সৈয়দ এমরান সালেহ

সরকারের আপাদমস্তক এখন দুর্নীতিগ্রস্ত। ভূমিহীন গরিব অসহায় মানুষদের জন্য ‘প্রধানমন্ত্রীর উপহার’ হিসেবে দেওয়া ঘর তৈরিতে যে চিত্র প্রকাশিত হয়েছে, তাতে অন্যান্য ক্ষেত্রে কী ধরনের দুর্নীতি ও লুটপাট চলছে, তা সহজেই অনুমেয়।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ এসব কথা বলেন।

বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকার ঢাকঢোল পিটিয়ে ভূমিহীনদের জন্য ঘর নির্মাণ করেছে, যা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে ‘প্রধানমন্ত্রীর উপহার’ হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে। সেই ঘর নিয়েও যে সীমাহীন দুর্নীতি, লুটপাট, স্বেচ্ছাচারিতা ও দলীয়করণ হয়েছে, তা গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। সেই ঘরগুলো হস্তান্তরের আগেই, কোনো কোনোটি হস্তান্তরের পর কয়েক মাস না যেতেই ধসে পড়েছে। তাতেই প্রমাণিত হয়, দেশে উন্নয়নের নামে হরিলুট চলছে।

সরকারি এই প্রকল্পে দুর্নীতির পাশাপাশি স্বজনপ্রীতির অভিযোগ করেন সৈয়দ এমরান সালেহ। তিনি বলেন, গরিব মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ঘরের বরাদ্দ তালিকায় নাম ওঠানো হয়েছে। তাতে বাড়ি-ঘরের মালিক, জায়গা-জমি আছে, এমনকি প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীও বরাদ্দ পেয়েছেন। এ ছাড়া সরকারি খরচে ঘর নির্মাণ হলেও অনেক জায়গায় ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা ৩০ থেকে ৯০ হাজার টাকার বিনিময়ে ঘর বরাদ্দ দিয়েছে। শুধু তা–ই নয়, যাঁদের নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তাঁদের ঘরের নির্মাণসামগ্রী ক্রয়, পরিবহন খরচ, নির্মাণশ্রমিকদের পারিশ্রমিক এবং শ্রমিকদের খাবারের খরচ দিতেও বাধ্য করা হয়েছে। এভাবে দেশ এখন দুর্নীতিবাজদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ভূমিহীনদের ঘর নির্মাণে দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা এবং ক্ষতিগ্রস্ত গরিব ও ভূমিহীনদের ঘরগুলো পুনর্নির্মাণ করে পুনর্বাসনের দাবি জানানো হয়।

আরও পড়ুন

বগুড়ায় পাঁচ মাস পর ধসে পড়ল প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর

আরও পড়ুন

গজারিয়ায় বৃষ্টির পানিতেই ভাঙছে উপহারের ঘর

অগ্নিকাণ্ডে মালিকপক্ষের অবহেলা দায়ী

রূপগঞ্জে হাসেম ফুড কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মালিকপক্ষের অবহেলা ও উদাসীনতা দায়ী বলে অভিযোগ করেন বিএনপির নেতা এমরান সালেহ। তিনি বলেন, অগ্নিকাণ্ডের পর সেজান জুস কারখানার মালিক-কর্তৃপক্ষের রহস্যজনক ভূমিকায় বিভিন্ন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ফ্যাক্টরির মালিক মো. আবুল হাসেম আওয়ামী লীগ নেতা বলেই কি প্রশাসন এখন পর্যন্ত মালিক-কর্তৃপক্ষের গাফিলতি, অবহেলা ও উদাসীনতাকে আমলে নিচ্ছে না? তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কোনো পদক্ষেপ এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান হচ্ছে না?

সংবাদ সম্মেলনে মালিক-কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে বিচার এবং অগ্নিকাণ্ডে নিহত ও আহত শ্রমিকদের পরিবারকে আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের দাবি জানানো হয়।