দেশের বিরুদ্ধে চিঠিদাতাদের বিচার হওয়া উচিত: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, দেশের বিরুদ্ধে চিঠিদাতাদের বিচার হওয়া উচিত।
আজ সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মনে করি, দেশের বিরুদ্ধে, দেশকে সাহায্য দিতে নিষেধ করে, সাহায্য দিলেও সেটিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার জন্য বিদেশে চিঠি দেওয়ায় মির্জা ফখরুল সাহেবের বিচার হওয়া উচিত, বিএনপিরও বিচার হওয়া উচিত।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব সংবাদ সম্মেলন করে বললেন, তিনি কোনো চিঠি দেননি। পরে যখন আমরা বিএনপির প্যাডে মির্জা ফখরুল সাহেবের স্বাক্ষরিত চিঠি এবং সেই চিঠিতে তিনি বাংলাদেশকে সাহায্য দেওয়া বন্ধ করার যে কথা বলেছেন এবং একই সঙ্গে বিএনপি কার্যালয়ের ঠিকানা দিয়ে তাঁরা যে লবিস্ট নিয়োগ করেছেন, সেই দলিল-দস্তাবেজ গণমাধ্যমে উপস্থাপন করলাম, তখন তাঁরা নিশ্চুপ হয়ে চুপসে গেলেন।’
মির্জা ফখরুলদের অপকর্ম দেশের মানুষের কাছে যখন উন্মোচিত হলো, তখন তাঁদের আর কোনো জবাব নেই। সে জন্য তাঁরা এখন নানা প্রশ্ন উপস্থাপন করার চেষ্টা করবেন, তাঁদের অপকর্ম ঢাকার জন্য নানা কথা বলবেন, এটি খুবই স্বাভাবিক বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘পৃথিবীর বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশের সরকার নিজ দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার জন্য, রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য, পিআর অথবা লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও বলা হয়েছে আমরা পিআর ফার্ম নিয়োগ করেছি। এগুলো করার কারণেই আমাদের রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধি পেয়েছে, করোনার মধ্যেও রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এত কিছুর মধ্যেও আমাদের রপ্তানি ৫০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সরকার যা করে, আমরা তা–ই করেছি এবং সেগুলো “ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট” সরকারি চুক্তি। সুতরাং এখানে প্রশ্ন রাখার কিছু নেই।’
হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি মহাসচিব দেশকে সাহায্য দেওয়া বন্ধের জন্য যে চিঠি লিখেছেন, এটি যদি ইউরোপের কোনো দেশ হতো, তাহলে মির্জা ফখরুল সাহেব এবং বিএনপির বিরুদ্ধে মামলা হতো এবং তিনি রাজনীতিতে অযোগ্য হতেন এবং তাঁর বিচার হতো।
ইসি সার্চ কমিটির বিষয়ে বিএনপির মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করলে মন্ত্রী বলেন, আইন অনুযায়ী সার্চ কমিটি গঠিত হয়েছে এবং সেখানে দুজন বাদে বাকিরা সবাই সাংবিধানিক পদধারী। সাংবিধানিক পদধারীরা কোনো দলের নন, সরকারেরও নন। কারণ, রাষ্ট্রপতি কিংবা সরকার তাঁদের সরাতে পারবে না, সেটির নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া আছে। আর সুশীল সমাজের দুজন অত্যন্ত নিরপেক্ষ ও শ্রদ্ধেয় মানুষ হিসেবে সুপরিচিত। সুতরাং এই সার্চ কমিটি নিয়ে আসলে বিরূপ মন্তব্যের কোনো সুযোগ নেই।
বিএনপির নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেছেন, মির্জা ফখরুল সাহেব বলছেন, ‘এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবেন না। কিন্তু নির্বাচন কখনো সরকারের অধীনে হয় না। নির্বাচনকালে নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার চাকরি নির্বাচন কমিশনের হাতে ন্যস্ত হয়ে যায়। সুতরাং সার্চ কমিটি কীভাবে গঠিত হলো, কী করল, সেটি তাঁদের কাছে বিবেচ্য বিষয় নয়। সবকিছুতেই “না” বলার বাতিক থেকে বিএনপি যদি বের হতে না পারে, বিএনপি যে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, সেটি জানি না, ভবিষ্যৎ সেটি বলে দেবে।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, আসলে মূল বিষয় হচ্ছে বিএনপির তো জনগণের ওপর কোনো আস্থা নেই, সে জন্য সবকিছুতেই ‘না’ বলার পদ্ধতি তারা অব্যাহত রেখেছে। তাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে জল ঘোলা করে কোনো কিছু করা যায় কি না। সে চেষ্টাই তারা করে যাচ্ছে।