তোমার মৃত্যুর কথা মনে হলে

তোমার মৃত্যুর কথা মনে হলে
তোমার জন্মের কাছে ঋণী হয়ে যাই।

আমি এক ব্যথিত কুমার
তোমার মৃত্যুর নামে আজীবন বেদনাতাপিত থাকি
অন্তঃস্থ হৃদয়জুড়ে নেমে আসে লাল লাল স্রোত
রক্তক্ষরণের মতো তীব্র এক বিক্ষুব্ধ ধারায়
সে বেদনা কান্না হয়
সমুদ্রস্রোতের মতো জলোচ্ছ্বাস নেমে আসে
পাহাড়–পাথর ভেঙে শিরা–মাংস সব এলাকায়
আমার শরীরজুড়ে লেগে থাকে
সবটুকু লবণাক্ত বেদনার ভাগ।
আমি সেই বেদনায় হাত রেখে কাঁদি
জল চোখে একজন ব্যথিত তরুণ হয়ে
তোমার জন্মের কাছে ঋণী হয়ে যাই
আজীবন শ্রদ্ধাভরে নতজানু থেকে
প্রিয় সেই জন্মকে লালন করি ভেতরে ভেতরে।

 তোমার জন্মের কথা মনে হলে
তোমার মৃত্যুকে আমি কোথাও দেখি না।
মৃত্যুর সমস্ত স্মৃতি তুচ্ছ হয়, ঘূর্ণিপাকে উড়ে যায়
শহরের বৃক্ষহীন নির্বীর্য সড়ক থেকে
স্বদেশের গ্রাম–গঞ্জ, সবকটি লোকালয় থেকে
মুহূর্তে পালায় মৃত্যু, জন্ম এসে টোকা দেয় চেতনার সকল কপাটে
পরিচিত কণ্ঠ এসে গৃহমালিকের মতো ছিন্ন করে
আবেষ্টিত কোষের জড়তা
তোমার মৃত্যুকে তাই কোথাও দেখি না। 

তোমার মৃত্যুর কথা মনে হলে
তোমার জন্মের কথা মনে হয়ে যায়
তোমার মৃত্যুকে তাই তুচ্ছ করি, ছুড়ে ফেলি
তোমার মৃত্যুকে তাই ভুলে যাই, কোথাও দেখি না।