বীণা প্রতিযোগিতায়...

আঁকা: জুনায়েদ
আঁকা: জুনায়েদ

দেশ-বিদেশ থেকে লোক এসেছে অনুষ্ঠান দেখতে। প্রচুর দর্শক। এদিকে প্রতিযোগীরাও তৈরি। একটু পরই প্রতিযোগিতা শুরু হবে, বীণা প্রতিযোগিতা। স্টেজে সব নামকরা বীণাবাদক, একে একে সবাই নিজের পরিচয় দিচ্ছেন।
আরে! তানিয়া না! কিন্তু ও এখানে কী করে? প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে নাকি! তবে যা-ই হোক, পরিচিত মুখ দেখে ভালো লাগছে। আরে হ্যাঁ, তানিয়াই তো! মাত্রই শুনলাম, মাইকে ঘোষণা করল—তানিয়া হোসেন, কাম ফ্রম বাংলাদেশ। বাহ! অসাধারণ! এই বিদেশ-বিভুঁইয়ে বসে বাংলাদেশি একটা মেয়ের বীণা শুনতে নিশ্চয়ই দারুণ লাগবে।
ধ্রিম... ধ্রিম... ধ্রিম! পরপর তিনটি ককটেল ফাটার শব্দ হলো। দর্শক-বীণাবাদক সবাই যে যার মতো ছুটছে। শুধু বাংলাদেশ থেকে আসা তানিয়া স্টেজে দাঁড়িয়ে। তার কাছে এই শব্দ খুব নরমাল। দেশে রোজ সে এমন শব্দ শুনত। কারণ, বিরোধী দলগুলোর হরতাল-অবরোধ লেগেই আছে। কখনো ৪৮ ঘণ্টা, কখনো ৭২ ঘণ্টা, আবার কখনো লাগাতার কর্মসূচি। তাই এসব শব্দ এখন ওর কাছে কোনো ব্যাপার না।
এই যাহ! পুরো মঞ্চ খালি। তানিয়া একা দাঁড়িয়ে। কী মনে হতেই আচমকা বীণা হাতে বাজানো শুরু করল সে। গ্যালারিতে শেষপর্যন্ত বেরোতে না-পারা দর্শক সব ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ককটেল-পরবর্তী বীণার সুর। মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনছি। আগে থেকেই সব প্রয়োজনীয় সেট-আপ করা ছিল বলে আয়োজকেরাও অনুষ্ঠান বন্ধ করেনি। শেষতক তানিয়া হিট। একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে চমৎকার মাতিয়েছে। পরদিন বাংলাদেশের সব পত্রিকায় ওকে নিয়ে হেডলাইন হলো, ‘বীণা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতলেন তানিয়া’।