‘বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস’ বইয়ে ভাসানী সম্পর্কে অসত্য তথ্য: হায়দার আকবর খান রনো
‘বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস’ বইয়ে মাওলানা ভাসানী সম্পর্কে উপস্থাপিত তথ্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) প্রেসিডিয়াম সদস্য হায়দার আকবর খান রনো। বুধবার গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়ে এ প্রতিবাদ জানান তিনি।
বিবৃতিতে হায়দার আকবর খান রনো বলেন, ‘সম্প্রতি আমি ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাসের লেখক ড. মোহাম্মদ হাননানের বইটি সম্পর্কে বিভিন্ন বাদানুবাদ লক্ষ করেছি। আমি সকল বিষয়ে যাব না। তবে একটি বিষয় উল্লেখ করতে চাই যে তিনি মাওলানা ভাসানী সম্পর্কে একটি অসত্য বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। তিনি বলেছেন, বাষট্টির ছাত্র আন্দোলনের সময়ে যে ৯ নেতার বিবৃতি প্রকাশিত হয়েছিল, তাতে মাওলানা ভাসানীর স্বাক্ষর ছিল না। এই ব্যাপারে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে ইঙ্গিত দিয়েছেন যে সরকারের সঙ্গে ভাসানীর সখ্য ছিল বলেই তিনি এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর দিতে সম্মত হননি। কথাটি যে ভুল, সে কথা আমি তাঁকে কয়েক বছর আগে ফোনে জানিয়েছি। তবু তিনি ভুল সংশোধন না করে পত্রিকায় একই বক্তব্য পুনরাবৃত্তি করেছেন।’
হায়দার আকবর খান রনো আরও বলেন, ‘বস্তুত ৯ নেতার বিবৃতিতে ভাসানীর স্বাক্ষর থাকার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। কারণ, তিনি বন্দী ছিলেন। ড. মোহাম্মদ হাননানের জ্ঞাতার্থে এবং পাঠকদের জানার জন্য এ–সংক্রান্ত কয়েকটি তারিখ উল্লেখ করছি। ১৯৫৮ সালের ১২ অক্টোবর মাওলানা ভাসানীকে টাঙ্গাইল থেকে গ্রেপ্তার করে আইয়ুব সামরিক সরকার। তারপরে তিনি ঢাকায় একটানা বন্দী ছিলেন ১৯৬২ সালের ৩ নভেম্বর পর্যন্ত। পরবর্তীতে কৃষকদের কয়েকটি দাবি নিয়ে অনশন করলে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তিনতলায় ১০ নম্বর কেবিনে তিনি বন্দী ছিলেন। ৯ নেতার বিবৃতি স্বাক্ষরিত হয়েছে ১৯৬২ সালের ২৪ জুন। অতএব একজন বন্দী নেতাকে সরকারের সহযোগী হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা করাটা যথার্থ কি না, তা পাঠকেরাই বিচার করবেন।’
বইয়ের লেখক মোহাম্মদ হাননানের উদ্দেশে হায়দার আকবর খান রনো বলেন, ‘ইতিহাস লেখায় হাত দেওয়ার আগে কিছুটা গবেষণাও করা দরকার। কোনো বিশেষ ব্যক্তি বা রাজনৈতিক নেতাকে কারও পছন্দ হতে পারে অথবা না হতে পারে। কিন্তু তথ্য সঠিক না হলে তাঁকে ইতিহাসবিদ বা গবেষক কোনোটাই বলা যায় না।’