মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভূলুণ্ঠিত হয়েছে: মির্জা ফখরুল

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
ফাইল ছবি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের যে চেতনা ছিল, তা ভূলুণ্ঠিত করে এখন একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রবর্তনের জন্য বর্তমান শাসকগোষ্ঠী বিভিন্নভাবে এ দেশের মানুষের ওপর অত্যাচার–নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। আজ মঙ্গলবার সকালে মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের কয়েক হাজার নেতা–কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ফখরুল। বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘আমাদের চিকিৎসক, শিক্ষক, সাংবাদিক, প্রকৌশলীসহ অসংখ্য বুদ্ধিজীবীদের নৃশংসভাবে হত্যা করেছে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। দীর্ঘ ৯ মাসের যুদ্ধে লাখ লাখ মানুষকে হত্যা করেছে। জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে তারা বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে।’

ফখরুল বলেন, ‘এ বছর স্বাধীনতার ৫০ বছর পূরণ করতে চলেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যের কথা, ১৯৭১ সালে যে লক্ষ্য নিয়ে স্বাধীনতাযুদ্ধ শুরু করেছিলাম, সেই লক্ষ্য—গণতান্ত্রিক একটি রাষ্ট্র এখন পর্যন্ত আমরা পাইনি।’ তিনি আরও বলেন, বর্তমান শাসকগোষ্ঠী বিভিন্নভাবে এ দেশের মানুষের ওপর অত্যাচার–নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। তারা অসংখ্য মানুষকে খুন করেছে, গুম করেছে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কয়েক বছর ধরে সাজানো মামলায় আটক করে রাখা হয়েছে। এখন এ মুহূর্তে তিনি অসুস্থ হয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে অবস্থান করছেন। আমরা বারবার বলেছি, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হোক। কিন্তু সরকার এতে কর্ণপাত করেনি।’ তিনি আরও বলেন, এই গণবিরোধী সরকার, স্বাধীনতাবিরোধী সরকার বেগম খালেদা জিয়া শুধু নয়, কাউকেই তারা এখানে রাজনীতি করতে দিতে চায় না। এ দেশে তারা বিরাজনৈতিকীকরণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে একদিকে যেমন তারা বন্দী করে রেখেছে, চিকিৎসার সুযোগ দিচ্ছে না।‌ অন্যদিকে সমস্ত দেশপ্রেমিক মানুষের ওপর তারা অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। ঠিক এ রকম একটি দিনে আমরা শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।’ তিনি আরও বলেন, জনগণ আবার মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জেগে উঠবে। দানবীয় স্বৈরাচারী কর্তৃত্ববাদী সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার, জনগণের পার্লামেন্ট এবং একটা মুক্ত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা পাবে।

এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, দলের প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরীসহ বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।