বিদায় নিয়েছেন অনেক মন্ত্রী

প্রচ্ছদ: জুনায়েদ আজীম চৌধুরী
প্রচ্ছদ: জুনায়েদ আজীম চৌধুরী

ক্রিকেট থেকে বিদায় নিয়েছেন শচীন টেন্ডুলকার। তাঁর বিদায় উপলক্ষে আমাদের মিডিয়া হয়ে উঠেছিল শচীনময়। চমৎকার ব্যাপার। কিন্তু নিজ দেশের এত এত মন্ত্রী যে বিদায় নিলেন, তা নিয়ে চ্যানেলগুলোর কোনো মাথাব্যথাই নেই! কোনো
মানে হয়?
আরে ভাই, শচীন যেমন অসংখ্য রেকর্ড করেছেন, অতগুলো না হলেও আমাদের মন্ত্রীদের করা রেকর্ডও কিন্তু কম নয়। পার্থক্য হলো, শচীন করেছেন রানের রেকর্ড আর আমাদের মন্ত্রীদের রেকর্ড কথা বলার। মিডিয়ার সামনে, জনসভায়, সংসদে মন্ত্রীরা অনেক কথা বলেছেন। করেছেন রেকর্ডসংখ্যক কাজ! স্তম্ভ নাড়িয়ে ভবন ধসিয়ে দেওয়া কিংবা ঘরে তালা দিয়ে যাওয়ার মতো ঐতিহাসিক তত্ত্ব দিয়েছিলেন আমাদের মন্ত্রীরা। আজ সেই মন্ত্রীদের অনেকেই আমাদের মাঝে নেই, মানে মন্ত্রণালয়ে নেই। তাঁদের স্থানে এসেছেন নতুন মন্ত্রী। প্রায়ই তাঁদের মুখ মিডিয়ায় আসছে। কিন্তু এই মিডিয়া ভুলে গেছে পুরোনো মন্ত্রীদের, যা খুবই হতাশাজনক। দীর্ঘ পাঁচটি বছর নিরলসভাবে দেশের জন্য কাজ করে গেছেন এই মন্ত্রীরা। মন্ত্রী থাকা অবস্থায় প্রতিদিনই কোনো না-কোনো ব্যাপারে পত্রিকা বা টিভির খবর হয়েছিলেন তাঁরা। কত কিছু উদ্বোধন, ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতেন! এমনকি বেড়াতে গেলেও পেয়েছেন মিডিয়া কভারেজ। অথচ মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পরই মিডিয়া যেন ভুলেই গেছে তাঁদের। প্রতিদিন মিডিয়ার সামনে বক্তব্য দিতেন যে মন্ত্রী, তাঁর সামনে এখন কোনো মিডিয়াই নেই।

দীর্ঘদিনের রুটিন এত দ্রুত কি বদলে ফেলা যায়? সাবেক মন্ত্রীদের একটু মন খারাপ তো হতেই পারে। কর্তৃপক্ষও এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তাঁদের মন খারাপ দূর করার জন্য মিডিয়াকেই এগিয়ে আসতে হবে। আগের মতো প্রতিদিনই সাবেক মন্ত্রীদের সামনে ক্যামেরা-মাইক নিয়ে উপস্থিত হয়ে এমন একটা ভাব করতে হবে, যেন তাঁরা এখনো মন্ত্রী, সংবাদ সম্মেলন হচ্ছে। পরে টিভিতে না দেখালেই তো হলো। সাবেক মন্ত্রীদের কথা বলার অভ্যাসটা অটুট থাকল। ভাগ্য ভালো হলে নতুন নতুন তত্ত্বও পাওয়া যেতে পারে। আশা করি, কর্তৃপক্ষ ব্যাপারটা নিয়ে ভাববে।