নতুন সরকারের সাবেক মন্ত্রীদের ভূমিকা

প্রচ্ছদ ভাবনা: আদনান মুকিত, ফটোশপ: মনিরুল ইসলাম
প্রচ্ছদ ভাবনা: আদনান মুকিত, ফটোশপ: মনিরুল ইসলাম

কবি-সাহিত্যিকেরা সব সময়ই নতুনের জয়গান গেয়েছেন। এ জন্যই বোধ হয় নতুন বছরে গঠিত হয়েছে নতুন মন্ত্রিসভা। এতে আগের মন্ত্রিসভার ৫১ সদস্যের মধ্যে ৩৫ জনই বাদ পড়েছেন। ৪৯ সদস্যের নতুন মন্ত্রিসভায় আগের মন্ত্রিসভার আছেন মাত্র ১৮ জন। বাকিরা সবাই নতুন। এটা অনেকটা ফ্রিজে খাবার রাখার মতো ব্যাপার। বাড়িতে সুস্বাদু নতুন খাবার এলে পুরোনো খাবারগুলো বের করে সে জায়গায় নতুন খাবারগুলো রাখা হয়। মন্ত্রিসভায়ও তা-ই ঘটেছে। নতুন বলের গতি যেমন বেশি থাকে, তেমনি নতুন মন্ত্রীরাও দায়িত্ব পেয়েই দুর্বার গতিতে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখার কথা বলছেন। সাংবাদিকেরাও তাঁদের পেছনে ঘুরছেন। কিন্তু সবাই ভুলে গেছেন সাবেক মন্ত্রীদের কথা। গত পাঁচ বছর আলোচনায় ছিলেন এই মন্ত্রীরাই। কথা, তত্ত্ব কিংবা কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সংবাদের উপকরণ সরবরাহ করেছেন তাঁরা। অথচ আজ তাঁরা আমাদের মধ্যে নেই—অর্থাৎ মন্ত্রিসভায় নেই!
কিন্তু দীর্ঘ পাঁচ বছরের অভ্যাস কি এত সহজে ত্যাগ করা সম্ভব? সাবেক মন্ত্রীদের মজার মজার কথা বা কর্মকাণ্ডও তো জাতি শুনতে ও দেখতে চায়। অথচ কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপই নিচ্ছে না। চাইলেই কিন্তু সাবেক মন্ত্রীদের কাজে লাগানো যায়। ক্রিকেট থেকে যাঁরা অবসর নেন, তাঁরা ধারাভাষ্যকার বা বিশ্লেষক হয়ে যান। সাবেক মন্ত্রীরাও নতুন মন্ত্রীদের কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণ করে দেশ ও জাতির উন্নয়নে রাখতে পারেন বিশেষ ভূমিকা। এতে জনগণও তাঁদের অমৃত বাণী থেকে বঞ্চিত হবে না।
তা ছাড়া, বর্তমান মন্ত্রিসভার অনেক মন্ত্রীই একেবারে নবীন। সাবেক খেলোয়াড়েরা যেমন কোচ হয়ে নতুনদের প্রশিক্ষণ দেন, তেমনি সাবেক মন্ত্রীরাও নতুন মন্ত্রীদের কোচ হিসেবে কাজ করতে পারেন। কী কী তত্ত্ব দেওয়া যায়, কিংবা কীভাবে কাজ ছাড়াই দেশ-বিদেশ ভ্রমণ করা যায়—এ ব্যাপারে সাবেক মন্ত্রীরা ভালো প্রশিক্ষণ দিতে পারবেন বলে আমাদের বিশ্বাস। আশা করি, কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে গভীর চিন্তাভাবনা করবে।