একটি অতি গোপনীয় কাল্পনিক চিঠি

.
.

প্রিয় সোহেল রানা
আমাকে হয়তো তুমি চিনিতে পারিবে। আমি হল-মার্ক গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর তানভীর মাহমুদ, জেলখানা হইতে অতি গোপনে তোমাকে লিখিতেছি। পর সমাচার এই যে তুমি বুঝিয়াছ কি না জানি না, কিন্তু আমি বুঝিয়াছি তুমি সিম্পলি একটা হাঁদারাম। তুমি কেন কষ্ট করিয়া মাত্র ১৭ কোটি টাকার জন্য দুই বছর ধরিয়া ১০০ ফুট খাল কাটিয়া কুমির আনিতে গিয়াছ? তুমি কি জানিতে না, সোনালী ব্যাংক হইতে কোন উপায়ে আমি চার হাজার কোটি টাকা লোপাট করিয়াছি? তুমি কি পারিতে না ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করিয়া সোনালী ব্যাংক হইতে ঋণ লইতে? দুই-চারজন কর্মকর্তাকে টু-পাইসে ম্যানেজ করিতে? তোমাকে কি আমি কিছুই শিখাইতে পারি নাই?
তোমার নির্বুদ্ধিতায় নিজের কাছে আমার মাথা এমন হেঁট হইয়া গিয়াছে যে আমি এখন পা ওপরে মাথা নিচে দিয়া হাঁটি। যে টাকা লইয়া তুমি বুক ফুলাইয়া ব্যাংকের মূল দরজা দিয়া বাহির হইয়া যাইতে পারিতে, সে টাকার জন্য তুমি ব্যাংকের পাশে ঘর ভাড়া করিয়াছ, সুড়ঙ্গ কাটিয়াছ, চালের বস্তায় ভরিয়া টাকা চুরি করিয়াছ। এহেন চৌর্যকর্মে কোনোরূপ হ্যাপিনেস নাই রে বৎস। হ্যাপিনেস ইজ হোয়েন এত টাকা লোপাটের পরও তোমাকে ছাড়িয়া দেওয়ার জন্য অনেকে তোড়জোড় করিবে, মন্ত্রী তোমার নামে আরও ঋণ দিতে বলিবে।
তোমার যদি সুড়ঙ্গ কাটিবার এতই শখ, তবে কেন সোনালী ব্যাংকের বদলে জেলখানায় আসিয়া চালের বস্তায় ভরিয়া আমাকে লইয়া গেলে না! এরপর দুইজনে চার হাজার কোটি টাকা ফিফটি ফিফটি উপভোগ করিতাম। মাত্র ১৭ কোটির জন্য তুমি এত কিছু করিয়াছ, কারণ তুমি রাবিশ। তুমি বোগাস। তুমি স্টুপিড।

মনে কষ্ট নিয়ো না। একই লাইনের বলিয়া আপন ভাবিয়া কথাগুলো বলিলাম। ভালো থাকিও।

ইতি
তোমার সমগোত্রীয়
তানভীর মাহমুদ

বি. দ্র.: যদি আমার আগে ছাড়া পাও, তবে আমার জেলখানার কাছাকাছি একটা বাসা ভাড়া লইবে। চার হাজার কোটি টাকা কীভাবে ভাগ হইবে তা তো আগেই বলিয়াছি। পড়া শেষে এই পত্রখানা কুচি কুচি করিয়া আগুনে ফেলিয়া দিয়ো।