পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস, সুপারিশ পর্যালোচনার এখনই সময়

প্রচ্ছদ: সাদাত
প্রচ্ছদ: সাদাত

বাংলার মানুষ উপকারের কদর বোঝে না। ভেজাল তরমুজেরও দাম আছে। কিন্তু যারা মানুষের উপকার করে, সমাজে তাদের কোনো দামই নেই। প্রশ্নপত্র ফাঁসের ব্যাপারটাই ধরুন। দেশের আপামর শিক্ষার্থীদের উপকার করার জন্যই কিন্তু ফাঁস করা হয়েছিল এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন। কী মহৎ একটা উদ্যোগ! উন্নত অনেক দেশেই কিন্তু ওপেন বুক পরীক্ষা-পদ্ধতির প্রচলন আছে। আগে থেকে প্রশ্ন বলে দেওয়া—অনেকটা সে রকমই। এমনিতে শিক্ষার্থীদের অনেকগুলো প্রশ্নের উত্তর পড়তে হয়। কিন্তু সব প্রশ্ন তো পরীক্ষায় আসে না। যেটা আসবে না, সেটা পড়ে লাভ কী? সময় নষ্ট। তা ছাড়া পাঠ্যবইয়ে সময়ের মর্যাদা সম্পর্কে বড় বড় কথা লেখা আছে। এ জন্য যে প্রশ্নগুলো পরীক্ষায় আসবে, সেগুলো আগেই শিক্ষার্থীদের কাছে ফাঁস করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা মনোযোগ দিয়ে সেই প্রশ্নগুলোর উত্তর রপ্ত করে ছিনিয়ে এনেছে কাঙ্ক্ষিত ফরমালিনমুক্ত ফল। সময়ও বাঁচল, পরিশ্রমও হলো কম।

.
.

কিন্তু মানুষ অন্যের সুখ সহ্য করতে পারে না। শিক্ষার্থীদের এই সুখ মানতে পারল না কেউ। এখন সারা দেশে প্রশ্ন ফাঁসের বিপক্ষে গড়ে উঠেছে জনমত। প্রশ্ন ফাঁস কীভাবে রোধ করা যায়, তা নিয়ে চলছে নানা পরিকল্পনা, সুপারিশ, যার কোনো দরকারই ছিল না। কিন্তু দেশের অধিকাংশ মানুষ যেহেতু প্রশ্ন ফাঁসের বিপক্ষে। সুতরাং, গণতান্ত্রিক ধারা বজায় রাখার স্বার্থে প্রশ্ন ফাঁস রোধে প্রস্তাব না দিলেই নয়। অনেক প্রস্তাব নিয়েই চিন্তা করা হচ্ছে, কিন্তু অত্যন্ত সহজ একটা বিষয় কেউ ভাবছে না, তা হলো প্রশ্ন ছাড়া পরীক্ষাব্যবস্থা। পরীক্ষায় কোনো প্রশ্নই থাকবে না। শিক্ষার্থীরা বই পড়ে কী শিখল, তা নিজেরাই খাতায় লিখবে। প্রশ্ন না থাকলে ফাঁস হওয়ার কোনো আশঙ্কাও থাকবে না। আর পরীক্ষায় কী প্রশ্ন আসবে, এ নিয়ে থাকবে না কোনো ভয়। শিক্ষার্থীরা মহা উৎসাহে পরীক্ষা দেবে। আশা করি, কর্তৃপক্ষ ব্যাপারটি নিয়ে পর্যালোচনা করবে।