শাহনাজ পারভীন বাংলাদেশ আনসারে যোগ দিয়েছেন ২০০০ সালে। গত ২১ বছরে দল পাল্টানোর চিন্তাও কখনো করেননি। দুই দশকের বেশি সময় ধরে আনসারের পতাকা বহন করে হয়ে উঠেছেন সংস্থাটির আইকন খেলোয়াড়। কাছ থেকে দেখেছেন আনসারের সাফল্য আর ক্রীড়া ব্যবস্থাপনা। গত পরশু শেষ হওয়া বাংলাদেশ গেমস মেয়েদের কাবাডিতে সোনাজয়ী আনসারের অধিনায়ক কথা বলেছেন সেসব নিয়েই—
প্রশ্ন :
প্রশ্ন: বাংলাদেশ আনসার টানা পঞ্চমবার বাংলাদেশ গেমসে চ্যাম্পিয়ন হলো। এই সাফল্যের পেছনের কারণটা কী?
শাহনাজ পারভীন: খেলোয়াড়দের চেষ্টা, একাগ্রতা আর স্যারদের অনুপ্রেরণাই আনসারকে এত দূর এনেছে।
প্রশ্ন :
প্রশ্ন: চেষ্টা তো অন্য দলও করে। আনসারের সঙ্গে তাদের পার্থক্য কোথায়?
শাহনাজ: আনসারের পরিবেশটাই অন্য রকম। কর্তৃপক্ষ খেলোয়াড়দের ওপর কোনো চাপ সৃষ্টি করে না। ডিউটি করার চাপ নেই। সত্যি বলতে, আমাদের ক্রীড়া অফিসার রায়হান ফকির স্যার খুব ভালো মানুষ। নতুন পরিচালক এসেছেন, মহাপরিচালক মহোদয়—সবাই খেলোয়াড়দের সহায়তা করেন। এখানে সুযোগ–সুবিধাও ভালো। ছুটিছাটা পাই। সবদিক দিয়েই আমরা ভালো আছি। খেলোয়াড়েরাও তাই জানপ্রাণ দিয়ে খেলে। স্যাররাও পরিশ্রম করেন। আমরা মেয়েদের গত জাতীয় কাবাডিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। এবার বাংলাদেশ গেমসেও চ্যাম্পিয়ন হতে হবে, প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলাম।
প্রশ্ন :
আনসার থেকে কেমন সুযোগ–সুবিধা পান?
শাহনাজ: অনেক সুযোগ–সুবিধাই পাই। এবার বাংলাদেশ গেমস হবে কি না, সংশয় ছিল। স্যাররা সব সময় আমাদের বলতেন, ‘তোমাদের টাকা লাগলে নাও। কী সুযোগ–সুবিধা চাও বলো। কিন্তু গোল্ড তোমাদের দিতে হবে।’ আমাদের সুযোগ–সুবিধা বা চাওয়া–পাওয়া ওনারা কখনো অপূর্ণ রাখেন না। আনসারের বেশির ভাগ স্থায়ী চাকরি করে। আমিও স্থায়ী। যারা ভাতায় আছে, সুযোগ হলে তাদেরও স্থায়ী করা হবে। মূল কথা, আনসারে খেলে আনন্দ আছে।
প্রশ্ন :
আপনি তো ২১ বছর ধরে আনসারকে কাছ থেকে দেখছেন। বাংলাদেশের খেলাধুলায় আনসার কী ভূমিকা রাখছে বলে মনে করেন?
শাহনাজ: অনেক ভালো ভূমিকা রাখছে। বহু খেলোয়াড় আনসারে চাকরি পেয়েছে। একই সঙ্গে আনসার খেলোয়াড় তৈরি করছে, যাদের অনেকে জাতীয় দলেও খেলে। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে আনসারের একটা সুনাম আছে।
প্রশ্ন :
আনসারের খেলাধুলার আইকন আপনি। আর কত দিন খেলার ইচ্ছা?
শাহনাজ: আমাকে কোচ কাম খেলোয়াড়ও বলতে পারেন। আসলে এখন আর খেলতে চাই না। কিন্তু মেয়েরা বলে, আপা, আপনি খেলেন। মেয়েরা খুব উৎসাহ পায় আমি খেললে। তাই খেলছি এবং গতবারের মতো এবারও বাংলাদেশ গেমসে মেয়েদের কাবাডি দলের অধিনায়ক ছিলাম। দেখা যাক আর কত দিন খেলতে পারি।