পিকেটারের কাছে খোলা চিঠি

আঁকা: শিখা
আঁকা: শিখা

হে লক্ষ্যভেদী,
তোমরা যারা পিকেটিংকে হরতাল-অবরোধের সমার্থক বানিয়ে ফেলেছ, তাদের হরতালীয় অভিবাদন। পিকেটিংয়ের উৎপত্তি যেখান থেকে, যেভাবেই হোক, এটির সার্থক ও সুচারু প্রয়োগ যে এ দেশে তোমাদের দ্বারাই হচ্ছে, তাতে আমরা (কিঞ্চিৎ শঙ্কিত হলেও) যারপরনাই গর্বিত। এটিকে প্রায় শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার কৃতিত্ব—সে-ও তোমাদেরই। তোমাদের ভরসাতেই বিরোধী দল মাঠে না থেকেও হরতাল-অবরোধের মতো শক্ত কর্মসূচি দেওয়ার সাহস পায়। তোমাদের কাছে অবশ্য দল নয়, কর্মই মুখ্য। তাই যখন যে দল বিরোধীপক্ষে থাকে, তাদের হয়েই তোমরা মাঠে নামো। দায়িত্ব পালনে তোমাদের উৎসাহ দেশের বাকিদের জন্য নিঃসন্দেহে অনুসরণীয় হতে পারে। এ ছাড়া বিরোধী দলের জন্য ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরি অন্যদের নয়, তোমাদের দিয়েই সম্ভব বলে আমাদের বিশ্বাস।
‘আজকের পিকেটার আগামী দিনের ক্রিকেটার’—এ কথার যৌক্তিকতা একদিন তোমরা প্রমাণ করেই ছাড়বে, এ প্রত্যাশা অমূলক নয়। হরতাল-অবরোধের কড়া নিরাপত্তার মধ্যেও তোমাদের নৈপুণ্য ক্রিকেট মাঠে প্রদর্শন করতে পারলেই হলো। তোমাদের মধ্যেই লুকিয়ে আছে আগামী দিনের জন্টি রোডস, রিকি পন্টিংরা। শুধু ক্রিকেট কেন, গোলক নিক্ষেপের মতো অ্যাথলেটিক ইভেন্টেও বাজিমাত করার সমূহ সম্ভাবনা তোমাদের মধ্যে। এত সম্ভাবনার পরও তোমাদের নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো রিয়েলিটি শো কেন হয়নি, সে বিস্ময় প্রকাশ না করে পারছি না। অবিলম্বে ‘পিকেটার নাম্বার ওয়ান, তোমাকেই খুঁজছে বিরোধী দল’জাতীয় রিয়েলিটি শো আয়োজনের মাধ্যমে তোমাদের কেবল হরতালের দিন নয়, প্রতিদিন টেলিভিশনের পর্দায় দেখা ও ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য টিভি চ্যানেলগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। কারণ, পিকেটারের হাতে থাকলে ইট, সে অনুষ্ঠান হবেই হবে হিট।
ইতি
তোমাদের কর্মযজ্ঞের একজন ভক্ত
(কিছুটা সন্ত্রস্ত কি নয়?)
 সোহেল নওরোজ, খুলনা