কারাগারে মুঠোফোন

.
.

কয়েক দিন আগে দুঃসাহসী কায়দায় প্রিজন ভ্যান থেকে জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। কারাগারে থাকা জঙ্গিরা মুঠোফোনে তাদের সঙ্গীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। অনেকে বলছেন, কারাগারে থাকা বহু আসামি মুঠোফোন ব্যবহার করেন। ঝোপ বুঝে কোপ মারার মতো জায়গা বুঝে টাকা ঢাললেই নাকি মুঠোফোনের ব্যবস্থা হয়ে যায়।
কিন্তু বিষয়টা নিয়ে দেশের মুঠোফোন সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো কোনো চিন্তাভাবনা করছে না। নিত্যনতুন প্যাকেজ তারা ঠিকই আনছে, কিন্তু কারাগারের ভেতর বন্দীদের মুঠোফোন ব্যবহার নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। অথচ কারাগারের মধ্যস্বত্বভোগীদের হটিয়ে মুঠোফোন সেবা কিন্তু তারা নিজেরাই দিতে পারে। কারাবন্দীদের জন্য বিশেষ সিম, কিংবা বিশেষ অফারের ব্যবস্থা করা এখন সময়ের দাবি। আর মুঠোফোন সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তো অফার দিতে পারলেই খুশি। একসময় সবার ধারণা ছিল, এ প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজ মুঠোফোন সেবা দেওয়া। এখন সবাই জানে, বিভিন্ন উপলক্ষে বিভিন্ন রকম অফার দেওয়াই তাদের কাজ। তাই কারাবন্দীদের জন্যও অফার হতে পারে: ‘প্রিয় কারাবন্দী গ্রাহক, এই বসন্তে আপনার বন্ধ সিমটি চালু করলেই পাবেন ১০০ টাকার টক টাইম।’ ‘চল পালাই’ টাইপ অফার তো দেওয়াই যায়।
তা ছাড়া কোনো সহূদয় প্রতিষ্ঠান চাইলে কারাবন্দীদের জন্য আলাদা সিমও বের করতে পারে। সর্বোচ্চসংখ্যক এফএনএফ, একটি বিশেষ গডফাদারের নম্বরে সারা দিন কথা বলা ফ্রি, বিশেষ কোনো নম্বরে দুই মিনিট কথা বললে এক মিনিটের ফ্রি টক টাইম—এ ধরনের অফার থাকলে কারাবন্দীরা সহজে পালানোর পরিকল্পনা করতে পারবে। অযথা কেন ‘অসৎ’ ব্যক্তিদের ঘুষ দিয়ে মোবাইল ব্যবহার করতে হবে? এখন ডিজিটাল যুগ। সবারই মুঠোফোন ব্যবহারের অধিকার থাকা উচিত। তা ছাড়া কারা কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করবে না। সে ইচ্ছা থাকলে তারা অনেক আগেই কারাবন্দীদের মুঠোফোন ব্যবহার কঠোরহস্তে দমন করত। তাই মুঠোফোন সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাপারটি নিয়ে গভীর চিন্তা করবে বলে আশা করাই যায়।