বিজয়ীর বেশে প্রত্যাবর্তন

নেতা ফিরেছেন স্বাধীন স্বদেশের মাটিতে। তঁাকে ঘিরে জনতার জয়োল্লাস, ১০ জানুয়াির ১৯৭২। ছবি: সংগৃহীত
নেতা ফিরেছেন স্বাধীন স্বদেশের মাটিতে। তঁাকে ঘিরে জনতার জয়োল্লাস, ১০ জানুয়াির ১৯৭২। ছবি: সংগৃহীত
>বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের আবেগমথিত বর্ণনা রয়েছে বাংলাদেশের প্রথম পররাষ্ট্র সচিব এস এ করিমের ইউপিএল থেকে প্রকাশিত শেখ মুজিব: ট্রায়াম্ফ অ্যান্ড ট্র্যাজেডি (২০০৫) বইয়ের একটি অধ্যায়ে। অধ্যায়টি অনুবাদ করেছেন আসজাদুল কিবরিয়া

কোনো আগাম বার্তা ছাড়াই শেখ মুজিবের লন্ডনে পৌঁছানোটা ভুট্টো এমনভাবে পরিকল্পনা করেছিলেন, যেন আগে থেকেই বড় রকমের কোনো প্রচারণা না হয় এবং মুজিব যেন কোনো উষ্ণ নয়, বরং নীরব অভ্যর্থনা পান।

সাধারণত সপ্তাহান্তের দিনগুলোয় তেমন কোনো অনুষ্ঠানমালা থাকে না। আর তাই লন্ডনের পররাষ্ট্র দপ্তরে দায়িত্বরত কর্মকর্তা ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি (শনিবার) ভোর ৫টা ২০ মিনিটে একটি জরুরি বার্তা পেয়ে একপ্রকার চমকে ওঠেন। বার্তাটি ছিল এ রকম যে শেখ মুজিবুর রহমানকে বহনকারী অনির্ধারিত একটি পিআইএর (পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনস) বিমান ঘণ্টাখানেকের মধ্যে হিথরো বিমানবন্দরে অবতরণ করতে যাচ্ছে। মুজিবের নাম তত দিনে সর্বজনবিদিত। দায়িত্বরত কর্মকর্তা টিও সুপ্রশিক্ষিত। তিনি জানেন যে তাঁকে কী করতে হবে। তিনি পররাষ্ট্র দপ্তরে দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের প্রধান ইয়ান সাদারল্যান্ডকে টেলিফোন করে খবরটি জানালেন, বিমানবন্দরে একটি ভিআইপি কক্ষ ঠিক করলেন এবং বিমানবন্দর থেকে মুজিব ও তাঁর সঙ্গীদের হোটেলে আনার জন্য একটি লিমুজিন গাড়ির ব্যবস্থা করলেন।

সময়স্বল্পতার কারণে সাদারল্যান্ড বিমানবন্দরে পৌঁছে মুজিবকে অভ্যর্থনা জানাতে পারলেন না। তার আগেই মুজিব বিমান থেকে অবতরণ করেন। ভিআইপি কক্ষে মুজিবকে দেখাশোনার জন্য কেবল বিমানবন্দরের কয়েকজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে মুজিবের প্রথম অনুরোধ ছিল লন্ডনে তাঁর পরিচিত কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ার। তাঁরা প্রায় সবাই বাঙালি ও রেস্তোরাঁর মালিক। তিনি যখন আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় সেনা হেফাজতে, তখন তাঁর পক্ষে ওই ব্যক্তিরা জনমত গঠনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিলেন। তবে ছুটির দিনে অত সকালবেলা বাঙালিদের রেস্তোরাঁ সব বন্ধ। তাই তিনি আর তাঁদের কারও সঙ্গে কথা বলতে পারলেন না। পররাষ্ট্র দপ্তর অবশ্য চিন্তাভাবনা করেই ভিআইপি কক্ষকে বিলেতে অনানুষ্ঠানিক বাংলাদেশ মিশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান রেজাউল করিমের টেলিফোন নম্বর জানিয়ে দেয়। এই অনানুষ্ঠানিক মিশনটি কিছুদিন আগে পাকিস্তান হাই কমিশন থেকে যেসব বাঙালি কর্মকর্তা সম্পর্ক ছিন্ন করে এসেছিলেন, তাঁদের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছিল। বিবিসি ততক্ষণে লন্ডনে শেখ মুজিবের আগমনের খবরটি প্রচার করে দিয়েছে। তবে আরও অনেকের মতো রেজাউল করিমও তখন ঘুমিয়ে ছিলেন। টেলিফোন বেজে ওঠার পর তা তুলে কানে দেওয়ার পর অপর প্রান্ত থেকে ভেসে আসা পরিচিত কণ্ঠ, ‘রেজাউল করিম, দিস ইজ শেখ মুজিব।’ শুনে তিনি নিজের কানকে প্রথমে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না।

দ্রুত পোশাক পাল্টে নিজের ফোর্ড করটিনা গাড়ি হাঁকিয়ে তিনি ছুটে গেলেন বিমানবন্দরে। এর অল্প পরেই ভিআইপি কক্ষে এলেন সাদারল্যান্ড। তাঁরা জানতে চাইলেন, থাকার বিষয়ে মুজিবের কোনো নিজস্ব পছন্দ আছে কি না। জবাবে তিনি জানালেন, এর আগে লন্ডনে এসে তিনি রাসেল স্কয়ারে যে হোটেলে উঠেছিলেন, সেটাতে যেতে চান। হোটেলটি ছিল সস্তা দরের, যেখানে সাধারণত ছাত্ররা ওঠে। তবে খানিক আলাপ-আলোচনার পর তাঁরা বনেদি ক্ল্যারিজ’স হোটেলে ওঠার পরামর্শ দিলেন। এ কথা শুনে মুজিব বিস্মিত হয়ে বললেন, ‘এটা তো অনেক টাকার ব্যাপার! এত টাকা তুমি কোথায় পাবে?’ তাঁকে বলা হলো, লন্ডনের যে গুটিকয় হোটেল রাষ্ট্রপ্রধানদের থাকার উপযোগী, ক্ল্যারিজ’স তার অন্যতম। এরপর তিনি এতে উঠতে সম্মত হলেন। সাদারল্যান্ড তাঁর জন্য দ্রুত হোটেলে একটি স্যুট ভাড়া করলেন।

মুজিব গত ৯ মাসের খবরাখবর জানার জন্য উদ্গ্রীব হয়ে ছিলেন। শুধু রাওয়ালপিন্ডিতে শেষ কয়েকটা দিন তিনি পাকিস্তানি সংবাদপত্র পেয়েছিলেন। তাই তিনি রেজাউল করিমকে তাঁর সঙ্গে করে গাড়িতে যেতে বললেন। কিন্তু বিমানবন্দরে গাড়ি ফেলে গেলে তা তুলে নিয়ে যাওয়া হতে পারে। রেজাউল করিমের এই আশঙ্কার বিষয়টি বুঝতে পেরে মুজিব তাঁর ছোট গাড়িতে করে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। ড. কামাল হোসেন ও তাঁর পরিবারকে দেওয়া হলো বড় লিমুজিন গাড়ি। পথে রেজাউল করিমের কাছ থেকে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন বিভিন্ন ঘটনা শোনার সময় মাঝেমধ্যেই মুজিব সবিস্ময়ে বলছিলেন, ‘আমরা সত্যিই স্বাধীন হয়েছি!’ তিনি যেন এই বাস্তবতা ঠিক উপলব্ধি করে উঠতে পারছিলেন না।

তাঁরা ক্ল্যারিজ’স হোটেলে পৌঁছানোর পর দর্শনার্থীর স্রোত দেখা দেয়। সেখানে ছিলেন গণমাধ্যমের লোকজন, বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এবং অবশ্যই শত শত বাঙালি। প্রথম দিকের দর্শনার্থীদের মধ্যে ছিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত পাকিস্তানি সাংবাদিক অ্যান্থনি ম্যাসকারেনহাস। তিনি সানডে টাইমস–এ পূর্ব বাংলায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নৃশংসতার ঘটনা তুলে ধরে বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তৈরি করেছিলেন। ব্যক্তিগতভাবে তিনি মুজিবকে চিনতেন এবং তাঁর সঙ্গে ১৯৫৮ সালের গ্রীষ্মকালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামে ম্যাসকারেনহাস যে মূল্যবান সমর্থন-সহযোগিতা দিয়েছিলেন, তার জন্য মুজিব তাঁকে কিছু একটা উপহার দিতে চাইছিলেন। তাই তিনি তাঁকে অনেকটা সন্তর্পণে বললেন, ‘তোমার জন্য একটা বিরাট খবর আছে। আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে কিছু একটা যোগসূত্র রাখতে যাচ্ছি, কিন্তু আমি অন্যদের সঙ্গে আলাপ না করে তোমাকে এর বেশি কিছু বলতে পারব না। খোদার কসম, আমি কিছু না বলা পর্যন্ত তুমি এ নিয়ে ভুলেও কিছু লিখবে না।’ ম্যাসকারেনহাস মুজিবকে বলার চেষ্টা করলেন যে পূর্ব পাকিস্তানে যা হয়েছে, তারপর এ রকম কিছু ভাবা একেবারে অসম্ভব চিন্তা। কিন্তু লন্ডনে ভারতীয় হাইকমিশনার বি কে নেহরু এ সময় এসে উপস্থিত হন এবং মুজিবের সঙ্গে একান্তে কথা বলতে চান। এরপর মুজিব টেলিফোনে নয়াদিল্লিতে মিসেস গান্ধীর সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ আলাপ করেন।

এটা বলা কঠিন যে পাকিস্তানের সঙ্গে ‘যোগসূত্র’ বজায় রাখার প্রশ্নে মুজিবের চিন্তায় যে পরিবর্তন ঘটে, তার জন্য ভারতীয়রা প্রাথমিক ভূমিকা রেখেছিল কি না। সেটা যা–ই হোক, ক্ল্যারিজ’স হোটেলের গ্র্যান্ড বলরুমে জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ–সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে তাঁর উত্তরটা ছিল কোনো রকম প্রতিশ্রুতির বাইরে। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি তাঁকে (ভুট্টোকে) বলেছি যে আমি আমার জনগণের কাছে ফিরে না যাওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে আমি কোনো কথা বলব না।’

লন্ডনে মুজিবের সময়টা ছিল একাধারে ব্যস্ত ও চমৎকার। ২৬ ঘণ্টা অবস্থানকালীন তিনি টেলিফোনে বেগম মুজিব ও পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন, কথা বলেন তাজউদ্দীন আহমদ ও অন্যদের সঙ্গে। লন্ডনে বসবাসরত বাঙালিদের পাঁচটি দলের সঙ্গে তিনি সাক্ষাৎ করেন। ডেভিড ফ্রস্টের মতো কয়েকজন বাছাই করা সাংবাদিকের সঙ্গেও কথা বলেন। সর্বোপরি তিনি গ্রেট ব্রিটেনের বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট রাজনীতিকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হ্যারল্ড উইলসন তাঁর সঙ্গে হোটেলে এসে দেখা করেন। একইভাবে আসেন সাবেক কেবিনেট মন্ত্রী পিটার শোর। প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথ চেকুয়ারসে তাঁর সাপ্তাহিক ছুটি সংক্ষিপ্ত করে ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে প্রধানমন্ত্রীর নির্ধারিত বাসভবনে ফিরে আসেন শেখ মুজিবকে নিজে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য। কমনওয়েলথের সম্ভাব্য একটি সদস্য দেশের নেতা হিসেবে মুজিবের সঙ্গে দেখা করতে আসেন কমনওয়েলথ মহাসচিব আরনল্ড স্মিথ।

প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথ মুজিবকে এটা নিশ্চিত করেন যে বাংলাদেশের প্রতি ব্রিটেনের মনোভাব বন্ধুসুলভ এবং বাংলাদেশের নতুন সরকার গুছিয়ে বসলেই ব্রিটেন আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেবে। তাঁকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে উড়াল দেওয়ার জন্য রাজকীয় বিমানবহরের (রয়্যাল এয়ারফোর্স) একটি জেটও ইতিমধ্যে ঠিক করা হয়।

১৯৭২ সালের ৯ জানুয়ারি প্রভাতে মুজিবকে নিয়ে বিমানটি ঢাকার উদ্দেশে আকাশে উড়াল দেয়। পথিমধ্যে তেল নেওয়ার জন্য সাইপ্রাসে স্বল্পতম সময়ের জন্য প্রথমে যাত্রাবিরতি করে। এরপর আবার নয়াদিল্লিতে কয়েক ঘণ্টার জন্য যাত্রাবিরতি করা হয়, যেন শেখ মুজিব তাঁর ‘জনগণের সবচেয়ে ভালো বন্ধুদের ব্যক্তিগতভাবে কৃতজ্ঞতা জানাতে’ পারেন। সেখানে হাজার হাজার মানুষ সারিবদ্ধভাবে রাষ্ট্রপতি ভবনের সামনে সমবেত হন তাঁকে একনজর দেখার জন্য। নিচ দিয়ে উড়ে যাওয়া একটি বিমান থেকে মুজিবের গাড়িবহরে গোলাপ ফুল ছিটানো হয়।

অত্যন্ত আবেগাপ্লুত হয়ে মুজিব এক জনসমাবেশে বক্তৃতা দেন। তিনি ইংরেজিতে শুরু করলেও সমবেত জনতা যখন মাতৃভাষায় বলার জন্য দাবি জানায়, তখন তিনি বাংলায় বক্তৃতা দেন। ‘জয় হিন্দ’ উচ্চারণের মধ্য দিয়ে তিনি বক্তৃতা শেষ করেন। ইন্দিরা গান্ধীও তাৎক্ষণিক স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিশুদ্ধ বাংলায় ‘জয় বাংলা’ ধ্বনি উচ্চারণের মধ্য দিয়ে প্রত্যুত্তর দেন।

ভারতীয়রা চেয়েছিল, মুজিব যেন নয়াদিল্লি থেকে ভারতীয় বিমানে ঢাকায় ফেরেন। মুজিব তাতে সম্মত হননি। তাঁর মতে, ব্রিটিশ সরকারের দেওয়া আরএএফ বিমানকে তার মিশন সম্পন্ন না করে অর্থাৎ তাঁকে ঢাকায় না পৌঁছে দিয়ে লন্ডনে ফিরে যেতে বলাটা হবে অসৌজন্যমূলক।

১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বেলা আড়াইটায় সাদা আরএএফ কমেট ঢাকায় অবতরণ করে। শেখ মুজিবের স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসাকে উদ্​যাপন করতে সেদিন সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল। প্রবল আবেগমথিত যে অভ্যর্থনা তিনি সেদিন জনগণের কাছ থেকে পান, তা ছিল দৃষ্টান্তহীন। একটি উন্মুক্ত ডজ ট্রাকে চেপে (তেজগাঁও) বিমানবন্দর থেকে তিনি রেসকোর্স ময়দানে গিয়ে উপস্থিত হন। সেখানে বিরাট গণসমাবেশে বক্তৃতাকালে তিনি স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন যে বাংলাদেশ পরিচালিত হবে ‘গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা’ দিয়ে, যার মাধ্যমে কোনো মুসলমান রাষ্ট্রের ধারণাকে পরিত্যাগ করা হয়। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে কিছু যোগসূত্র রাখার জন্য ভুট্টোর অনুরোধের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি ফিরে আসার আগে ভুট্টো সাহেব অনুরোধ করেছেন দুই অংশের মধ্যে বাঁধন সামান্য হলেও রাখা যায় কি না। আমি তখন বলেছিলাম, আমি আমার মানুষের কাছে ফিরে না যাওয়া পর্যন্ত কিছু বলতে পারছি না। আজ আমি বলতে চাই—ভুট্টো সাহেব, আপনারা সুখে থাকুন। আপনাদের সাথে আর না।’

জনসমাবেশ ও বিশাল মিছিল শেষে মুজিব ধানমন্ডিতে তাঁর বাড়িতে যান। যে রাতে তিনি আটক হয়েছিলেন, সে রাতে তাঁর ৩২ নম্বরের বাড়ি ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। বাড়িটা মেরামত না হওয়া পর্যন্ত তাঁর পরিবারের সদস্যদের (স্বাধীনতার পর) অন্যত্র ভাড়া থাকতে হয়েছিল। ঘরে ফেরার পর এক অশ্রুসজল পুনর্মিলনী ঘটে। তিনি পরিবারের সদস্যদের বুকে জড়িয়ে ধরেন এবং মা–বাবার পা ছুঁয়ে সালাম করেন। 

চড়া মূল্য না দিয়ে কখনোই ইতিহাসের কোনো গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হয়নি। এটা ছিল এক সুদীর্ঘ সংগ্রাম এবং মুজিব ব্যক্তিগত অত্যন্ত চড়া মূল্য দিয়েছেন তাঁর জনগণের মুক্তির ও স্বাধীনতার জন্য। পাকিস্তান আমলের বড় সময়ই, ১১ বছরের বেশি সময়কাল তিনি কারাগারে ছিলেন। তিনি অল্পের জন্য ফাঁসির দড়ি থেকে রক্ষা পেয়েছেন। অবশেষে তিনি স্বাধীন দেশে ফিরে আসেন। তাঁর সামনে বিরাট চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় যুদ্ধবিধ্বস্ত সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলায় রূপান্তর করা।