ঐক্য এনে অসম্ভবকে সম্ভব করার এখনই সময়

ভাদ্র মাস এলেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে গরম ও তালের প্রসঙ্গ চলে আসে। আসারই কথা। একমাত্র ভাদ্র মাসের তীব্র গরমে হাতের কোনো স্পর্শ ছাড়াই তাল পেকে যায়। সেই তাল দিয়ে বানানো হয় মজাদার পিঠা। আহা! কী চমৎকার ব্যাপার! কিন্তু এবার গাছের তালের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আগমনী বার্তা শোনাচ্ছে আরও এক তাল। সেটা হলো জনগণের বন্ধু, দেশের জন্য দারুণ উপকারী, অর্থনীতির চাকা সচল রাখার অন্যতম উপাদান, তথা আমাদের সবার প্রিয় হরতাল! বিরোধী দল এরই মধ্যে হরতাল আহ্বানের ইঙ্গিত দিয়ে দিয়েছে। সাধারণত বিরোধী দল দুটো জিনিস দেয়—হরতালের পূর্বাভাস ও হরতাল। অতএব, আমরা ধরেই নিচ্ছি হরতাল হবে। হরতালে ঘরে বসে তালের পিঠাও খাওয়া যাবে। দারুণ! কিন্তু আমরা যতই ঘরে বসে তালের পিঠা খাই, রাজনীতিকদের মাথা কিন্তু ভাদ্র মাসের আবহাওয়ার মতোই গরম। কারণ, সামনে নির্বাচন। এক দল বলছে, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন? এ তো অসম্ভব!’ আরেক দল বলছে, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন? এ তো অসম্ভব!’ আর দুই দলের মাঝখানে বসে যাঁরা মধ্যস্থতা করতে চাইছেন, তাঁরা বলছেন, ‘এ দুই দলকে ঐকমত্যে আনা? এ তো অসম্ভব!’ মানে একেবারে অসম্ভবের ছড়াছড়ি। তার পরও অনেকেই বলেন, বাংলাদেশ নাকি সব ‘সম্ভবের দেশ’। কোনো মানে হয়?

তবে ইদানীং আমরা যখন বিজ্ঞাপনে দেখছি, ‘সুপারস্টার’ অনন্ত জলিল বলছেন, ‘অসম্ভবকে সম্ভব করাই অনন্তর কাজ’, তখন আমরা সত্যিই আশাবাদী না হয়ে পারছি না। আসলেই তো, অনন্ত অনেক অসম্ভবকেই সম্ভব করেছেন। তিনি বাংলা চলচ্চিত্রে স্পেশাল ইফেক্ট, থ্রিডি অ্যানিমেশনসহ নানা ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করে দর্শকদের আবার হলমুখী করেছেন, তিনি ২৩ তলা থেকে স্টান্ট ছাড়াই লাফ দিয়েছেন, এক টান দিয়ে হূদয় বের করে নায়িকাকে দেখিয়েছেন নিঃস্বার্থ ভালোবাসা কাকে বলে। তাঁর মুখেই এই সংলাপ শোভা পায়। তা ছাড়া বিজ্ঞাপন, সিনেমা—এসব তো আমাদের বাস্তব জীবনকেই তুলে ধরে। অনন্ত অসম্ভবকে সম্ভব করেন ক্যামেরার সামনে। কিন্তু দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে, এই ঘোর অমানিশার অন্ধকারে অনন্তর মতো কাউকেই আমাদের আজ খুব বেশি প্রয়োজন, যিনি দুই দলকে ঐকমত্যে এনে অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারবেন।