প্রথম আলো কার্যালয়ে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ
ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন

পদের জৌলুশ উপভোগ করাটাই জীবনের পরম প্রাপ্তি বলে মনে করেন না—নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বে যাঁরা আসবেন, তাঁদের এমন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য থাকা উচিত। এ মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি আজ রোববার নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ কথা লিখেছেন। এর পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনে আসা ব্যক্তিদের আরও কিছু চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ করেছেন এই পোস্টে। আর তিনি বলেছেন, এসব বৈশিষ্ট্যের মানুষ নিশ্চয়ই আছেন। তবে তাঁদের খুঁজে পেতে কষ্ট স্বীকার করতে হবে সার্চ বা অনুসন্ধান কমিটিকে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে যোগ্য ব্যক্তি বাছাইয়ে আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে প্রধান করে (সভাপতি) গতকাল শনিবার অনুসন্ধান (সার্চ) কমিটি গঠন করা হয়েছে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মেয়াদ ১৪ ফেব্রুয়ারি শেষ হচ্ছে। ইসি গঠনে নতুন আইন অনুযায়ী, অনুসন্ধান কমিটি গঠনের ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে যোগ্য ব্যক্তিদের নাম প্রস্তাব করতে হবে অনুসন্ধান কমিটিকে।

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ তাঁর পোস্টে লিখেছেন, ‘নির্বাচন কমিশন গঠন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ, এটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রথম ধাপ এবং দেশে বিশ্বাসযোগ্য শক্তিশালী জাতীয় প্রতিষ্ঠান গঠন আদৌ সম্ভব কি না, তার একটা পরীক্ষাও। অবশ্য নির্বাচনকালীন সরকার কেমন হতে হবে, সেটা আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, তাতে সন্দেহ নেই।’

প্রবীণ শিক্ষাবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের গুণাগুণ কেমন হওয়া উচিত, তা নিয়ে নাগরিক সমাজের সংগঠনসমূহ ও নেতৃত্বে থাকা ব্যক্তিরা তাঁদের সুচিন্তিত মতামত দিচ্ছেন। প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা এবং সেই সঙ্গে রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতার ওপর তাঁরা যথার্থই গুরুত্ব দিচ্ছেন।’

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘আমার কাছে আরও কিছু চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়: যাঁদের নির্বাচন কমিশনের প্রধান বা সদস্য পদ পাওয়াটা এবং এ ধরনের উচ্চপদের জৌলুশ উপভোগ করাটাই জীবনের পরম প্রাপ্তি বলে মনে হবে না এবং দায়িত্ব পালনে নিষ্ঠা থাকলেও নিছক উচ্চপদে আসীন হওয়া ছাড়াও জীবনের সফলতার অন্য মাপকাঠিও যাঁদের আছে। এ রকম ব্যক্তিত্বের মানুষেরাই কোনো কারণে দায়িত্ব পালনে অপারগ হলে পদের মোহ ত্যাগ করে পদত্যাগ করতে দ্বিধা বোধ করবেন না এবং অন্তত ভবিষ্যতের জন্য একটা সঠিক বার্তা রেখে যেতে পারবেন। এ রকম মানুষ নিশ্চয়ই আছেন, তবে তাঁদের খুঁজে বের করতে হলে সার্চ কমিটির সে রকম উদ্দেশ্য থাকতে হবে এবং খোঁজখবর নেওয়ার জন্য একটু কষ্ট স্বীকার করতে হবে।’