সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য নিরাপত্তা বাহিনী তৈরি আছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নিরাপত্তা বাহিনী তৈরি আছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য নিরাপত্তা বাহিনী তৈরি আছে।
বৃহস্পতিবার ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: জাতীয় ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। এই সভায় মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখায় বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়া জুলিয়ান ফ্রান্সিসকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান তিনি। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনের সেমিনার কক্ষে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে ছয় হাজারের বেশি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোনো নির্বাচনেই রক্তের বন্যা প্রবাহিত হয়নি। এমন একটি নির্বাচনও হয়নি, যেখানে মানুষ খুন হয়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য জাতীয় নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য নিরাপত্তা বাহিনী তৈরি হয়ে আছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচন যাতে নিরপেক্ষ হয়, সবাই ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে তার নির্দেশ দিয়েছেন। সে অনুযায়ী সবাই কাজ করছি। কুড়িগ্রামের সংসদ সদস্য নির্বাচনে জাতীয় পার্টির সদস্য জয়যুক্ত হয়েছেন। সেখানে আমরা যদি কিছু এদিক-সেদিক করতাম আমরা জয়যুক্ত হতে পারতাম। জাল ভোট বা সিল মেরে আর কতই বা ভোট দেওয়া যায়? লাখ লাখ ভোটের ব্যবধানে গাজীপুর ও খুলনার নির্বাচনে আমরা জিতেছি।’
দেশে টেকসই শান্তি এবং টেকসই নিরাপত্তা বিরাজ করছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, দেশে জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। একইভাবে আঞ্চলিক নিরাপত্তা বজায় রাখার ব্যাপারেও সরকার সচেষ্ট আছে। বর্তমান সরকার কোনো ধরনের সন্ত্রাসবাদ বা জঙ্গিবাদকে প্রশ্রয় দেয় না।
সভায় সভাপতিত্ব করেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দীন চৌধুরী মানিক। বর্তমান সরকারের আমলে বিভিন্ন নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে উল্লেখ করেন তিনি।
সভায় ইনস্টিটিউট অব কনফ্লিক্ট, ল’ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুর রশীদ বর্তমান সরকারের আমলে সিটি করপোরেশন নির্বাচনসহ বিভিন্ন নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে বলেন, নির্বাচনে শঙ্কা থাকলে নারীরা ভোট দিতে যেতেন না। নারীরা সেজেগুজে ভোট দিতে যাচ্ছেন, তাই প্রমাণ করে কোনো ভীতি ছিল না। ছোটখাটো মারামারির ঘটনা ঘটতে পারে।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের রাজ্যসভায় দেওয়া এক ভাষণের কথা উল্লেখ করে শাহরিয়ার কবির জানান, বর্তমান সরকারের আমলে দেশের হিন্দু জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বেড়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর জরিপমতে, ২০১১ সালে বাংলাদেশে হিন্দু জনগোষ্ঠী ছিল ৮ দশমিক ৪ শতাংশ, গত বছর তা বেড়ে হয়েছে ১০ দশমিক ৭ ভাগ।
সভায় বাংলাদেশ সম্মিলিত ইসলামি জোটের সভাপতি মাওলানা জিয়াউল হাসান, শ্রীশ্রী প্রণব মঠের অধ্যক্ষ স্বামী সংগীতানন্দজী মহারাজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের চেয়ারম্যান ফাদার তপন ডি রোজারিও, বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয়, ভারতের সমাজকর্মী অরিন্দম মুখার্জি বক্তব্য দেন।