শান্তির মহোৎসব বড়দিন

ফাদার প্যাট্রিক গমেজ
ফাদার প্যাট্রিক গমেজ

শুভ বড়দিন। ভয়-নির্ভয় ও অভয়ের বাস্তবতার মাঝে ত্রাণকর্তা যিশুখ্রিষ্টের জন্মোৎসব পালন করছে গোটা পৃথিবীর খ্রিষ্টবিশ্বাসী সমাজের সঙ্গে বাংলাদেশের খ্রিষ্টবিশ্বাসী ভাইবোনেরা। যিশু এই পৃথিবীতে এসেছেন শান্তিরাজ হয়ে, শান্তি দিতে। প্রবক্তার মুখে ভবিষ্যদ্বাণী উচ্চারিত হয়েছিল যে এই যাঁর জন্ম হবে, তাঁর নাম হবে অনন্য মন্ত্রণাদাতা, শান্তিরাজ (ইসাইয়া ৯: ৫)। এ বছর মানুষের সার্বিক শান্তি, সম্প্রীতি, মিলন ও ভ্রাতৃত্ব কামনা করে শান্তিরাজ যিশুর জন্মোৎসব পালন করা হচ্ছে। সবার অন্তরে, সবার জীবনে যেন শান্তি বিরাজ করে, তার জন্য প্রার্থনা করা হচ্ছে এই বড়দিনের বিশেষভাবে উপাসনায়।
যিশুর জন্মের পটভূমি: এই পৃথিবীতে যিশুর আগমন মানবজাতির মুক্তি সাধন। কেননা পাপের ফলে মানুষ তো ঈশ্বরের দেওয়া সুখ নষ্ট করে ফেলেছিল। কিন্তু ঈশ্বরও তো তাঁর সৃষ্ট মানুষকে ভুলে যেতে পারেন না; মুক্তিদাতার আগমনে প্রতিশ্রুতি দিয়ে মুক্তির পরিকল্পনার চূড়ান্ত পর্যায়ে যিশুর দেহধারণের মধ্য দিয়ে তিনি তাঁর দেওয়া মানবমুক্তি প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করলেন। অতএব বলা যায়, যিশুর এই পৃথিবীতে মানুষ হয়ে আসার একমাত্র উদ্দেশ্যই হলো মানুষের সঙ্গে মিলন ও একাত্মতা; মানুষের মাঝে শান্তি-সম্প্রীতি।
পবিত্র বাইবেলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রবক্তারা বলেছেন, যিশুর দ্বারা আনীত এই রাজ্যে ধর্মনিষ্ঠ মানুষ বাস করবে এবং শান্তি যেখানে থাকবে চিরকাল।
শক্তিদাতা যিশু: সময় যখন পূর্ণ হলো তখন পূর্ণ হলো এই প্রতিশ্রুতি। সাধু পলের পত্রে পাই: ‘সময় যখন পূর্ণ হলো, তখন ঈশ্বর এই পৃথিবীতে পাঠালেন তাঁর আপন পুত্রকে; তিনি জন্ম নিলেন নারীগর্ভে... (গালাতীয় ৪: ৪)। যিশুর জন্মের সময় স্বর্গদূত বাহিনী গেয়ে উঠেছিল: জয় ঊর্ধ্বলোকে পরমেশ্বরের জয়! ইহলোকে নামুক শান্তি তাঁর অনুগৃহীত মানবের অন্তরে (লুক ২: ১৪)।’ শান্তিরাজ যিশুর আগমন এই পৃথিবীতে শান্তি দিতে।
যিশুর জন্মের পর প্রকাশ্য জীবনে আমরা দেখি, যেখানে অন্ধ হয়ে মানুষ অশান্তিতে অসহায় অবস্থায় আছে, সেখানেই সুস্থতার দ্বারা সেই ব্যক্তিকে শান্তি দান করা; যেখানে বহু বছর ধরে রোগে-শোকে ভুগছে, অশান্তিতে ভুগছে, সেখানে সুস্থতা দান করা; অনাহারীদের আহার দিয়ে শক্তি সঞ্চার করা। এটা সত্য যে পাপী বলে ঘৃণিত এমন ব্যক্তির অন্তরে শান্তি থাকতে পারে না। যিশু এই মানুষগুলোকে ক্ষমার প্রেমে নিজের কাছে টেনে নিয়েছেন বলেই তিনি হয়েছেন ওদের পরম বন্ধু। স্বর্গে যাওয়ার আগে শিষ্যদের তিনি বলেছিলেন: ‘তোমাদের জন্য শান্তি রেখে যাচ্ছি, তোমাদের দিয়ে যাচ্ছি আমারই শান্তি; অবশ্য এ সংসার যেভাবে শান্তি দেয়, সেই ভাবে আমি তোমাদের তা দিয়ে যাচ্ছি না। তোমরা যদি শান্তিতে বসবাস করো, তবে নিশ্চিত জেনো, তোমাদের সঙ্গে আমি আছি (যোহন ১৪: ২৭)।’
শান্তির মহোৎসব বড়দিন। মানুষ যখন পাপের আঁধারে পথ চলছিল, শান্তিরাজ যিশুর আগমনে তখন তারা দেখতে পেল এক মহান আলো; কেননা তাঁর মধ্যে ছিল জীবন; সেই জীবন ছিল মানুষের আলো (যোহন ১: ৪)। বড়দিনে আমরা স্মরণ করি যিশুর জন্ম; উৎসব করি যিশুর এই জন্মবার্ষিকীতে। তবে এই উৎসবের আহ্বান আলোকিত মানুষ হওয়া, শান্তির সমাজ গড়ে তোলা
যদি পৃথিবীর দিকে তাকাই, দেখি ফ্রান্সের সাম্প্রতিক ঘটনা, যার ফলে হাজারো প্রাণের নিধন; আমাদের দেশেও যে শান্তি, নিরাপত্তা, মানবজীবনের মূল্য, পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ব ভীষণ প্রয়োজন, তা আমরা অনুভব করছি; অনুভব করছে সবাই। প্রশংসনীয় যে ভয়ভীতি বা অশান্তি বা অস্বস্তিকর অবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করে দেশের মানুষকে, বিশেষভাবে খ্রিষ্টান সমাজকে স্বাধীনভাবে নিরাপদে ও বড়দিনের ধর্মীয় উৎসব পালন করার জন্য প্রশাসন সর্বাত্মক সহযোগিতা দান করছে। এই টক-মিষ্টি-ঝাল নিয়ে বর্তমান পরিস্থিতির মাঝেও মানুষ এগিয়ে চলছে, খ্রিষ্টবিশ্বাসীরা বড়দিন উৎসব পালন করছে। নানাবিধ কার্যক্রমের মধ্যে এবারের বড়দিনে একটি বাণী সবার কাছে: সন্ত্রাস নয়, শান্তি-সম্প্রীতি।
সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশ। যুগ যুগ ধরেই এই বাংলাদেশে বিভিন্ন ধর্ম ও কৃষ্টি-সংস্কৃতির মানুষ পারস্পরিক সংলাপ-সম্প্রীতি নিয়ে বসবাস করে আসছে। আন্তধর্মীয়: ধর্মীয় পরিবেশ ও বাস্তবতায় বাংলার হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান একত্রে বসবাস করে আসছে। এই আলোকে সে-ই স্লোগানটিও প্রাসঙ্গিক ও অর্থপূর্ণ: ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। সবাই মিলে শান্তি ও ভ্রাতৃত্ব নিয়ে বড়দিন উৎসব পালন করুক, এটিই কাম্য। আসুন, এই বড়দিনে আমরা শান্তির কৃষ্টি চর্চা করি, ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হই; তা হলেই বড়দিন শুধু খ্রিষ্টানদের মাঝে সীমাবদ্ধ থাকবে না; এর সর্বজনীন আমেজ ও শান্তির বাণী ছড়িয়ে যাবে সবার অন্তরে। হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান সবার প্রতি রইল শান্তির উৎসব বড়দিনের শুভেচ্ছা; শান্তিরাজ যিশুর শান্তি ঝরে পড়ুক আমাদের সবার ওপর, সবার অন্তরে।
ফাদার প্যাট্রিক গমেজ: ক্যাথলিক ধর্মযাজক
আহ্বায়ক, আন্তধর্মীয় সংলাপ-সম্প্রীতি কমিশন, রাজশাহী ধর্মপ্রদেশ

শান্তিরমহোৎসববড়দিন

ফাদার প্যাট্রিক গমেজ

শুভবড়দিনভয়-নির্ভয়অভয়েরবাস্তবতারমাঝেত্রাণকর্তাযিশুখ্রিষ্টেরজন্মোৎসবপালনকরছেগোটাপৃথিবীরখ্রিষ্টবিশ্বাসীসমাজেরসঙ্গেবাংলাদেশেরখ্রিষ্টবিশ্বাসীভাইবোনেরাযিশুএইপৃথিবীতেএসেছেনশান্তিরাজহয়ে, শান্তিদিতেপ্রবক্তারমুখেভবিষ্যদ্বাণীউচ্চারিতহয়েছিলযেএইযাঁরজন্মহবে, তাঁরনামহবেঅনন্যমন্ত্রণাদাতা, শান্তিরাজ (ইসাইয়া: )বছরমানুষেরসার্বিকশান্তি, সম্প্রীতি, মিলনভ্রাতৃত্বকামনাকরেশান্তিরাজযিশুরজন্মোৎসবপালনকরাহচ্ছেসবারঅন্তরে, সবারজীবনেযেনশান্তিবিরাজকরে, তারজন্যপ্রার্থনাকরাহচ্ছেএইবড়দিনেরবিশেষভাবেউপাসনায়

 যিশুরজন্মেরপটভূমি: এইপৃথিবীতেযিশুরআগমনমানবজাতিরমুক্তিসাধনকেননাপাপেরফলেমানুষতোঈশ্বরেরদেওয়াসুখনষ্টকরেফেলেছিলকিন্তুঈশ্বরওতোতাঁরসৃষ্টমানুষকেভুলেযেতেপারেননা; মুক্তিদাতারআগমনেপ্রতিশ্রুতিদিয়েমুক্তিরপরিকল্পনারচূড়ান্তপর্যায়েযিশুরদেহধারণেরমধ্যদিয়েতিনিতাঁরদেওয়ামানবমুক্তিপ্রতিশ্রুতিপূর্ণকরলেনঅতএববলাযায়, যিশুরএইপৃথিবীতেমানুষহয়েআসারএকমাত্রউদ্দেশ্যইহলোমানুষেরসঙ্গেমিলনএকাত্মতা; মানুষেরমাঝেশান্তি-সম্প্রীতি

পবিত্রবাইবেলেপ্রতিশ্রুতিদিয়েপ্রবক্তারাবলেছেন, যিশুরদ্বারাআনীতএইরাজ্যেধর্মনিষ্ঠমানুষবাসকরবেএবংশান্তিযেখানেথাকবেচিরকাল

 শক্তিদাতাযিশু: সময়যখনপূর্ণহলোতখনপূর্ণহলোএইপ্রতিশ্রুতিসাধুপলেরপত্রেপাই: ‘সময়যখনপূর্ণহলো, তখনঈশ্বরএইপৃথিবীতেপাঠালেনতাঁরআপনপুত্রকে; তিনিজন্মনিলেননারীগর্ভে... (গালাতীয়: )যিশুরজন্মেরসময়স্বর্গদূতবাহিনীগেয়েউঠেছিল: জয়ঊর্ধ্বলোকেপরমেশ্বরেরজয়! ইহলোকেনামুকশান্তিতাঁরঅনুগৃহীতমানবেরঅন্তরে (লুক: ১৪)শান্তিরাজযিশুরআগমনএইপৃথিবীতেশান্তিদিতে

যিশুরজন্মেরপরপ্রকাশ্যজীবনেআমরাদেখি, যেখানেঅন্ধহয়েমানুষঅশান্তিতেঅসহায়অবস্থায়আছে, সেখানেইসুস্থতারদ্বারাসেইব্যক্তিকেশান্তিদানকরা; যেখানেবহুবছরধরেরোগে-শোকেভুগছে, অশান্তিতেভুগছে, সেখানেসুস্থতাদানকরা; অনাহারীদেরআহারদিয়েশক্তিসঞ্চারকরাএটাসত্যযেপাপীবলেঘৃণিতএমনব্যক্তিরঅন্তরেশান্তিথাকতেপারেনাযিশুএইমানুষগুলোকেক্ষমারপ্রেমেনিজেরকাছেটেনেনিয়েছেনবলেইতিনিহয়েছেনওদেরপরমবন্ধুস্বর্গেযাওয়ারআগেশিষ্যদেরতিনিবলেছিলেন: ‘তোমাদেরজন্যশান্তিরেখেযাচ্ছি, তোমাদেরদিয়েযাচ্ছিআমারইশান্তি; অবশ্যসংসারযেভাবেশান্তিদেয়, সেইভাবেআমিতোমাদেরতাদিয়েযাচ্ছিনাতোমরাযদিশান্তিতেবসবাসকরো, তবেনিশ্চিতজেনো, তোমাদেরসঙ্গেআমিআছি (যোহন১৪: ২৭)

 শান্তিরমহোৎসববড়দিনমানুষযখনপাপেরআঁধারেপথচলছিল, শান্তিরাজযিশুরআগমনেতখনতারাদেখতেপেলএকমহানআলো; কেননাতাঁরমধ্যেছিলজীবন; সেইজীবনছিলমানুষেরআলো (যোহন: )বড়দিনেআমরাস্মরণকরিযিশুরজন্ম; উৎসবকরিযিশুরএইজন্মবার্ষিকীতেতবেএইউৎসবেরআহ্বানআলোকিতমানুষহওয়া, শান্তিরসমাজগড়েতোলা

যদিপৃথিবীরদিকেতাকাই, দেখিফ্রান্সেরসাম্প্রতিকঘটনা, যারফলেহাজারোপ্রাণেরনিধন; আমাদেরদেশেওযেশান্তি, নিরাপত্তা, মানবজীবনেরমূল্য, পারস্পরিকভ্রাতৃত্বভীষণপ্রয়োজন, তাআমরাঅনুভবকরছি; অনুভবকরছেসবাইপ্রশংসনীয়যেভয়ভীতিবাঅশান্তিবাঅস্বস্তিকরঅবস্থাকেনিয়ন্ত্রণকরেদেশেরমানুষকে, বিশেষভাবেখ্রিষ্টানসমাজকেস্বাধীনভাবেনিরাপদেবড়দিনেরধর্মীয়উৎসবপালনকরারজন্যপ্রশাসনসর্বাত্মকসহযোগিতাদানকরছেএইটক-মিষ্টি-ঝালনিয়েবর্তমানপরিস্থিতিরমাঝেওমানুষএগিয়েচলছে, খ্রিষ্টবিশ্বাসীরাবড়দিনউৎসবপালনকরছেনানাবিধকার্যক্রমেরমধ্যেএবারেরবড়দিনেএকটিবাণীসবারকাছে: সন্ত্রাসনয়, শান্তি-সম্প্রীতি

 সম্প্রীতিরদেশবাংলাদেশযুগযুগধরেইএইবাংলাদেশেবিভিন্নধর্মকৃষ্টি-সংস্কৃতিরমানুষপারস্পরিকসংলাপ-সম্প্রীতিনিয়েবসবাসকরেআসছেআন্তধর্মীয়: ধর্মীয়পরিবেশবাস্তবতায়বাংলারহিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টানএকত্রেবসবাসকরেআসছেএইআলোকেসে-স্লোগানটিওপ্রাসঙ্গিকঅর্থপূর্ণ: ধর্মযারযার, উৎসবসবারসবাইমিলেশান্তিভ্রাতৃত্বনিয়েবড়দিনউৎসবপালনকরুক, এটিইকাম্যআসুন, এইবড়দিনেআমরাশান্তিরকৃষ্টিচর্চাকরি, ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষেসম্প্রীতিরবন্ধনেআবদ্ধহই; তাহলেইবড়দিনশুধুখ্রিষ্টানদেরমাঝেসীমাবদ্ধথাকবেনা; এরসর্বজনীনআমেজশান্তিরবাণীছড়িয়েযাবেসবারঅন্তরেহিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টানসবারপ্রতিরইলশান্তিরউৎসববড়দিনেরশুভেচ্ছা; শান্তিরাজযিশুরশান্তিঝরেপড়ুকআমাদেরসবারওপর, সবারঅন্তরে

ফাদারপ্যাট্রিকগমেজ: ক্যাথলিকধর্মযাজক

আহ্বায়ক, আন্তধর্মীয়সংলাপ-সম্প্রীতিকমিশন, রাজশাহীধর্মপ্রদেশ