তাঁদের জন্য অজুহাত

>

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছিল। তাই আবার পরীক্ষা নেওয়া হবে। গতবার যাঁরা প্রশ্নপত্র কিনে সুযোগ পেয়েছিলেন, তাঁরা এবার খারাপ ফল করলে কী করবেন? তাঁদের জন্য কিছু অজুহাত ভেবে বের করেছেন সোহাইল রহমান

১. এবারও প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে, কিন্তু গতবার প্রশ্ন কিনে টাকা ফুরিয়ে যাওয়ায় এবার আর প্রশ্ন কিনতে পারিনি। এ জন্য চান্স পাইনি।

২. আমি টাকা খরচ করে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়েও ভর্তি হতে পারব। কিন্তু যাঁদের টাকা নেই, সেসব দরিদ্র ও মেধাবী ছাত্রকে সুযোগ দিতেই আমি এবার ইচ্ছা করে খারাপ পরীক্ষা দিয়েছিলাম।

৩. আমি ছোটবেলা থেকেই কোনো কিছু রিপিট করি না। এক সিনেমা দুবার দেখি না, এক বই দুবার পড়ি না, একই ফোন বারবার ইউজ করি না। আমার আসলে একই জিনিস বারবার পেতে ভালো লাগে না। একবার তো চান্স পেয়েছিলাম, তাই এবার আর ঢাবিতে চান্স পাওয়ার কোনো ইচ্ছা হয়নি।

৪. পরীক্ষা দেওয়ার মতো অবস্থায় ছিলাম না। ভীষণ মাথাব্যথা ছিল, জ্বর ছিল, হাত ভেঙে গিয়েছিল, পেটে আলসারের সমস্যা, অ্যাপেন্ডিসাইটিসের ব্যথাও উঠেছিল মারাত্মক! এ ছাড়া ডায়াবেটিস, ব্লাড প্রেশার, কোলেস্টেরল বেড়ে যা তা অবস্থা! এত কিছুর পর পরীক্ষা দিতে পেরেছি, এতেই খুশি। চান্স পাইনি বলে আফসোস নেই।

৫. ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ব না। গতবার ভুল করে চান্স হয়ে যাওয়ায় খুব টেনশনে ছিলাম। দ্বিতীয়বার সুযোগ পেয়ে তাই আর ভুল করিনি। সব ভুল উত্তর লিখেছি খাতায়।

৬. ছি ছি, যে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়, জেনেশুনে সেখানে পড়ব আমি? এটা হতেই পারে না। প্রথমবার পরীক্ষার সময় জানতাম না প্রশ্নপত্র ফাঁসের কথা। এবার জেনেছি। তারপর আর এখানে চান্স পাওয়ার কোনো ইচ্ছাই আমার ছিল না।

৭. প্রশ্ন যদি কিনেই থাকি, তাহলে তো এবারও প্রশ্ন কিনেই চান্স পেতাম। কিন্তু দেখুন, আমি চান্স পাইনি। এতেই প্রমাণিত হয় যে আমি প্রশ্নপত্র কেনার পক্ষে না। কখনোই কিনিনি। গতবার মেধা দিয়ে চান্স পেয়েছিলাম। এবারও পেতাম, কিন্তু প্রশ্নপত্র কিনিনি সেটা প্রমাণের জন্যই চান্স পেলাম না ইচ্ছা করে।

৮. চান্স পেয়ে আর কী করব! গত পরীক্ষার রেজাল্টের পর এক সাধুবাবার সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল। তাঁর সঙ্গে কথা বলে উপলব্ধি করলাম, এই দুনিয়া, এই ঢাবি, এই লেখাপড়া, এই রেজাল্ট—সবই মায়া। তাই আর পরেরবার চান্স পাওয়ার আগ্রহ পেলাম না। সাধুবাবার শিষ্য হয়ে হিমালয়ে যাব শিগগিরই। লেখাপড়া সব মোহ আর মায়া। এগুলো বাদ না দিলে সিদ্ধপুরুষ হওয়া যাবে না।

৯. ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাব। একবার পেয়েছি, স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। পরেরবার আবার চান্স পাওয়ার ইচ্ছা নেই। চান্স পেয়ে আর কী হবে? একদিন তো মরেই যাব!