ক্যাডেট রস

সিলেট ক্যাডেটের একজন সিলেটী স্যারের গল্প। স্যার খুব ভাব নিয়ে বলতে শুরু করলেন, ‘মজার বিষয় কী দেখো, H O R S E অর্থ গুড়া T U R N টার্ন অর্থ গুড়া, P O W D E R অর্থও গুঁড়া...!’এক ছাত্র প্রশ্ন করে বসল, ‘স্যার, হর্স-ও গুড়া, টার্ন-ও গুড়া, পাউডার-ও গুড়া, বিষয়টা বুঝলাম না।’স্যার বললেন, ‘এইটা বুঝলি না? আরে অর্স ইতা দৌড়াইন্যা গুড়া, টার্ন ইতা গুরোইন্যা গুড়া, পাউডার ইতা গুঁড়া গুঁড়া।’সহজে ছুটিছাঁটা দিতে না চাইলেও আপনজনদের কেউ মারা গেলে ক্যাডেটদের ছুটি দেওয়া হয়। এক ক্যাডেটের দাদা এসেছেন তাকে তিন ঘণ্টার জন্য ছুটিতে নিয়ে যেতে। অফিসে ঢুকে তিনি প্রিন্সিপালকে বললেন, ‘কাল সকালে আমি দেশের বাইরে চলে যাব, আমার নাতিকে যদি আজ বিকেলটা ছুটি দিতেন, তাহলে খুব ভালো হতো। একসঙ্গে কিছুক্ষণ থাকা হতো।’প্রিন্সিপাল ওই ক্যাডেটের কাগজপত্র ঘেঁটে বললেন, ‘দুঃখিত, এত ঘন ঘন ছুটি দেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। ও তো আপনাকে কবর দিতে গত মাসেও একবার ছুটি নিল।’আমরা তখন জুনিয়র ক্যাডেট। একদিন হাউস মাস্টার আমাদের এক বন্ধু ক্যাডেটকে ডেকে পাঠালেন, ‘তোমার রুম লিডার সিনিয়র ক্যাডেটের কাছে শুনলাম, তুমি নাকি গতকাল ঘুমের মধ্যে তাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করছিলে, আর অভিশাপ দিচ্ছিলে? এ কথা কি সত্য?’সে মহাসেনগতিতে জবাব দিল, ‘না স্যার, পুরোপুরি সত্য না।’স্যার বললেন, ‘যাও, এ বিষয়ে তোমার বক্তব্য লিখিতভাবে জমা দাও, আমরা তদন্ত করে দেখব।’ও হাউস মাস্টারের অফিসে এটা বলে এসেছে শুনে আমি বললাম, ‘দোস্ত, এটা পুরোপুরি সত্য না হলে কতটুকু সত্য?’ও বলল, ‘কাউকে বলিস না, আমি ঘুমাচ্ছিলাম, এটা মিথ্যা!’ক্যাডেটরা পিটি, প্যারেড, খেলা—এ রকম এক্সট্রা কারিকুলার নিয়ে এত ব্যস্ত থাকে বলেই কিনা কে জানে পরীক্ষা এলেই তারা বুঝতে পারে, দিন আর রাতের মধ্যে কত পার্থক্য! ভাবছেন সেটা কীভাবে? ক্যাডেটরা সকালে ঘুম থেকে উঠে পিটি প্যারেড করতে করতে ভাবে, যে করেই হোক ৮০ শতাংশ নম্বর পেতেই হবে। আর রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ভাবে, ও খোদা, কোনোমতে পাস করলেই হয়!ম্যাডামের ক্লাসে ঘুমাতে গিয়ে ধরা পড়ল এক বন্ধু। ম্যাডাম বললেন, ‘এই ছেলে, তুমি ক্লাসে ঘুমাচ্ছ কেন?’ও ঘুম থেকে উঠে চোখ মুছতে মুছতে বলতে শুরু করল, ‘ম্যাডাম, আপনার কণ্ঠ এত সুইট...শুনতে শুনতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি, টেরই পাইনি...!’ম্যাডাম বললেন, ‘তাহলে অন্য ক্যাডেটরা কেন ঘুমাচ্ছে না?’‘কারণ, ওরা আমার মতো আপনার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনছে না! তাই ঘুমাচ্ছে না...!’সবাই শব্দ করে হেসে উঠল। ম্যাডাম হাসাহাসির জন্য সবার নামে অভিযোগ করে শাস্তির ব্যবস্থা করলেন। বেঁচে গেল কেবল আমাদের ওই বন্ধুটি। ও তো আর হাসেনি!এক ক্যাডেটের বিশেষ শাস্তি হয়েছে এই অপরাধে যে সে পাক্ষিক পরীক্ষার খাতায় ইচ্ছা করে ফাজলামি করেছে।ওকে ডেকে আমরা জিজ্ঞেস করলাম, ‘এই ছেলে, তুমি পরীক্ষার খাতায় কী লিখেছিলে?’ও বলল, ‘ভাইয়া, ঠিকমতো পড়া হয়নি। তাই বানিয়ে বানিয়ে উত্তর লিখে খাতা ভরে দিয়েছি।’আমরা বললাম, ‘সেটা তো অনেকেই করে।’তা করে কিন্তু আমি আবার খাতার নিচে লিখে দিয়েছিলাম, বি. দ্র.: উত্তরপত্রে লেখা সব প্রশ্নের উত্তর কাল্পনিক, যার সঙ্গে বইয়ের কোনো মিল নেই।