ফুটবল বিশ্বকাপের পূর্বপ্রস্তুতি

আর কিছুদিন পর শুরু হতে যাচ্ছে ফুটবল বিশ্বকাপ। প্রস্তুতি নিচ্ছে ফুটবল বিশ্বের ৩২টি দল। আর তাই প্রস্তুতি নেওয়ার সময় এসেছে আমাদেরও।

আঁকা: শিখা
আঁকা: শিখা

পতাকা-প্রস্তুতি
ভুল করে অপরিচিত কোনো এলাকার গলির মধ্যে ঢুকে গেলে চমকে যেতে পারেন। মনে হতে পারে অন্য কোনো দেশে চলে এসেছেন। কারণ, দেশের অধিকাংশ বাড়ির ছাদে সগৌরবে উড়তে শুরু করেছে নানা রঙের ভিনদেশি পতাকা! অনেক খোঁজাখুঁজি করেও বাংলাদেশের পতাকা পাবেন না। তাই নিজেকে বোঝান, আপনি এক মাসের জন্য বিশ্বনাগরিক। তবে নিজেকে বিশ্ববাসী ভেবে পাসপোর্ট, ভিসার তোয়াক্কা না করে ভিনদেশে পাড়ি জমাতে যাবেন না!

আঁকা: শিখা
আঁকা: শিখা

রাত জাগা-প্রস্তুতি
এবার ফুটবল বিশ্বকাপের প্রায় সব খেলাই অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ সময়ে গভীর রাতে। তাই অফিসে নাইট ডিউটি নিতে পারেন ঘন ঘন (নৈশপ্রহরী বাদে)। এ ছাড়া বাসায় ছোট বাচ্চাকাচ্চা থাকলেও অভ্যাস গড়ে উঠবে। এলাকার বিদ্যুৎ অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করে রাতে লোডশেডিংয়ের ব্যবস্থাও করতে পারেন, তাহলে গরমের চোটে আর ঘুমই আসবে না। তবে বিশ্বকাপ শুরু হলে ওই লোডশেডিংয়ের কারণেই বিদ্যুৎ-অফিস ঘেরাও এবং ভাঙচুরের ঘটনার জন্যও মানসিক প্রস্তুতি রাখতে হবে।

আঁকা: শিখা
আঁকা: শিখা

চিৎকার-প্রস্তুতি
খেলা দেখবেন অথচ চিৎকার দেবেন না, তা হবে না তা হবে না! অন্তত গোল কিংবা ফাউল হলে তো চিৎকার করতেই হবে। তাই রাজনীতিকদের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করে জনসভায় বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ মেলে কি না দেখতে পারেন। তা না হলে পাড়া-মহল্লায় লেপ-তোশক, ঝাড়ু, শাকসবজি কিংবা মুরগি বিক্রেতাদের শরণাপন্নও হতে পারেন। আর ঘরে বসে অনুশীলন করতে চাইলে স্ত্রী বা স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করুন উচ্চ স্বরে। তরুণেরা ঝগড়া করতে পারেন গার্লফ্রেন্ড বা বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে। যাঁদের কেউ নেই, তাঁরা ঝগড়া করতে পারেন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে।

হূৎপিণ্ড-প্রস্তুতি
প্রিয় দল হেরে গেলে হূৎপিণ্ডের ওপর চাপ পড়তেই পারে। এখনই সময় হূৎপিণ্ডের যত্ন নেওয়ার। তবে ‘প্রিয় দল হেরে যাওয়ায় তরুণের আত্মহত্যা’ টাইপের খবরও দেখা যাবে এ মৌসুমে। সে ক্ষেত্রে ‘খেলার জন্য আত্মহত্যা নয়’ এমন কোনো আন্দোলনও গড়ে তুলতে পারেন।

আঁকা: শিখা
আঁকা: শিখা

ফেসবুক-প্রস্তুতি
ফেসবুকে এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে উন্মাদনা। মাঠে না পারলেও ফেসবুকে আমরা ভালোই ফুটবল খেলছি! ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার সাপোর্টাররা একে অপরের দিকে ছুড়ে দিচ্ছে কথার তির। মাঝে মাঝে জেগে উঠছে স্পেন, জার্মানি কিংবা ইংল্যান্ডের সাপোর্টাররাও। অসম্ভবকে সম্ভব করার আশায় কেউ হয়তো সাপোর্ট করছে ঘানাকেও। এ যেন আরেক বিশ্বযুদ্ধ। তাই ঘাবড়াবেন না, এগুলো হজম করার জন্য তৈরি থাকুন। হজম করতে না পারলে দেড় মাসের জন্য ফেসবুক ব্যবহারই বন্ধ করে দিন।
মানিব্যাগ-প্রস্তুতি
প্রিয় দলের জন্য পতাকা কেনা বা জার্সি বানানোর জন্য চাঁদা দেওয়া অবধারিত। এ ছাড়া প্রিয় দল জিতে গেলে প্রীতিভোজের ব্যাপার তো রয়েছেই! এই দুর্মূল্যের বাজারে আপনার ওপর স্বাভাবিকভাবেই পড়তে যাচ্ছে অতিরিক্ত অর্থনৈতিক চাপ। তাই মানিব্যাগের স্বাস্থ্য উন্নয়নে এখন থেকেই নিতে থাকুন সঠিক পদক্ষেপ।