একটি সমকালীন গীতিনাট্য

চরিত্র: তিনটি (দুজন অভিনেত্রী, একজন অভিনেতা)
পটভূমি: তিনজন সদ্যই ‘মন্ত্রী’ পদ হারিয়েছেন। সে কারণে তিনজনেরই মন খারাপ। মনের কষ্ট শেয়ার করতে তাঁরা একে অপরকে ফোন করেছেন। তিনজনেরই ফোনের রিংটোন ‘আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম’।
কথা বলে ঠিক করলেন সবাই দেখা করবেন। যদি কষ্ট একটু কমে। তাঁরা আগে যেখানে মিটিং করতেন সেটা এখন অন্যদের দখলে। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মিটিংটা বাইরে কোথাও হোক, কোনো গাছের তলায়।

দৃশ্য ১
মঞ্চ: গাছতলা।
আলোকসজ্জা: হালকা আলোর মাধ্যমে একটা বেদনাবিধুর আবহ।
তিনজন মুখোমুখি বসা। কারও মুখে কোনো কথা নেই। চোখ ছলছল অবস্থা। বুকে হাহাকার। মুখ খুললেই টপটপ করে চোখের জল গড়িয়ে পড়বে এমন অবস্থা। শেষে তিনজন মুখ ঘুরিয়ে নেবেন অন্যদিকে। হাতের ওপর থুতনি রেখে দূরে তাকিয়ে এ সময় একজন অভিনেত্রী গেয়ে উঠবেন—

পুরানো সেই দিনের কথা ভুলবি কি রে হায়
ও সেই ঈদের সময় তালাচাবি—সে কি ভোলা যায়!
আয় আরেকটিবার আয়রে সখা মন্ত্রী হয়ে যাই
তুই সুখে দুখে পিলার নাড়াস, রানা পেলাজায়।

তাঁর পার্ট শেষ, এখন আরেকজন অভিনেত্রী সান্ত্বনার ভঙ্গিতে আরেক
অভিনেত্রীর হাত ধরে দুঃখ ভারাক্রান্ত গলায় সুরে সুরে তাঁর সোনালি অতীতের বর্ণনা দেবেন—

আমি, ব্রেকফাস্টের সময় লন্ডন ছিলাম,
দুপুরে মালয়েশিয়ায়,
রাতের খাবার সেরেছিলাম শখের আম্রিকায়...।

এখন অভিনেতার পালা, তিনি এখন গেয়ে উঠবেন—

হায়, মন্ত্রিত্ব হলো ছাড়াছাড়ি, পিলার ক্যামনে নাড়াই?
আমরা তিনজন বসি এখন গাছেরও তলায়।
দৃশ্য ২
তিনজন হাত ধরে দর্শকের দিকে একবার মাথা নুইয়ে মঞ্চ থেকে বেরিয়ে যাবেন। দর্শকেরা এ সময় বিপুল করতালির মাধ্যমে তাঁদের অভিনন্দন জানাবেন। সেটা অভিনয়ের জন্য নাকি তাঁরা চলে যাচ্ছেন বলে সেটা একটা রহস্য হয়ে থাকবে।
(সমাপ্ত)
লেখা: শাহরিয়ার মুক্তার