তিতাসের কর্মকর্তাদের জন্য কিছু সাংকেতিক পদ্ধতি

>

অভিযোগ উঠেছে, ঘুষ লেনদেনে সুবিধার জন্য লাখ টাকার একক হিসেবে সাংকেতিক ‘কেজি’ শব্দ ব্যবহার করতেন তিতাস গ্যাসের কর্মকর্তারা। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। গোয়েন্দা ও সাংবাদিকেরা তাঁদের সংকেত ধরে ফেলেছেন। তাই তাঁদের সুবিধার জন্য নিরাপদ কিছু সাংকেতিক পদ্ধতির কথা জানাচ্ছেন মিকসেতু মিঠু

মোর্স কোড পদ্ধতি

মোর্স কোড বেশ প্রাচীন সাংকেতিক পদ্ধতি। এতে শুধু ডট আর স্পেস ব্যবহার করেই যোগাযোগ করা সম্ভব। রেডিও সিগন্যালের ক্ষেত্রে ডটের জন্য একটি ছোট বিপ সাউন্ড আর স্পেসের জন্য তিন গুণ বিপ সাউন্ড শোনা যাবে। তিতাসের কর্মকর্তারা চাইলে পুরোনো এই কোডটা ব্যবহার করতে পারেন। আপনি রেডিও শোনার সময় দালালেরা এসে যদি বলেন, ‘স্যার, রেডিওর বিপ সাউন্ড তো শুনছেন, ফাইলটা ছাড়তাছেন না কেন?’ তখন আপনি জবাবে বলতে পারেন, ‘আরে, রেডিওতে দুই আরজে তো কথায় কথায় গালিগালাজ করতেছে, তাই কিছুক্ষণ পরপর বিপ বিপ আওয়াজ হয়। কোনটা যে সংকেত, এইটাই তো বুঝলাম না!’

ফ্ল্যাশ লাইট পদ্ধতি

গুপ্তচরেরা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের জন্য এই ফ্ল্যাশ লাইট ব্যবহার করে। এটাও একধরনের কোড ল্যাঙ্গুয়েজ। তিতাস গ্যাসের কর্তারা ফ্ল্যাশ লাইট পদ্ধতির ব্যাপারেও ভেবে দেখতে পারেন। গ্যাসের পাইপে সংযোগ দেওয়ার সময় যদি কোনো কর্মী বলেন, ‘স্যার, ফ্ল্যাশ লাইটের আলো তো দেখা যাইতাছে। গ্যাসলাইন কি চালু করুম?’ তখন আপনি তাড়াহুড়ো করে ‘ইয়েস’ বলবেন না! আগে নিশ্চিত হয়ে নিন, সেটা সংকেতের ফ্ল্যাশ লাইট, নাকি সাংবাদিকদের ক্যামেরার ফ্ল্যাশ লাইট!

কোড নেম পদ্ধতি

লাখ টাকার পরিবর্তে কেজি ব্যবহার না করে টাকার পরিমাণ অনুযায়ী কোড নেম চালু করা যেতে পারে। যেমন ১০ লাখ টাকা বা এক মিলিয়ন বোঝাতে M অক্ষর, কোটি বোঝাতে C অক্ষর। গল্পের মাসুদ রানা যদি আপনাকে একদিন ফোন করে বলে, ‘হ্যালো স্যার, আমি MR 9। অবৈধভাবে গ্যাসের সংযোগ দেওয়ার ব্যাপারে কিছু কথা বলতে চাই।’ তখন আপনি জবাবে বলতে পারেন, ‘MR 9...! M-তে মিলিয়ন, 9-তে ৯, সব মিলিয়ে ৯ মিলিয়ন দেবেন বুঝলাম। কিন্তু R দিয়ে কী বোঝাচ্ছেন? ইন্ডিয়ান রুপি? রুপি হলে তো ভাই ঝামেলা। আপনি আগে টাকা অথবা ডলারে করে দেন, তারপর কথা বলব। ঠিকাছে?’ মাসুদ রানা আর জীবনেও আপনাকে ঘাঁটাতে আসবে না।

স্টার পদ্ধতি

পৃথিবীর সব পাসওয়ার্ড স্টার দিয়ে প্রকাশ করা হয়। তিতাস গ্যাসের কর্মকর্তারা চাইলে খুদে বার্তার জন্য এই স্টার চিহ্নটি বেছে নিতে পারেন। তবে কেউ যদি ‘* **** ***’ এ ধরনের খুদে বার্তা পাঠান এবং তা যদি আপনার স্ত্রীর চোখে পড়ে তাহলে বিপদ! সে সময় আপনার স্ত্রী হয়তো জানতে চাইবেন, ‘একটা স্টার, চারটা স্টার, তিনটা স্টার...মানে I love you! আগেই সন্দেহ করছিলাম। আমি যেন বুঝতে না পারি এ জন্য সাংকেতিক ভাষায় মেসেজ আদান-প্রদান করা, না? সত্যি করে বলো, কে এই মেয়ে? কত দিন ধরে তোমাদের সম্পর্ক?’ তখন আপনি জবাবে কী বলবেন, তা আমরা জানি না!