহফুজুল হক প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমানের ব্যক্তিগত যোগাযোগ নেই। পরিচয়ও নেই। কোনো দিন ফোনে কথা বলেছেন বলেও মনে করতে পারেন না।

অডিও রেকর্ডে যা আছে

ফেসবুকে ইথিকাল হ্যাকিং নামের একটি পেজে অডিওটি প্রকাশ করা হয়। পোস্টে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাহফুজুল হক ও জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমানের ছবি যুক্ত করা হয়েছে এতে।

কথোপকথনে মাওলানা মাহফুজুল হক হিসেবে যাঁকে উপস্থাপন করা হয়েছে তাঁকে বলতে শোনা যায়, যোবায়ের আহমেদ আনসারীর জানাজা সম্পর্কে সবাইকে বলে দেওয়া হয়েছে, ভালো মানুষের জমায়েত হবে। তবে পথে প্রচুর পুলিশ।

অন্যদিকে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান হিসেবে যাঁকে উপস্থাপন করা হয়েছে তাঁকে বলতে শোনা গেছে, 'লকডাউন' কে পাত্তা দেওয়া যাবে না। প্রচুর লোকের সমাগম ঘটাতে হবে। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে হবে। প্রচুর লোকজন হলে পুলিশ কিছু করতে পারবে না। কারণ ফাঁড়িতে যথেষ্ট পুলিশ থাকে না। ফজলুল হক আমিনীর বড় ছেলের সঙ্গে কথা হয়েছে, তাঁরাও লোক পাঠাবেন, জামায়াতের লোকও থাকবে। এ সম্পর্কে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও অবহিত আছেন।

মাহফুজুল হক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, অডিও ক্লিপ যারা প্রচার করেছে, তাদের নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে, নইলে তিনি আইনি ব্যবস্থা নেবেন। ওই বিজ্ঞপ্তিতে তিনি আরও বলেন, সেদিনের জনসমাগম অনিচ্ছাকৃত ও অনাকাঙ্ক্ষিত। এ ব্যাপারে তাঁরা প্রশাসনকে জানিয়েছেন।

১৯৮৯ সালে শায়খুল হাদিস আজিজুল হকের উদ্যোগে খেলাফতে মজলিস নামে রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করে। ২০০৫ সালে খেলাফতে মজলিস দুই টুকরো হয়ে যায়। খেলাফতে মজলিস বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০–দলীয় জোটের সঙ্গে থেকে যায়, অন্যপক্ষটি জোট থেকে বেরিয়ে আসে ও বাংলাদেশ খেলাফতে মজলিস নামে কার্যক্রম চালিয়ে যায়।

এই মুহূর্তে বাংলাদেশ খেলাফতে মজলিস সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখে চলছে। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস মনে করছে, ইথিকাল হ্যাকিং নামের যে গ্রুপটি ফেসবুকে কথোপকথনের লিঙ্ক প্রকাশ করেছে তারা ঠিকমতো খোঁজখবর না নিয়েই এমন একটি ভুয়া অডিও রেকর্ড তৈরি করেছে।