ফাটল বোমা, দে দৌড়!

ফাটল বোমা, দে দৌড়!
ফাটল বোমা, দে দৌড়!

১৯৯২ সাল। মগবাজার মোড়। হরতাল চলছে। যাচ্ছি কলেজে। বাসে উঠব। গাজীপুর টু সায়েদাবাদ লাইনের বাস। বাসে উঠতে যাচ্ছি, অমনি বুউউউম! বোমা ফেটেছে! আর কী, দে দৌড় ফ্রি স্টাইলে। যে যেদিক পারছে, দে দৌড়। পরে শুনলাম, রিকশার টায়ার ফেটেছে। হোক, তাতে কী! সাবধানের মার নেই।
বাস থেকে নটর ডেম কলেজের সামনে নামলাম। গেট দিয়ে ঢুকব। আবার বুউউউম! বোমা! বোমা! দে দৌড়, ফ্রি স্টাইলে। ভয়ে ঢুকে গেলাম কলেজে। পরে শুনলাম, ট্রাকের টায়ার ফেটেছে। ফাটুক, সাবধানের মার নেই।
পেটে খিদে। টিফিন পিরিয়ডে গেলাম ক্যানটিনে। শিঙাড়া খাচ্ছি। মাত্র কামড় দিলাম। অমনি আবার বুউউউম! বোমা! বোমা! দে দৌড়, ফ্রি স্টাইলে। কার খাবার কে খায়! খাবার ফেলে দিলাম দৌড়। পেটে শুধু ভয়, খিদে নেই। পরে শুনলাম, ক্যানটিনের বাবুর্চি তাক থেকে বড় খালি ডেকচি ফেলে দিয়েছে। যার কারণে এত শব্দ। হোক, সাবধানের মার নেই।
ক্লাস শেষে রিকশায় করে মেসে ফিরছি তিন বন্ধু। মগবাজার পেয়ারবাগ গলির সামনে আসতেই আবার বুউউউম! বোমা! বোমা! দে দৌড়, ফ্রি স্টাইলে। দিলাম দৌড়। রিকশার ভাড়া না মিটিয়ে এক দৌড়ে মেসে। পরে শুনলাম, বিদ্যুতের তারে বেচারা কাক বসেছিল। হোক, তাতে কী। সাবধানের মার নেই।
দুপুরের খাবার শেষে মেসের সবাই আরাম করে বসলাম। বেশ গল্প জমে উঠেছে। আবার বুউউউম! বোমা! বোমা! দে দৌড়। সবাই বাইরে চলে গেল। আমি বসে রইলাম। কারণ, বোমাটা আমার পেটের ভেতরে ফেটেছে! তাতে কী। সাবধানের মার নেই।
 সুবীর কাশমীর পেরেরা
মেরিল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র