হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বিবৃতি একপেশে, অগ্রহণযোগ্য: তথ্যমন্ত্রী
বাংলাদেশ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সর্বশেষ প্রতিবেদনকে একপেশে, অগ্রহণযোগ্য ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আখ্যা দিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, এটি পড়ে মনে হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে হয়তো কেউ ‘ড্রাফট’ করে দিয়েছে এবং তারা তা পরিমার্জন করে প্রকাশ করেছে মাত্র, এর বেশি কিছু নয়।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ আরও বলেন, এ ধরনের সংগঠন থাকা অবশ্যই ভালো, কিন্তু বিভিন্ন দেশের ব্যক্তিবিশেষের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে ব্যক্তিবিশেষের স্বার্থ রক্ষা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নিজেদের ব্যবহার করা এবং বিবৃতি দেওয়া সংগঠনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। এ ক্ষেত্রে সেটিই ঘটেছে।
আজ শুক্রবার রাজধানীর মিন্টো রোডে মন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
উল্লেখ্য, গতকাল বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) তাদের ‘বৈশ্বিক প্রতিবেদন ২০২২’ প্রকাশ করে। সেখানে বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে বলা হয়, বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে সংঘটিত বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্যাতন ও গুমের বিষয়ে ২০২১ সালে জাতিসংঘ, দাতা দেশ এবং বেসরকারি সংস্থাগুলোর উত্থাপিত উদ্বেগ খারিজ করে দিয়েছে। সরকার ২০২১ সালে এটা পরিষ্কার করে দিয়েছে যে এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো ইচ্ছাই তাদের নেই।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বিবৃতিটি আমি দেখেছি। এটি কোনোভাবেই বাস্তবসম্মত নয়। এটি একপেশে ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সেখানে উল্লিখিত নির্দিষ্ট দু-তিনটি বিষয় ছাড়া মানবাধিকার নিয়ে তাদের আর কিছু জানা আছে বলে মনে হয় না। একজন লেখক ও রেইন ট্রি হোটেল নিয়ে কিছু ব্যক্তিবিশেষ বিভিন্ন সভা-সমিতিতে প্রায়ই যা বলে থাকেন, বিবৃতিতে সেগুলোই আছে।’
কয়েক দিন আগে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা গুয়ানতানামো বের বন্দী নির্যাতন কারাগার বন্ধের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচ যে দেশে বসে পরিচালিত হয়, অর্থাৎ সেই যুক্তরাষ্ট্রেই যে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন হয়, সেসবের দিকে নজর দিতে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতি অনুরোধ জানান হাছান মাহমুদ।
‘সরকার অমিক্রন প্রতিরোধের নামে বিএনপি দমনে বেশি সচেষ্ট’—বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্য সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, অমিক্রন প্রতিরোধে শুধু বিএনপির সমাবেশ বন্ধ রাখতে বলা হয়নি, আওয়ামী লীগসহ সব রাজনৈতিক দলের জন্যই তা প্রযোজ্য। এখন বিএনপি অমিক্রন প্রতিরোধ না করে অমিক্রন বেশি ছড়াতে চায় কি না, সেটিই প্রশ্ন।
এর আগে মন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন রাঙ্গুনিয়া উপজেলার দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবার হত্যা, হত্যাকারীদের বিচারের পথ রুদ্ধ করা এবং বিনা বিচারে শত শত সামরিক সদস্যের ফাঁসি কার্যকর করা এ দেশে সবচেয়ে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা।