বিদেশিদের চাপমুক্ত থাকতে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে: বাংলাদেশ জাসদ

মানবাধিকার প্রশ্নে মার্কিন ভূমিকা তাদের নিজ দেশে ও বিদেশে বিতর্কিত ও নিন্দিত। তাই তাদের এই তথাকথিত গণতান্ত্রিক সম্মেলন এবং পরবর্তী ভূমিকা সর্বজনীন আবেদন করতে সক্ষম হবে না। তবে বৈশ্বিক রাজনীতিতে তাদের অবস্থান, প্রভাব ও গতিধারা স্পষ্ট করেছে এবং আরও করবে।

এক বিবৃতিতে কথাগুলো বলেছেন বাংলাদেশ জাসদ সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া ও সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান। আজ মঙ্গলবার এই বিবৃতি দেন তাঁরা।

বাংলাদেশ জাসদের বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উদ্যোগে আয়োজিত গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তার পরপরই সাবেক সেনাপ্রধান এমএ আজিজের মার্কিন ভিসা বাতিল, বর্তমান পুলিশ, র‍্যাব প্রধানসহ কিছু কর্মকর্তাকে যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ করার সংবাদ দেশি ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এই সংবাদ দেশবাসীর জন্য বিব্রতকর, যা সরকারও স্বীকার করেছে এবং বিচলিত হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক দৃশ্যত যে রকম ছিল, তাতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে দ্বিপক্ষীয় রাজনৈতিক আলোচনা প্রত্যাশিত ছিল। কিন্তু তেমন সুযোগ তৈরিতে বাংলাদেশ সরকার ব্যর্থ হয়েছে।

জাসদের বিবৃতিতে বলা হয়, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড দীর্ঘদিন যাবৎ নানা নামে এ দেশে চলেছে। সরকারের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডগুলোর তদন্ত করার সুযোগ আছে। তবু বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, একতরফা ও ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন, লুটপাট এবং সর্বব্যাপী দলবাজির পর সেই তদন্ত সঠিক দিশা পায়নি, ক্ষতিগ্রস্তরাও লাভবান হয়নি। সেই ক্ষেত্রে এই তদন্ত এবং তদন্তের বিধান বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকে নিরুৎসাহিত করতে পারেনি।

বিবৃতিদাতারা বলেন, ‘দেশে ক্ষমতাসীনদের ছত্রচ্ছায়ায় ব্যাপক লুণ্ঠন ও সম্পদ পাচার বহুল আলোচিত বিষয়, যা সরকার আমলে নিলেও তেমন কিছু করতে পারেনি এখনো। বিদেশি বেগমপাড়া দেশে সর্বজনবিদিত। স্বয়ং পররাষ্ট্রমন্ত্রী কানাডীয় বেগমপাড়ায় আমলাদের সংখ্যা বেশি, এ কথা বলেছেন।’

বিবৃতিতে বলা হয়, সরকার দেশের জনগণ এবং বহির্বিশ্ব থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ যেকোনো বিদেশি চাপকে মোকাবিলা করা তখনই সম্ভব হবে, যখন সরকার দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করে সমগ্র জনগণকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে পারবে। লুটপাটের রাস্তা বন্ধ করে সাধারণ মানুষের জীবনে স্বস্তি ও নির্ভরতা সৃষ্টি করতে পারবে। অন্যথায় দেশের জন্য এক কঠিন ও জটিল পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।