‘মনোনয়ন-বাণিজ্য’: সেই ৩০ লাখ টাকা ফেরত চেয়ে নোটিশ

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেতে দেওয়া টাকা ফেরত চেয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকে আইনি নোটিশ দিয়েছেন এক যুবলীগ নেতা। বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সহ-আইনবিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন আইনজীবীর মাধ্যমে এই নোটিশ দেন সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হোসেন কবিরকে। মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন চট্টগ্রাম জজ আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলিও।

কামাল উদ্দিন দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার সোনাকানিয়া ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি সোনাকানিয়াসহ সাতকানিয়ার ১৬টি ইউপিতে নির্বাচন হবে।

নোটিশ দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে কামাল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, নোটিশ পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে টাকা ফেরত না দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

নোটিশে বলা হয়, স্থানীয় লোকজন ও নেতা-কর্মীদের অনুরোধে সাতকানিয়া উপজেলার সোনাকানিয়া ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়ার জন্য কামাল উদ্দিন প্রচারণা শুরু করেন। একপর্যায়ে সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হোসেন কবির আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন। কামাল উদ্দিন মনোনয়ন-বাণিজ্যে বিশ্বাসী না হলেও হোসেন কবির চট্টগ্রাম-৮ আসনের সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমেদের আস্থাভাজন হওয়ায় তাঁর আশ্বাসে রাজি হন। এ জন্য নগদে হোসেন কবিরকে প্রথমে ১৫ লাখ টাকা দেন। পরে সাংসদের নামে আরও ১৫ লাখ টাকার চেক দেন। কিন্তু ৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের মনোনয়নে কামাল উদ্দিনের নামটি আসেনি। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, নামটি স্থানীয় আওয়ামী লীগ থেকে পাঠানো হয়নি। তালিকায়ও ছিল না। পরে কামাল উদ্দিন টাকাগুলো ফেরত চেয়ে হোসেন কবিরের শহরের বাসায় যান। কিন্তু তিনি ফেরত দেননি। এ কারণে কামাল উদ্দিন তাঁর ফেসবুকে টাকা দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে চেকের ছবিসহ স্ট্যাটাস দেন।

এদিকে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চট্টগ্রাম-৮ আসনের সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমেদের নামে ১৫ লাখ টাকার চেক নেওয়ার অভিযোগ তোলায় ১০ জানুয়ারি কামালের বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইব্যুনাল চট্টগ্রামে মামলা করেন হোসেন কবির। আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে কামাল উদ্দিন ১৫ লাখ টাকার একটি চেকের ছবিও যুক্ত করে দেন। এটি সোনালী ব্যাংক কোর্ট হিল শাখার একটি চেক। তাতে পে টু-এর স্থানে লেখা মোছলেম উদ্দিন আহমেদ। নিচের অংশে কামাল উদ্দিনের সই রয়েছে, তবে চেকে কোনো তারিখ ছিল না। স্ট্যাটাসে কামাল উদ্দিন একপর্যায়ে লেখেন, ‘আমি আমার চেক ও টাকা ফেরত চাই। অন্যথায় বিষয়টি নিয়ে আমি তৃণমূলের আশা-ভরসার শেষ আশ্রয়স্থল জননেত্রী শেখ হাসিনার দ্বারস্থ হব এবং ফৌজদারি মামলা করতে বাধ্য হব।’

এ ব্যাপারে সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমে বলেন, ‘এটা ডাহা মিথ্যা, বানোয়াট। তাঁর বিরুদ্ধে আইসিটি মামলা হবে। তিনি প্রতারণা করছেন আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য।’