মামলার ভয়ে কবিতা উধাও

কবিতা লিখি না কেন, আমাকে শুধাও?

মামলার ভয়ে আজ কবিতা উধাও।
কবিতার ভাব আসে মাঝরাত্তিরে
পুরোনো দিনের স্মৃতি আসে ধীরে ধীরে।
কত প্রেম কত স্মৃতি দেয় দোলা মনে
ভালোবাসা বিলিয়েছি আমি জনে জনে।
সেই প্রেম স্মৃতি নিয়ে ভাব মনে আসে
কাগজকলম নিয়ে জানালার পাশে
গিয়ে বসি, কবিতার ছন্দ ও মিল
মাথার ভেতরে শুধু করে কিলবিল।
কলমের ক্যাপ খুলি, লেখা করি শুরু
হঠাৎ বুকের মাঝে ভয় দুরু দুরু।
কবিতা আমার হায় মেলে না তো ডানা
চোখে ভাসে কয়েদির ড্রেস, জেলখানা।

নাচের পুতুল হয়ে আমি বেঁচে আছি
যেমনে নাচায় আমি তেমনেই নাচি।

পাঁচ জানুয়ারি হয় তামাশার ভোট
সাংসদ হয়ে গেছি বুকে লাগে চোট।
আমার শিষ্য কেউ সাংসদ হয়
মন থেকে যায় না তো তবু কেন ভয়?

শপথ নেওয়ার দিনে সংসদে যাই
কী যে ব্যথা কী যে ব্যথা শুধু মনে পাই।
রওশন আগে বসে তাঁর পিছে আমি
বুঝে গেছি এই আমি হতভাগা স্বামী।

প্রধানমন্ত্রী দয়া করে আমাকেই
বানাল বিশেষ দূত মনে ব্যথা নেই।

এরপর কী যে হলো মামলার ঝাঁপি
খোলে শুধু একে একে আমি যেন পাপী।
মাথা থেকে মামলার নামছে না বোঝা
কে দেবেন ঝাড়ফুঁক, কই পাই ওঝা?
আবেগ হারিয়ে গেছে, কাঠগড়া ডাকে
‘কনক প্রদীপ জ্বালো’ স্মৃতিঘরে থাকে।

এ জীবনে ভুল ছিল রাজনীতি করা
একদা রাষ্ট্রপতি, আজ আমি ধরা।
মনের জমানো কথা মরে কেঁদে কেঁদে
কুয়ায় ফেলেছে যেন দুহাত-পা বেঁধে।
সাঁতার জানার পরও খাই পচা পানি
প্রধান বিরোধী নেতা রওশন, ‘রানি-
আমাকে বাঁচাও আজ তোলো কুয়া থেকে
কবিতা লিখতে চাই তোমাকেই দেখে।
বাকিটা জীবন আমি কবিতার মাঝে-
কাটাব তোমায় নিয়ে,’ বুকে তবু বাজে-
মামলার ঘণ্টাটা, দয়া করে থামা
নিজেই দিলাম লিখে এরশাদনামা।

আঁকা: জুনায়েদ আজীম চৌধুরী
আঁকা: জুনায়েদ আজীম চৌধুরী