দলে ‘জোকোভিচ’ থাকলে ঝামেলায় পড়বে রিয়াল-চেলসি

ফ্রান্সে করোনাবিষয়ক নিয়মে বদল এসেছে, সে কারণে বিপদে পড়তে পারেন রিয়াল মাদ্রিদের টিকা না নেওয়া খেলোয়াড়েরা।ছবি: রয়টার্স

পুরো বিশ্বে আবার করোনার দাপট বাড়ছে। ইউরোপেও একই চিত্র। এমন অবস্থায় করোনাবিষয়ক বিধিনিষেধ আরও জোরেশোরে আরোপ করা হচ্ছে। টিকা নেওয়ার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। টিকা না নেওয়া থাকলে সে ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা হারাচ্ছেন মানুষ। যার সর্বশেষ প্রমাণ তো চলমান অস্ট্রেলিয়ান ওপেনই দেখেছে। টিকা নেওয়া না থাকায় এবং করোনাবিষয়ক বিধিনিষেধ ঠিকমতো না মানায় নোভাক জোকোভিচের ভিসাই বাতিল করেছে অস্ট্রেলিয়ার সরকার। অস্ট্রেলিয়ায় ঢোকার পরও ১১ দিনের নাটকের পর না খেলেই অস্ট্রেলিয়া ছাড়তে হয় সার্বিয়ান টেনিস তারকাকে।

সে কারণেই কিনা, টিকা না নেওয়া ঘিরে যেকোনো জটিলতার ক্ষেত্রেই জোকোভিচের নামই সবার আগে আসে। যে কারণে ইউরোপিয়ান ফুটবলে হঠাৎ করোনাবিষয়ক নিয়মের বদলেও জোকোভিচ প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছেন। ফ্রান্সে করোনাবিষয়ক নিয়মে বদল এসেছে, সে কারণে বিপদে পড়তে পারেন চেলসি ও রিয়াল মাদ্রিদের টিকা না নেওয়া খেলোয়াড়েরা।

উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে শেষ ষোলোতে রিয়াল মাদ্রিদ ও চেলসি দুই দলই শেষ ষোলোতে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছে ফরাসি ক্লাবকে। রিয়ালের প্রতিপক্ষ মেসি, নেইমার, এমবাপ্পে, রামোসের পিএসজি, চেলসির প্রতিপক্ষ লিল। রিয়াল প্রথম লেগ খেলবে প্যারিসে, চেলসি ফ্রান্সে যাবে দ্বিতীয় লেগ খেলার জন্য।

টিকা না নেওয়ার কারণে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন না খেলেই ফিরে যেতে হয়েছে নোভাক জোকোভিচকে
ছবি: রয়টার্স

এর মধ্যে ফ্রান্সে করোনা প্রতিরোধে নিয়মে বদল এসেছে। যে বদল কার্যকর হবে আগামী সোমবার থেকে। সে নিয়মে বলা আছে, শুধু করোনার টিকা নেওয়া ব্যক্তি কিংবা সদ্যই (সাধারণত ১৪ দিনের মধ্যে সময়কে হিসাবে নেওয়া হয়) করোনা থেকে সেরে উঠেছেন এমন ব্যক্তি ছাড়া কেউ ফ্রান্সের মাটিতে জনসমাগমে যেতে পারবেন না।

ফ্রান্সের ক্রীড়ামন্ত্রী রোক্সানা মারাসিনেআনু গত সপ্তাহে বলে দিয়েছেন, ‘সব দর্শক ও অ্যাথলেট—ফরাসি বা বিদেশি যা-ই হোন না কেন, সবার ক্ষেত্রে এ নিয়ম কার্যকর হবে।’ এতেই সংশয় দেখা দিয়েছে, রিয়াল ও চেলসির কোনো খেলোয়াড়ের টিকা দেওয়া না থাকলে সে ক্ষেত্রে তাঁকে ‘জোকোভিচ–কাণ্ডের’ শিকার হতে হবে। অর্থাৎ, মাঠে নামার অনুমতি পাবেন না। ইউরোপিয়ান ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফাও জানাচ্ছে, চেলসি ও রিয়ালের টিকা না নেওয়া খেলোয়াড়েরা ফ্রান্সের মাটিতে ‘অ্যাওয়ে’ লেগে খেলার অনুমতি না-ও পেতে পারেন।

ফুটবলবিষয়ক ওয়েবসাইট ইএসপিএনকে উয়েফা বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ক্লাবগুলো যে দেশে খেলতে যাচ্ছে, সে দেশের করোনাবিষয়ক নীতি মানতে হবে। তবে চেলসি ও রিয়ালের খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে কি না, এ নিয়ে আলোচনা চলছে।

উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে শেষ ষোলোতে রিয়াল মাদ্রিদ ও চেলসি দুই দলই শেষ ষোলোতে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছে ফরাসি ক্লাবকে
ছবি: রয়টার্স

‘ফেব্রুয়ারিতে উয়েফার ক্লাব টুর্নামেন্টগুলো আবার শুরু হওয়াকে সামনে রেখে উয়েফা ইউরোপজুড়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। একটা দেশে ম্যাচগুলো ঠিক কোন কোন শর্ত মেনে আয়োজিত হবে, সেটা নির্ভর করবে সেই নির্দিষ্ট দেশের কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের ওপর। নীতিগতভাবে দেখলে, প্রত্যেক ক্লাবকেই আয়োজক দেশে প্রযোজ্য নিয়ম মেনে চলতে হবে।’

তবে উয়েফার করোনাবিষয়ক নির্দেশনার একটি সংযুক্তিতে লেখা আছে, যদি অতিথি দলের ওপর করোনাবিষয়ক বিধিনিষেধ আরোপিত হয়, সে ক্ষেত্রে স্বাগতিক ক্লাবকে যথাযথ বিকল্প প্রস্তাব দিতে হবে। সে প্রস্তাব নিরপেক্ষ কোনো দেশে ম্যাচ আয়োজনের প্রস্তাবও হতে পারে। প্রিমিয়ার লিগের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, লিগের খেলোয়াড়দের মধ্যে এখনো এক ডোজ টিকাও নেননি, এমন খেলোয়াড় আছেন মোট খেলোয়াড়ের ১৬ শতাংশ!