দেশের শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার ‘ভয়ংকর রূপ’ ধারণ করেছে বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন। শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে দুর্যোগকালীন বৃত্তি দাবি করেছে সংগঠনটি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন ছাত্র ইউনিয়নের একটি অংশের নেতা-কর্মীরা। সেখানে ঝরে পড়া রোধে সংগঠনটির পক্ষ থেকে কয়েকটি দাবি তোলা হয়। দাবিগুলো হলো—শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুর্যোগকালীন বৃত্তি প্রদান, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের করোনাকালীন সব বেতন-ফি মওকুফ এবং অন্তত আগামী এক বছরের সব বেতন-ফি মওকুফ। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এই তিন দাবিতে আগামী মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দেবে তারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রাগীব নাঈম। এতে ব্র্যাক ও বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের জরিপের বরাত দিয়ে বলা হয়, করোনা মহামারির আগে নবম শ্রেণিতে যেসব পরীক্ষার্থী নিবন্ধিত হয়েছিল, পরে তাদের প্রতি পাঁচজনের একজন ঝরে পড়েছে৷ দেশের বর্তমান শ্রমশক্তির ৮৮ শতাংশই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে বাধ্য হয়ে ঝরে পড়া শিক্ষার্থী। ২০২১ সালে নতুন করে স্কুলে ভর্তি হয়নি প্রায় এক-তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থী।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, শিক্ষামন্ত্রীর পক্ষ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি টিউশন ফিতে ছাড় দেওয়ার আহ্বান জানানো হলেও মওকুফের জন্য কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি৷ যেখানে করোনাকালে শ্রমজীবী মানুষের নতুন করে আয় কমেছে প্রায় ৮০ শতাংশ, সেখানে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে করোনাকালীন পুরো টিউশন ফি আদায়ের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে আসতে না পারা সরকারের চূড়ান্ত ব্যর্থতার একটি উদাহরণ।
রাগীব নাঈম জানান, তিন দফা দাবি আদায়ে আগামী মঙ্গলবার বেলা ১১টায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে তাঁরা স্মারকলিপি দেবেন৷ তাঁদের আশা ও বিশ্বাস, সারা দেশের সচেতন শিক্ষার্থীরা ওই তিন দাবির পক্ষে মাঠে নামবেন এবং নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেতন ভূমিকা পালন করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র ইউনিয়নের এই অংশের সহসভাপতি অনিক রায়, জহর লাল রায় ও জয় রায়, সহসাধারণ সম্পাদক তামজীদ হায়দার, ক্রীড়া সম্পাদক শিমুল কুম্ভকার প্রমুখ।