দেশ ৯৯ বনাম ১–এ বিভক্ত: মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম
বর্তমানে দেশ ‘৯৯ বনাম ১’—এভাবে বিভক্ত এবং এই ৯৯ ভাগ মানুষ যাতে নিজেদের দাবিদাওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে না পারে, সে জন্য নানাভাবে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম।
রাজধানীর পল্টনে সিপিবির সমাবেশে বোমা হামলার ২১তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম এ মন্তব্য করেন।
২০০১ সালের ২০ জানুয়ারি পল্টন ময়দানের ওই সমাবেশে হামলায় সিপিবির পাঁচজন কর্মী নিহত হন। ওই হামলায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে মুক্তিভবনের সামনের অস্থায়ী বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সিপিবির নেতা–কর্মীরা। এরপরই সমাবেশ হয়।
নিহত ব্যক্তিদের স্মরণ করে মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, কমিউনিস্টদের স্তব্ধ করার জন্য বোমা হামলা চালানো হয়েছিল; যাতে কমিউনিস্ট পার্টি মানুষকে নিয়ে মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে। হামলার পর জনগণের আরও বেশি অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে সিপিবি এগিয়ে যাচ্ছে। অশুভ শক্তির হীন উদ্দেশ্য সফল হয়নি। এখনো নানা ষড়যন্ত্র চলছে। পল্টন বোমা হামলার মূল কুশীলবের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে।
সিপিবি সভাপতি বলেন, দেশ এক গভীর সংকট অতিবাহিত করছে। গণতন্ত্রহীনতা, লুটপাটতন্ত্র, সাম্প্রদায়িকতা আজ চরম আকার ধারণ করেছে। এই অবস্থা থেকে দেশকে উদ্ধার করতে হলে বামপন্থার উত্থান ঘটাতে হবে।
সমাবেশে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম বলেছেন, দ্বিদলীয় ধারার বিপরীতে বাম বিকল্প শক্তির উত্থানের মধ্য দিয়ে শহীদদের প্রতি পরিপূর্ণ শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। পল্টন ময়দানের বোমা হামলার পর আলামত সংগ্রহ না করে সিপিবির নেতা–কর্মীদের তৎকালীন আওয়ামী সরকারের পুলিশ বাহিনী লাঠিপেটা ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক কাজী সাজ্জাদ জহির, সিপিবি ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি শামসুজ্জামান হীরা, ঢাকা জেলার সভাপতি সুকান্ত শফি, ঢাকা দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার, ঢাকা জেলার সাধারণ সম্পাদক আবিদ হোসেন, ঢাকা উত্তরের সাধারণ সম্পাদক লুনা নূর প্রমুখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক আহসান হাবীব।
অস্থায়ী বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাম গণতান্ত্রিক জোট, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাসদ (মার্ক্সবাদী), ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল, ন্যাপ, গণফোরাম, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, কৃষক সমিতি, ক্ষেতমজুর সমিতি, যুব ইউনিয়ন, ছাত্র ইউনিয়ন, গার্মেন্ট টিইউসি, বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়ন, সিপিবি ঢাকা দক্ষিণ, সিপিবি ঢাকা উত্তর, সিপিবি ঢাকা জেলা কমিটি, সিপিবি নারী সেল এবং ঢাকা নগরের বিভিন্ন থানা ও শাখা সংগঠন। আন্তর্জাতিক সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি সমাপ্ত হয়।