সংলাপ অর্থহীন: মির্জা ফখরুল
নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতির সংলাপ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘কিসের সংলাপ? এই সংলাপ ইতিমধ্যেই অধিকাংশ রাজনৈতিক দল বর্জন করেছে। আমরা পরিষ্কার করে বলেছি, এই সংলাপে কোনো লাভ হবে না। অর্থহীন সংলাপ। যদি নির্বাচনকালে নিরপেক্ষ সরকার না থাকে, তাহলে নির্বাচন কমিশনের কিছুই করার নেই।’
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আজ শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এক সমাবেশ করে নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম। সেখানেই এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের পরিষ্কার কথা, সবার আগে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন। তারপর পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে জনগণের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দিন। এটা একমাত্র পথ, এর বাইরে আর কোনো পথ নেই।’ তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি এখন জনগণের দাবি; এটা গণদাবি। এই দাবি অবশ্যই সরকারকে মেনে নিতে হবে। যদি সরকার এই গণদাবি মেনে না নেয়, তাহলে গণদাবি অস্বীকার করার জন্য অতীতের সরকারগুলোর যে অবস্থা হয়েছে, এই সরকারের সেই পরিণাম ভোগ করতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে গত দেড় থেকে দুই মাস আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন করছি। সারা দেশে অসংখ্য সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিটি সমাবেশ থেকে লাখো মানুষের কণ্ঠে একটি আওয়াজ এসেছে—খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই।’
বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার কিছুতেই খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে চায় না। কেন চায় না? কারণ তারা জানে, খালেদা জিয়া যদি মুক্ত হন, তাহলে জনগণের উত্তাল তরঙ্গ সৃষ্টি হবে। এই তরঙ্গে সরকার টিকে থাকতে পারবে না। এ কারণেই তারা খালেদা জিয়াকে মুক্তি চায় না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় সমাবেশে বলেন, খালেদা জিয়ার নাম ধরে কোনো কর্মসূচি দিলে সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে। এই অংশগ্রহণ আন্দোলনের জন্য, সরকারের পরিণতি দেখার জন্য। তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন; রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা থেকে মুক্তি দিতে হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ১৩ বছর ধরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। তারা সবই লুট করেছে। জনগণকে সরকার বলে, বাংলাদেশ উন্নতির মহাসোপানে, মহাসড়কে উঠেছে। অথচ চার কোটি লোক বেকার। করোনার মধ্যে আড়াই কোটি মানুষ কষ্টে আছেন।
মাহমুদুর রহমান আরও বলেন, ‘প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে দুই লাখ কোটি টাকা পাচার হয়। এটা কারা করে, বিএনপির লোক? বিরোধী দল? এটা করে যারা ক্ষমতায় আছে তারা। বারে বারে ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান, এইবারে ঘুঘু তোমার বধিব পরান।’
মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘এরা (সরকার) নির্বাচন কমিশন বানাতে পারবে না। যেটা বানাবে, সেটা মানি না। সেই ইসির অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। এরা চলে যাবে। চলে যাওয়ার পর আমরা যারা আন্দোলন করেছি, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে নতুন সরকার বানাব, নতুন ইসি বানাব, একটা নতুন বাংলাদেশ গড়ব। সেই দেশ হবে সুখী-সমৃদ্ধ।’
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।