ডি ককদের আটকাতে পারলেন না মোস্তাফিজরা

ভালো বোলিং করেছেন মোস্তাফিজ, তবে পার করাতে পারেননি দিল্লিকেআইপিএল

২৫ বলে লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের প্রয়োজন ছিল ২৮ রান, কুইন্টন ডি কক ৫১ বলে অপরাজিত ৮০ রানে, বাকি ৮ উইকেট। সে ওভারটা শুরু করেছিলেন এ মৌসুমে প্রথমবারের মতো খেলতে নামা আনরিখ নর্কিয়া, তবে ইনিংসে দুটি বিমার কারণে সরে যেতে হয় তাঁকে। নর্কিয়ার বদলে আসা কুলদিপ যাদবকে টানা দুই চারের পর তুলে মারতে গিয়ে ডি কক ফেরার পরই বদলে গেল চিত্রটা।

ডিওয়াই পাতিল স্টেডিয়ামের এ উইকেটে রান তোলাটা সহজ নয়, ম্যাচজুড়েই দেখা গেছে সেটি। অবশ্য শেষ ওভারে নিয়ে গেলেও লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসকে আটকাতে পারেনি মোস্তাফিজুর রহমানদের দিল্লি ক্যাপিটালস। মোস্তাফিজ ও শার্দুল ঠাকুরের করা শেষ ২ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৯ রান, ক্রুনাল পান্ডিয়া ও আয়ুশ বাদোনি কাজ শেষ করেছেন ২ বল বাকি থাকতেই। লক্ষ্ণৌ জিতেছে ৬ উইকেট বাকি রেখে।

এর আগের ম্যাচগুলোতে এ মাঠে প্রথম ইনিংসে গড় স্কোর ছিল ১৭৪ রান। পৃথ্বি শয়ের ৩৪ বলে ৬১ রানের ইনিংসের পরও দিল্লি ২০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে থামে ১৪৯ রানেই। রানতাড়ায় অধিনায়ক লোকেশ রাহুল ও কুইন্টন ডি ককের ৭৩ রানের জুটিতে শক্ত ভিত পায় লক্ষ্ণৌ। পাওয়ারপ্লেতে দুজন মিলে তোলেন ৪৮ রান, এর মধ্যে মোস্তাফিজের ২ ওভারে ওঠে মাত্র ৮ রান।

৫২ বলে ৮০ রান করেন কুইন্টন ডি কক
আইপিএল

রাহুল-ডি ককের জুটি ভাঙে দশম ওভারে গিয়ে, কুলদিপকে তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ তোলেন ২৫ বলে ২৪ রান করা রাহুল। পরের ওভারে ললিত যাদবের শিকার হন ভুগতে থাকা এভিন লুইস। ডি কক টিকে ছিলেন আরও কিছুক্ষণ, ৩৬ বলে অর্ধশতক পান। ডি কক যতক্ষণ ছিলেন, মনে হচ্ছিল সহজ জয়ই পাবে লক্ষ্ণৌ। সেটি না হলেও চার ম্যাচে তৃতীয় জয়টি পেল লক্ষ্ণৌ, অন্যদিকে তিন ম্যাচে এটি দ্বিতীয় হার দিল্লির।

মোস্তাফিজ শেষ পর্যন্ত ৪ ওভারে দিয়েছেন ২৬ রান, তবে থেকেছেন উইকেটশূন্য। গত নভেম্বরের পর এ ম্যাচ দিয়েই প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফেরা নর্কিয়ার দিনটি গেছে অবশ্য ভুলে যাওয়ার মতোই। প্রথম ওভারে ১৯ রানের পর ২.২ ওভারে গুনেছেন ৩৫ রান। ১৯ রানের ওভারটি আইপিএলে তাঁর যৌথভাবে সবচেয়ে বেশি খরুচে।

লক্ষ্ণৌকে দারুণ শুরু এনে দেন রাহুল ও ডি কক
আইপিএল

এর আগে দিল্লিকে দারুণ শুরু এনে দিয়েছিলেন শ। জেসন হোল্ডারের করা প্রথম ওভারে ওঠে ৪ রান, শ তাঁর ঝড়টা শুরু করেন পরের ওভারে কৃষ্ণাপ্পা গৌতমকে দুই চার মেরে। হোল্ডারের পরের ওভারে চার-ছয়ের পর আবেশ খানকে মারেন টানা তিন চার—শ খেলছিলেন লক্ষ্ণৌ বোলারদের নিয়ে। ৩০ বলেই পেয়ে যান অর্ধশতক, পাওয়ারপ্লেতে দিল্লি তোলে ৫২ রান।

অষ্টম ওভারে গৌতমের বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে যখন কট-বিহাইন্ড হলেন শ, দিল্লির রান ছিল ১ উইকেটে ৬৭। শ একাই করেছেন ৩৪ বলে ৬১ রান, আউট হওয়ার সময় তাঁর সঙ্গী ডেভিড ওয়ার্নারের রান ছিল ১১ বলে ৪ রান! শ ফেরার পরই দিল্লির ভোগান্তিটা স্পষ্ট হয়েছে আরও। ইনিংস উদ্বোধন করতে নামা ডেভিড ওয়ার্নার ও তিনে নামা রোভম্যান পাওয়েল মিলে ২২ বলে করেন মাত্র ৭ রান। দুজনকেই ফিরিয়েছেন রবি বিষ্ণয়। এ নিয়ে টি-টোয়েন্টিতে বিষ্ণয়ের ছয় বলের মধ্যে তিনবার আউট হলেন ওয়ার্নার।

বৃথা গেছে পৃথ্বি শ-র ঝড়
আইপিএল

নামার পর শুরুতে ভুগেছেন ঋষভ পন্তও। ১২তম ওভারে গৌতমের ছয় বল খেলেও কোনো রান নিতে পারেননি, আইপিএলে প্রথমবার কোনো ওভার মেডেন দিলেন পন্ত। প্রথম ১৯ বলে ৮ রান ছিল তাঁর, ১৫তম ওভারের শেষ বলে বিষ্ণয়কে চার মেরে অবশ্য গতি বাড়ানোর ইঙ্গিত দেন। পরের ওভারে অ্যান্ড্রু টাইয়ের ৫ বলে তোলেন ১৬ রান।

পরের ওভারে আবেশ খানকে সরফরাজ খান দুটি চার মারলে গতি বাড়ে দিল্লিরও। অবশ্য আবেশ ও জেসন হোল্ডার এরপর আটকে রাখেন দিল্লিকে, শেষ ৩ ওভারে ওঠে মাত্র ১৯ রান। প্রথম ছয় ব্যাটসম্যানের দুজন ক্রিজে থাকার পরও আইপিএলে শেষ ৩ ওভারে এর চেয়ে কম রান তোলার ঘটনা আছে মাত্র একটি। পন্ত শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৩৬ বলে ৩৯ রান, ২৮ বলে ৩৬ রান সরফরাজ খানের। গৌতম ও বিষ্ণয়ের ৮ ওভারে দিল্লি তুলতে পেরেছে মাত্র ৪৫ রান, হারিয়েছে ৩ উইকেট।