ভৈরবে কমিটি নিয়ে বিভক্ত বিএনপি

কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলা ও পৌর বিএনপির সদ্য ঘোষিত কমিটি নিয়ে দলটির নেতা-কর্মীরা দুভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। নতুন কমিটি বাতিলের দাবিতে আগামী শুক্রবার বিকেলে স্থানীয় চক বাজারে দলের একটি পক্ষ জনসভা আহ্বান করেছে।
ঘোষিত কমিটির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য শরীফুল আলম। এর বিপক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন।
শুক্রবার জনসভা উপলক্ষে বিলি করা পোস্টার ও প্রচারপত্রে নতুন কমিটিকে ‘পকেট কমিটি’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, জনসভায় শরীফুল আলম ও শাহিনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হবে। পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি আবুল হাসনাত ও যুগ্ম আহ্বায়ক উছমান মোল্লা এ সভা আহ্বান করেছেন। এতে প্রধান অতিথি করা হয়েছে গিয়াস উদ্দিনকে। সভায় পৌর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সাদেক হোসেন সভাপতিত্ব করবেন।
উছমান মোল্লা বলেন, নতুন ঘোষিত পকেট কমিটি ভৈরব বিএনপিকে রক্ষা করতে পারবে না। তাই দলকে রক্ষা করতেই এ জনসভা।
দুই সপ্তাহ আগে শরীফুল আলমের নেতৃত্বে ১১৩ সদস্যবিশিষ্ট উপজেলা ও ১০১ সদস্যবিশিষ্ট পৌর কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে উপজেলা কমিটির সভাপতি হন দলটির আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম। সাধারণ সম্পাদক করা হয় পৌরসভার প্যানেল মেয়র আরিফুল ইসলামকে। পৌর মেয়র মো. শাহিনকে সভাপতি ও যুবদলের নেতা মজিবুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে করা হয় পৌর কমিটি।
শরীফুল আলম বলেন, একজন বহিষ্কৃত নেতা কাউকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করতে পারেন না। গ্রেপ্তার আতঙ্কে যেখানে দেশের কোথাও বিএনপির নেতা-কর্মীরা মিলাদ মাহফিলও করতে পারছেন না; সেখানে ভৈরবে কোনো বাধা ছাড়াই ঘটা করে জনসভা করার প্রস্তুতি নিতে পারাটাই রহস্য।
গিয়াস উদ্দিন বলেন, তিনি এখন আর বহিষ্কৃত নন। সেই সুবাদে তিনি মাঠে আছেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ-৬ (ভৈরব-কুলিয়ারচর) আসন থেকে দুবার করে দলীয় মনোনয়ন পেয়েও শরীফুল ও গিয়াসের কেউই সংসদ সদস্য হতে পারেননি। শেষে নেতৃত্ব নিয়ে তাঁরা বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। ২০০৯ সালের এপ্রিলে ‘সংস্কারপন্থী’ অভিযোগে গিয়াসকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় পর্ষদ।
শুক্রবারের জনসভা উপলক্ষে বিলি করা পোস্টার ও লিফলেটে জ্যেষ্ঠ নেতা আলাল উদ্দিন, জাকির হোসেন, তোফাজ্জল হক, আবদুল মান্নান, ধন মিয়া, নবী হোসেন, মোহাম্মদ হোসেন সরকার ও মোশারফ হোসেনের নাম বিশেষ অতিথির তালিকায় ছাপা হয়েছে। এতে বক্তা হিসেবে আরও নয়জন নেতার নাম ছাপা হয়েছে।
পৌর কমিটির সভাপতি মো. শাহিন বলেন, নাম ছেপে পোস্টার পূর্ণ করা হলেও এর অর্ধেক নেতাকেও মঞ্চে দেখা যাবে না। বেশির ভাগ নেতাকে না জানিয়েই তাঁদের নাম ছাপা হয়েছে।
গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘দু-একজন নেতা নানা কারণে জনসভায় না আসতেই পারেন। তবে বেশির ভাগ নেতাই আমাদের পক্ষে রয়েছেন।’